Site icon Fisheries Gurukul [ মৎস্য গুরুকুল ] GOLN

মজুদ পুকুরে ভিয়েতনাম কৈ মাছের চাষ ব্যবস্থাপনা

মজুদ পুকুরে ভিয়েতনাম কৈ মাছের চাষ ব্যবস্থাপনা

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় মজুদ পুকুরে ভিয়েতনাম কৈ মাছের চাষ ব্যবস্থাপনা – যা ভিয়েতনাম কৈ মাছের চাষ প্রযুক্তি এর অন্তর্ভুক্ত।

মজুদ পুকুরে ভিয়েতনাম কৈ মাছের চাষ ব্যবস্থাপনা

উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার আওতায় আনলে ছোট-বড় সব পুকুরেই এ মাছ চাষ করা সম্ভব। তবে পুকুর নির্বাচনের ওপর ভিয়েতনাম কৈ মাছ চাষের সফলতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। পুকুর নির্বাচনের সময় নিচে লিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হবে।

পুকুর প্রস্তুতি :

পুকুর প্রস্তুতির সময় নিচে উল্লিখিত বিষয়গুলো অনুসরণ করা আবশ্যক:

পোনা প্রাপ্তি :

ভিয়েতনাম কৈ মাছের পোনা এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন বড় বড় হ্যাচারিতে পাওয়া যায় ।

পোনা মজুদ :

পুকুরে ভিয়েতনাম কৈ একক বা অন্য প্রজাতির সাথে চাষ করা যায়। চাষ পদ্ধতি নির্ভর করবে চাষির কর্মদক্ষতা ও আর্থিক সচ্ছলতার ওপর। পোনা মজুদের ক্ষেত্রে ১-১.৫ ইঞ্চি আকারের ০.১৫ – ০.২০ গ্রাম ওজনের (৬০০০-৫০০০টি/কেজি) সুস্থ সবল পোনা আনুপাতিক হারে পুকুরের পানির সাথে খাপ খাইয়ে পুকুরে ছাড়তে হবে। সারণি-১২ এ পোনা মজুদের একটি মডেল দেখানো হলো ।

সারণি-১২ : শতাংশ প্রতি পোনা মজুদের মডেল

 

 

সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ : বাণিজ্যিকভাবে ভিয়েতনাম কৈ মাছ চাষ করতে হলে মাছকে অবশ্যই চাহিদামতো সুষম সম্পূরক খাবার খাওয়াতে হবে। খাদ্য খাওয়ানোর ওপরই ভিয়েতনাম কৈ মাছের দৈহিক বৃদ্ধির হার প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল। খাদ্যে কমপক্ষে ৩০% হজমযোগ্য প্রাণিজ আমিষ থাকতে হবে। ৩০% আমিষ না থাকলে কৈ মাছের বৃদ্ধি আশানুরূপ হবে না। বাজারে বেশ কয়েকটি মৎস্য খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ভিয়েতনাম কৈ মাছের ভাসমান বাণিজ্যিক খাবার পাওয়া যায়। সেগুলো থেকে গুণগতমান সম্পন্ন খাদ্য বাছাই করে মাছকে খাওয়াতে হবে। নিচে মাছের বিভিন্ন বয়সের খাদ্য তালিকা দেয়া হলো ।

সারণি-১৩ : মাছের বয়স অনুয়ায়ী খাদ্য তালিকা

 

ভিয়েতনাম কৈ মাছের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা :

উচ্চ মজুদ ঘনত্ব ও বদ্ধ জলজ পরিবেশে উচ্ছিষ্ট খাবার, মাছের বিপাকীয় বর্জ্য ও অন্যান্য বর্জ্য পচে পানি দূষিত হয়ে কৈ মাছের রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। খামারে একবার জীবাণু প্রবেশ করলে তাকে নির্মূল করা খুব কঠিন। তাই খামারে জীবাণু প্রবেশের পূর্বেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে । নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

এডওয়ার্ডসিয়েলোসিস রোগ :

ভিয়েতনাম কৈ মাছ সাধারণত এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। এডওয়ার্ডসিয়েলা নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এ রোগ বিস্তার লাভ করে । পচা জৈবিক পদার্থ সমৃদ্ধ পুকুরে এই জীবাণু সহজেই বংশ
বিস্তার এবং মাছের দেহে রোগ সৃষ্টি করতে পারে ।

রোগের লক্ষণ

প্রতিরোধ

জলাশয়ের পানির গুণাগুণ সঠিক মাত্রায় রেখে, সঠিক ঘনত্বে মাছচাষ করলে এ রোগ বহুলাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

প্রতিকার

আক্রান্ত মাছকে প্রতি কেজি খাদ্যের সঙ্গে ৫ গ্রাম অক্সিটেট্রাসাইক্লিন মিশিয়ে পর পর ১০ দিন খাওয়াতে হবে, প্রতি কেজি খাদ্যের সঙ্গে ৫ মিলিগ্রাম কট্রিম মিশিয়ে পর পর ১০ দিন মাছকে খাওয়ালে এ রোগে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

অন্যান্য ব্যবস্থাপনা

এক্ষেত্রে যে সমস্ত নিয়ম কানুন মেনে চলা দরকার তা হলো-

সারণি-১৪ : ১ একর (১০০ শতাংশ) পুকুরে আয়-ব্যয়ের হিসাব

ব্যয় :

 

 

আয় :

কৈ মাছ ২০,০০০টি (৯০% বাঁচার হার)।

গড় ওজন ২০০ গ্রাম এবং প্রতি কেজির গড় মূল্য ২০০ হিসেবে ৪০০০ কেজি মাছের মূল্য

৪০০০ X ২০০ = ৮,০০,০০০ টাকা

সিলভার কার্প ৩০০টি (৯০% বাঁচার হার )

গড় ওজন ১ কেজি এবং প্রতি কেজির গড় মূল্য ৮০ টাকা হিসেবে ২৭০ কেজি মাছের মূল্য

মোট মূল্য                        ২৭০x৮০ = ২১,৬০০
= ৮,০০,০০০ + ২১,৬০০
= ৮,২১,৬০০

সম্ভাব্য নিট লাভ = ৮,২১,৬০০ – ৫,৭১,২০০ = ২,৫০,৪০০ টাকা

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version