চাষযোগ্য মাছের জীবন বৃত্তান্ত

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় চাষযোগ্য মাছের জীবন বৃত্তান্ত – যা চাষযোগ্য মাছ সম্পর্কে ধারণা এর অন্তর্ভুক্ত।

চাষযোগ্য মাছের জীবন বৃত্তান্ত

দেশের সব প্রজাতির মাছ বদ্ধ জলাশয়ে চাষ করা যায় না। আবার চাষ করলেও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়া যায় না। তাই মৎস্য সেক্টরে জ্ঞান আহরণকারী ছাত্র-ছাত্রীর সুবিধার্থে নিচে কতিপয় প্রধান প্রধান চাষযোগ্য দেশী-বিদেশী মাছের জীবন-বৃত্তান্ত দেয়া হলো ।

রুই

স্থানীয় নাম : রুই বা রুহিত

বৈজ্ঞানিক নাম : Labeo rohita

প্রাকৃতিক আবাস :

বিভিন্ন প্রজাতির মাছের মধ্যে রুই মাছ অতি জনপ্রিয় ও স্বাদে শ্রেষ্ঠ। নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় এদের সাধারণ আবাসস্থল। বর্ষাকালে প্লাবনভূমিতে ও ধানক্ষেতে এদের দেখা যায়। বর্তমানে পুকুরে মিশ্রচাষের ক্ষেত্রে এ প্রজাতির মাছটি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। পুকুর অপেক্ষা ধানক্ষেতে এদের দৈহিক বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয়ে থাকে ৷

দেহের বিবরণ বা বৈশিষ্ট্যাবলি :

রুই মাছের দেহের আকৃতি অনেকটা মাকুর মতো। দেহ লম্বা ও দুই পাশে চাপা । মাথা ও লেজ ক্রমশ সরু। দেহের তুলনায় মাথা ছোট। গোলাকার আঁইশ দ্বারা দেহ আবৃত। তবে এদের মাথার কোনো আইশ নেই। এদের মুখ প্রান্তিক এবং ঠোঁট জোড়া মোটা, নিচের ঠোঁটটি বড় এবং উপরের ঠোঁট ছোট ।

ঠোঁটে কোনো দাঁত নেই, তবে উপরের ঠোঁটে এক জোড়া ছোট শুঁড় আছে। এদের পৃষ্ঠ পাখনা বেশ লম্বা এবং পাখনায় ১৫ থেকে ১৬টি পাখনা রশ্মি আছে। পাখনার রং লালচে কালো। পুচ্ছ পাখনা গভীরভাবে বিভক্ত। পিঠের নিচের দিকের রং বাদামি তবে উদর রূপালী সাদা। রুই মাছের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৩৯২ সে. মি. এবং ওজন ৪৫ কেজি পর্যন্ত পাওয়া গেছে। পরিবেশের কোনো তারতম্য না হলে পুকুরে এদের দৈহিক বৃদ্ধি দ্বিতীয় বছর সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।

 

চাষযোগ্য মাছের জীবন বৃত্তান্ত

 

খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাস :

এদের মুখ নিম্নমুখী ও ঠোঁট পুরু থাকায় এরা জলজ উদ্ভিদ, উদ্ভিদের নরম পাতা, পচা জলজ লতাপাতার অংশ, মাঝে মাঝে পুকুরের তলদেশ থেকে পচা জৈবিক পদার্থ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে । ছোট অবস্থায় এরা শুধু প্রাণী প্ল্যাংকটন খেয়ে থাকে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এদের উদ্ভিদ প্ল্যাংকটন গ্রহণের প্রবণতা বাড়তে থাকে ।

