Site icon Fisheries Gurukul [ মৎস্য গুরুকুল ] GOLN

মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন

মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন – যা জীব বৈচিত্র্য, মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন এর অন্তর্ভুক্ত।

মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন

 

 

মৎস্য সম্পদকে ধ্বংস বা বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য যে সমস্ত আইন বা বিধিবিধান প্রণীত হয়েছে তাকে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন বলে। মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব, চাহিদা, প্রাপ্যতা ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় সহনশীল পর্যায়ে রাখার উদ্দেশ্যে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য মৎস্য সংরক্ষণ আইনের বিধানসমূহ প্রণয়ন করা হয় । এ আইনের মূল উদ্দেশ্যসমূহ হলো-

১. পোনা মাছ ধরা বন্ধ করা।

২. ডিমওয়ালা মাছ ধরা বন্ধ করা।

৩. মাছের চলাচলের পথে বাধাবিঘ্ন দূর করা ও

৪. মাছ আহরণের ক্ষতিকর সরঞ্জাম ব্যবহার বন্ধ করা ।

মৎস্য সম্পদের প্রাচুর্যকে টেকসই রাখার জন্য বেশ কত গুলো আইন আমাদের দেশে প্রচলিত আছে যা নিচে বর্ণনা করা হলো ।

ক. দি ইস্ট বেঙ্গল প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০ :

দি ইস্ট বেঙ্গল প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০ সাধারণভাবে এটা মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ নামে পরিচিত । নিচে এই আইনের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করা হলো।

১. এ আইনে মাছ বলতে সকল প্রকার মিঠা পানির মাছ, সামুদ্রিক মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, কাছিম, শামুক এবং ব্যাঙের জীবন চক্রের সকল স্তরের ধাপকে বুঝাবে ।

২. এ আইন অনুযায়ী নদ-নদী ও খাল-বিলে মাছ শিকারের জন্য মাটির সাথে সংযুক্ত বা অন্য কোনোভাবে স্থিরকৃত মাছের স্বাভাবিক চলাচলের পথে বাধা সৃষ্টিকারী কোনো অবকাঠামো, যেমন- বাঁধ, পাটা বা অন্য কোন স্থায়ী স্থাপনা (ফিক্সড ইঞ্জিন) নির্মাণ করা এবং এর মাধ্যমে মৎস্য আহরণ করা যাবে না। যদি কোথাও এরূপ স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মিত হয়ে থাকে তা আইন অনুযায়ী জব্দ, অপসারণ এবং বাজেয়াপ্ত করা যাবে । অবশ্য সেচ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিষ্কাশনের স্বার্থে এরূপ অবকাঠামো নির্মাণ করা যেতে পারে।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

৩. অভ্যন্তরীণ বা উপকূলীয় জলাভূমিতে বিস্ফোরক, বন্দুক বা তীর ধনুক ব্যবহার করে মৎস্য আহরণ বা আহরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না ।

৪. অভ্যন্তরীণ জলাভূমিতে বিষ প্রয়োগ, দূষণ, বাণিজ্যিক বর্জ্য বা অন্যবিধ উপায়ে মাছ ধ্বংস বা ধ্বংসের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না।

৫. চাষের উদ্দেশ্য ব্যতীত সাধারণভাবে নদী-নালা, খাল ও বিলে সংযোগ আছে এরূপ জলাশয়ে প্রতি বছর ১ এপ্রিল থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে শোল, গজার, টাকি মাছের পোনার ঝাঁক বা দম্পতি মাছ (Parent fish) ধরা বা ধংসের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না। তবে শর্ত থাকে যে, পোনা উৎপাদনের উদ্দেশ্যে উপরে বর্ণিত জাতের পোনা এবং মা মাছ ধরা বা ধ্বংস করার ক্ষেত্রে উক্ত নিষেধ প্রযোজ্য হবেনা ।

৬. চাষের উদ্দেশ্য ব্যতীত কোন ব্যক্তি-

ক. প্রতি বছর জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ২৩ সেন্টিমিটারের নিচের আকৃতির কাতলা, রুই, মৃগেল, কালিবাউশ, ঘনিয়া ।

খ. প্রতি বছর নভেম্বর-এপ্রিল সময়ে ২৫ সেন্টিমিটারের নিচের আকৃতির ইলিশ (যা জাটকা নামে পরিচিত) ) ও পাঙ্গাশের পোনা ।

গ. প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি-জুন সময়ে ৩০ সেন্টিমিটারের নিচের আকৃতির সিলন, বোয়াল, আইড় ধরা, বহন, পরিবহন, আদান-প্রদান, প্রদর্শন বা নিজস্ব এখতিয়ারে রাখতে পারবে না। যদি কারো কাছে বর্ণিত আকারের চেয়ে ছোট পোনা নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যে পাওয়া যায় তবে সমুদয় মাছ বাজেয়াপ্ত করা যাবে।

এভাবে বাজেয়াপ্তকৃত মাছ নিলামে বিক্রয় করে লব্দ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। তবে মৎস্য উৎপাদন সংক্রান্ত কারণে বা উদ্দেশ্যে মাছ ধরা, বহন, বিজয়, পরিবহন বা প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে উক্ত নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না । ৭. সরকার নির্ধারিত অভয়মশ্রম হতে বিনা অনুমতিতে যেকোন আকৃতির রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ এবং ঘনিয়া আহরণ বা আহরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না।

 

 

৮. সমুদ্র উপকূল, উপকূলীয় নদ-নদী ও মোহনা থেকে যেকোনো প্রকার চিংড়ি অথবা মাছের পোনা আহরণ নিষিদ্ধ ।

৯. যে কোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে, যেকোনো প্রকার ব্যাঙ জীবিত বা মৃত অবস্থায় ধরা, বহন, জন্ম-বিজ, আদান-প্রদান বা এখতিয়ারে রাখা নিষিদ্ধ। ১০. মাছ ধরার ক্ষেত্রে যেকোনো মেস সাইজের কারেন্ট জালের ব্যবহার নিষিদ্ধ।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version