পক্ষান্তরে প্রাণী প্ল্যাংকটন গ্রহণের পরিমাণ কমতে থাকে। এরা পানিতে ডুবন্ত লতাপাতা বা ডালে লেগে থাকা জৈব পদার্থ, ধানক্ষেতে ধানের গায়ে লেগে থাকা শ্যাওলা প্রভৃতি খেতে পছন্দ করে। তাই অনেক সময় পুকুরে মাছ চুরি ঠেকানোর জন্য পুঁতে রাখা বাঁশ বা কঞ্চিতে লেগে থাকা শ্যাওলা রুই মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সাধারণত এরা পানির মধ্যস্তরে বসবাস করে এবং পানির মধ্যস্তর হতে খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। চাষকৃত পুকুরে পিলেট জাতীয় সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগে রুই মাছের আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায় ৷

প্রজনন :

এ মাছ দুই বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়। জুন-আগস্ট মাসে এরা প্রজনন করে থাকে। রুই মাছ সাধারণত বদ্ধ জলাশয়ে প্রজনন করে না। তবে বদ্ধ জলাশয়ে কৃত্রিমভাবে স্রোতের সৃষ্টি করলে এরা প্রজনন করে থাকে । প্রবহমান নদীতে এরা সহজেই প্রজনন করে থাকে। আধুনিক পদ্ধতিতে অতি সহজেই হ্যাচারিতে এদের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ডিম সংগ্রহ করা যেতে পারে। এদের ডিম দেখতে গোলাকার এবং লালচে রঙের। একটি পরিপক্ব স্ত্রী রুই মাছ বছরে ৩-৪ লক্ষ ডিম দিয়ে থাকে ।

পুষ্টিমান :

প্রতি ১০০ গ্রাম রুই মাছে ১৬.৪ গ্রাম আমিষ, ১.৪ গ্রাম চর্বি, ৬০০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম এবং ২২৩ মি.গ্রা. ফসফরাস থাকে।

আহরণ ও বাজারজাতকরণ :

রুই মাছ ২ বছরে ২-৩ কেজি ওজনের হয়ে থাকে এবং তখনই এ মাছ আহরণ করে বাজারজাত করা যেতে পারে। খেপলা জাল, বেড়জাল, ফাঁসজাল প্রভৃতি দ্বারা অতি সহজেই এ মাছ আহরণ করা যেতে পারে। তবে মৎস্য শিকারিদের জন্য ছিপ বা বড়শি দিয়ে রুই মাছ শিকার অত্যন্ত আকর্ষণীয় ।

কাতলা

স্থানীয় নাম :

কাতলা বা কাতল বৈজ্ঞানিক নাম : Catla catla

প্রাকৃতিক আবাস :

কাতলা মাছ আমাদের দেশের জনপ্রিয় মাছ। রুই মাছের মতো নদ-নদী, হাওর-বাঁওড় ও মুক্ত জলাশয় এদের প্রাকৃতিক আবাস। বর্ষাকালে এদেরকে ধান ক্ষেতে পাওয়া যায়। বদ্ধ পানিতেও এরা বাস করতে পারে বলে সারা দেশে চাষযোগ্য সব পুকুর-দিঘিতে দ্রুত বর্ধনশীল মাছ হিসেবে চাষ করা হয়ে থাকে । শুধু আমাদের দেশেই নয়, আমাদের দেশের বাইরে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও মায়ানমার কাতলা মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থল ।

দেহের বিবরণ বা বৈশিষ্ট্যাবলি :

কাতলা মাছের মাথা দেহের তুলনায় বড়, দেহ চওড়া ও দুই পাশে চ্যাপ্টা, মুখ প্রান্তিক, ঊর্ধ্বমুখী ও বেশ বড়। ঠোঁটে কোন দাঁত নেই। উপরের চোয়াল নিচের চোয়ালের চেয়ে ছোট । প্রশস্ত কানকো দ্বারা ফুলকা প্রকোষ্ঠ ঢাকা এবং সারা শরীর বড় বড় গোলাকার আঁইশ দ্বারা আবৃত । তবে এদের মাথায় কোনো আঁইশ নেই ।

মাথার পিছন থেকে লেজ পর্যন্ত দুই পাশে দুটি পার্শ্বরেখা থাকে। কাতলা মাছের পিঠের মাঝখানে প্রশস্ত পৃষ্ঠ পাখনা, বিভক্ত পুচ্ছ পাখনা, পায়ু পাখনা এবং জোড়া বক্ষ পাখনা ও শ্রোণীপাখনা বিদ্যমান। পৃষ্ঠ পাখনায় ১৭-২০টি পাখনা রশ্মি থাকে। কাতলা মাছের রং পিঠের দিকে কালচে বা ধূসর কিন্তু পেটের দিকে সাদা । কাতলা মাছের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ১৮০ সে.মি. এবং ওজন ৪৫ কেজি পর্যন্ত পাওয়া গেছে। এ মাছ দ্রুত বর্ধনশীল এবং প্রয়োজনীয় খাবার পেলে এক বছরে ৪ কেজি এবং দুই বছরে ১০ কেজি পর্যন্ত বড় হয়ে থাকে।

 

চাষযোগ্য মাছের জীবন বৃত্তান্ত

 

খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাস :

কাতলা মাছ পুকুরের উপরের স্তরে বাস করে এবং সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় খাদ্য সংগ্রহ করে। এদের মুখের উপরের চোয়াল ছোট হওয়ায় পানির উপরের স্তরের খাদ্য সহজেই এরা গ্রহণ করতে পারে। এরা সাধারণত সর্বভূক প্রকৃতির হয়ে থাকে। তবে প্রাণী প্ল্যাংকটন অপেক্ষা উদ্ভিদ প্ল্যাংকটন বেশি পছন্দ করে থাকে।

ছোট অবস্থায় এরা পানিতে ভাসমান উদ্ভিদ প্ল্যাংকটন ও প্রাণী প্ল্যাংকটন খায়। বড় কাতলা শ্যাওলা, পচা জলজ উদ্ভিদ ইত্যাদি খেয়ে থাকে। এরা সাধারণত রাতে আহার করে না। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশেষ করে বিকেলে খাদ্য গ্রহণ করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি থাকে। এদের মুখের গড়ন সম্পূরক খাদ্য গ্রহণের জন্য ততবেশি উপযোগী নয় । ভালো উৎপাদন পাওয়ার জন্য এদের খাদ্য তালিকায় সম্পূরক খাদ্যের পরিবর্তে প্রাকৃতিক খাদ্যের প্রাধান্য বেশি দেয়া দরকার

প্রজনন :

কাতলা মাছ বদ্ধ জলাশয়ে প্রজনন করে না। প্রবহমান নদী ও মুক্ত জলাশয়ে এরা প্রজনন করে থাকে । সাধারণত মে মাস হতে আগস্ট মাস পর্যন্ত বিভিন্ন নদ-নদীর নব্য প্লাবিত অগভীর অংশে কাতলা মাছ প্ৰজনন করে। এরা তৃতীয় বছরে প্রজননক্ষম হয় এবং বছরে একবারই ডিম দেয়। এদের ডিমগুলো ভাসমান বা আঠালোও নয় ।

এদের ডিমের রং হালকা লাল । ব্যাস ৪.৫ মি.মি. থেকে ৫.৫ মি.মি. । প্রজনন মৌসুম ব্যতিত পুরুষ ও স্ত্রী কাতলা মাছ শনাক্তকরণ বেশ কঠিন। প্রজনন মৌসুমে ভারী ও মোটা পেট দেখে স্ত্রী মাছ সহজেই চেনা যায় । প্রাকৃতিক উৎস থেকে ডিম সংগ্রহ করে অথবা কৃত্রিম উপায়ে হরমোন ইনজেকশন দিয়েও কাতলা মাছের পোনা উৎপন্ন করা যায় ।

পুষ্টিমান :

প্রতি ১০০ গ্রাম কাতলা মাছে ১৬.৪ গ্রাম আমিষ, ২.৬ গ্রাম চর্বি, ৫১৪ মি. গ্রাম ক্যালসিয়াম ও ২১৪ মি. গ্রাম ফসফরাস পাওয়া যায় ।

আহরণ ও বাজারজাতকরণ :

সাধারণত বেড় জাল দিয়ে সহজেই কাতলা মাছ আহরণ করা যায়। তবে ঝাঁকি জান, ভেসাল জাল প্রভৃতি দ্বারা পুকুর বা নদ-নদী হতে অতি সহজেই এ মাছ আহরণ করা যায় । ছিপ দিয়েও মাঝে মাঝে কাতলা মাছ ধরা পড়ে। বাজারে বড় কাতলা মাছের চাহিদা বেশি বিধায় দু’বছর বয়সেই কাতলা মাছ আহরণ ও বাজারজাতকরণ করা উচিত।

মৃগেল

স্থানীয় নাম :

মৃগেল বা মিরকা

বৈজ্ঞানিক নাম :

Cirrrhinus Mrigala

প্রাকৃতিক আবাস :

মৃগেল মাছ স্বাদুপানির নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় প্রভৃতি জলাশয়ে পানির নিচের স্তরে বসবাস করে। এদের প্রাকৃতিক আবাস বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান। আমাদের দেশে পুকুর-দিঘিতে মিশ্রচাষের ক্ষেত্রে রুই-কাতলার সাথে মৃগেল মাছ ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়ে থাকে। বর্ষাকালে ধানক্ষেতে এ মাছ প্রচুর পাওয়া যায় । এরা কর্দমাক্ত জলাশয়ের তলদেশে বসবাস করতে পছন্দ করে বিধায় পুরাতন পুকুরে এদের বৃদ্ধি নতুন পুকুরের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে ।

 

চাষযোগ্য মাছের জীবন বৃত্তান্ত

দেহের বিবরণ বা বৈশিষ্ট্যাবলি :

মৃগেল মাছ লম্বাটে, দেহ পার্শ্বদেশে সামান্য চাপা, দেহের তুলনায় মাথা খুবই ছোট। এদের মুখ প্রান্তিক ও নিম্নমুখী। ঠোঁটে কোনো দাঁত নেই এবং ঠোঁট দুটি পাতলা। প্রশস্ত পৃষ্ঠ পাখনা, ছোট পায়ু পাখনা, দ্বিখণ্ডিত পুচ্ছ পাখনা এবং জোড়া বক্ষ ও শ্রোণী পাখনা বিদ্যমান। এদের পৃষ্ঠ পাখনায় ১৫-১৬টি পাখনা রশ্মি বিদ্যমান। এদের দেহ মাঝারি গোলাকার আঁইশ দ্বারা আবৃত। ছোট মাছ সাদা বা রূপালী রংঙের তবে পাখনাগুলো দেখতে লালচে রঙের। মাছ বড় হলে পিঠের দিকে ধূসর হয় ও দুপাশ ও পেট রূপালি রঙের হয়। এ মাছের চোখ দেখতে সোনালী রঙের। সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ১০০ সে.মি. এবং ওজন ১৩ কেজি পর্যন্ত পাওয়া গেছে।

খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাস :

মৃগেল মাছ জলাশয়ের নিচের স্তরে বাস করে এবং সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় খাদ্য সংগ্রহ করে । এদের মুখ ও ঠোঁট দুটো পাতলা হওয়ার কারণে অতি সহজেই তলদেশ হতে পচা-গলা জৈব পদার্থ, উলি দ্ভদের পচা অংশ, কাদার ভিতরে বসবাসকারী ছোট ছোট বেনথোস, উদ্ভিদ প্ল্যাংকটন ইত্যাদি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খাদ্যকণা বাছাই করে খাওয়ার মতো ফুলকা রশ্মি থাকায় এরা জলাশয় থেকে প্রয়োজন অনুসারে খাদ্য বাছাই করে খেতে পারে ।

পুকুরের তলদেশে কাদার মধ্যে বিদ্যমান খাদ্যকণা খুঁজে খায় বলে মৃগেল মাছে কখনও কখনও কাদার দুর্গন্ধ পাওয়া যায় । ফলে অনেকে মৃগেল মাছ খেতে পছন্দ করে না। মৃগেল মাছ রুই কাতলার তুলনায় ধীরগতিতে বৃদ্ধি পায় । সাধারণত প্রথম বছরে এরা গড়ে ২৫০-৩৫০ গ্রাম হয়ে থাকে । তাই এক বছরের কম বয়সের মৃগেল মাছ ধরা ও বাজারজাত করা উচিত নয়। পুকুরে চাষের সময় এরা সম্পূরক খাবার, যেমন- খৈল, কুঁড়া, ভুসি মিশ্রিত বল বা পিলেট খাবার খেতে বেশ পছন্দ করে এবং এ খাদ্য গ্রহণে বৃদ্ধিও আশানুরূপ হয়ে থাকে ।

প্রজনন :

রুই ও কাতলার মতো মৃগেল মাছও বন্ধ জলাশয়ে প্রজনন করে না। নদ-নদী ও মুক্ত জলাশয়ে এরা প্রজনন করে থাকে। সাধারণত দুই বছর বয়সে যুগেল মাছ প্রজননক্ষম হয়। মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ফুলেল
মাছ প্রজনন করে থাকে । প্রাকৃতিক ক্ষেত্রে বর্ষাকালে সদ্য প্লাবিত অগভীর এলাকার এরা প্রজনন করতে চলে আসে। ফ্যালরিতে খুব সহজেই মোম জোরালো যার। এদের ডিম আঠালো বা ভাসমান নয়। ডিনের ব্যাস ৫.৫ মি.মি. । পুষ্টিমান প্রতি ১০০ গ্রাম মৃগেল মাছে ১৯.৫ গ্রাম আমি, ২.৬ গ্রাম চর্বি, ৩০৫ মি. গ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৮২ মি.গ্রা. কনকরাস বিদ্যমান থাকে।

বিদেশী মাছ

দেশে বর্তমানে চাষ করা হয় এমন অনেক মাছের আদি নিবাসস্থল আমাদের দেশ নয়। দ্রুত বর্ধনশীল বিধায় এসব মাছকে বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের দেশে আনা হয়েছে। মাছগুলো দ্রুত বর্ধনশীল এবং আমাদের দেশে প্রণোদিত প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন করা হয়। এ মাছগুলো দেশীয় পরিবেশে খাপ খেয়ে বংশবৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে । বিদেশ থেকে আনা এরূপ মাছকে বিদেশী মাছ (Exotic Fish) বলে। যেমন-সিলভার কার্প, গ্রাসকার্প, কমন কার্প বা কার্পিও এবং বিগহেড ইত্যাদি বিদেশী মাছ |

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

সিলভার কার্প

স্থানীয় নাম :

সিলভার কার্প

বৈজ্ঞানিক নাম:

Hypopthalmichthys molitrix

প্রাকৃতিক আবাস :

সিলভার কার্প মাছের আদি বাসস্থান চীন দেশের ইয়াংসি নদীতে । ১৯৬৩ সালে স্বাদুপানির মাৎস্য গবেষণা কেন্দ্র, চাঁদপুর প্রথম এ মাছটি বিদেশ থেকে আমদানি করে। বর্তমানে চীন, রাশিয়া ছাড়াও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পুকুরে চাষ উপযোগী মাছ হিসেবে এ মাছ ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। আমাদের দেশের রুই, কাতলা, মৃগেল প্রভৃতি মাছের মতো এরা নদীতে ও পুকুরে উভয় স্থানেই বসবাস করতে পারে । তবে নদীর চেয়ে পুকুরে এদের বৃদ্ধির হার অনেক বেশি । দ্রুত বর্ধনশীল মাছ হিসেবে রুই-কাতলা মাছের সাথে সিলভার কার্পের মিশ্রচাষ করা হয়।

আরও দেখুন:

Leave a Comment