মাছ চাষের ধরন অনুসারে পুকুরের শ্রেণিবিভাগ

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় মাছ চাষের ধরন অনুসারে পুকুরের শ্রেণিবিভাগ – যা মাছচাষে পুকুরের ধরন ও পুকুর খনন এর অন্তর্ভুক্ত।

মাছ চাষের ধরন অনুসারে পুকুরের শ্রেণিবিভাগ

মাছচাষ কার্যক্রমের বিভিন্ন পর্যায় বা ধাপ মাছের বয়সের সাথে সম্পর্কিত। বিভিন্ন বয়সের মাছের জন্য বিভিন্ন ধরনের পুকুরের প্রয়োজন হয়। তাই মাছ চাষের ধরণ অনুসারে উক্ত পুকুরগুলোকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়।

ক. আঁতুড় পুকুর :

মাছ চাষ ব্যবস্থাপনায় ৪ থেকে ৬ দিন বয়সের রেণু পোনাকে ২০ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত যেসব অগভীর জলাশয় বা পুকুরে প্রতিপালন করা হয় তাকে আঁতুড় পুকুর বঙ্গে। এ ধরনের পুকুরের আয়তন সাধারণত ৫ থেকে ২০ শতাংশ এবং গভীরতা ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। আঁতুড় পুকুর যে কোনো আকৃতির হতে পারে। তবে জান টানার সুবিধার জন্য এর আকার আয়তাকার হওয়া বাঞ্ছনীয়।

 

মাছ চাষের ধরন অনুসারে পুকুরের শ্রেণিবিভাগ

 

 

খ. লালন বা চারা পোনা পালন পুকুর :

আঁতড় পুকুরে লালন করা ১ ইঞ্চির চার ভাগের এক ভাগ আকারের ধানী পোনাগুলো যে পুকুরে ৩০ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত পালন করে ৩ ইঞ্চি থেকে ৪ ইঞ্চি আকারের পোনায় পরিণত করা হয় সে পুকুরকে লালন বা চারা পোনা পালন পুকুর বলে। এ ধরনের পুকুরের আয়তন ৩০ শতাংশ থেকে ১ একর পর্যন্ত হতে পারে এবং পানির গভীরতা ৪ ফুট থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। লালন পুকুরে সার্বিক যত্ন নিলে শতাংশ প্রতি ৮০০-১০০০ টি ধানী পোনা মজুদ করে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

গ. মজুদ পুকুর বা পালন পুকুর :

যেসব পুকুরে ৪ ইঞ্চি থেকে ৬ ইঞ্চি আকারের পোনা মঞ্জুদ করে পরিচর্যার মাধ্যমে বাজারজাতকরণ উপযোগী বা খাওয়ার যোগ্য বড় মাছে পরিণত করা হয় সেসব পুকুরকে মজুদ পুকুর বা পালন পুকুর বলে। মজুদ পুকুরের আয়তন সাধারণত ৩৩ শতাংশ থেকে যেকোন আয়তনের হতে পারে। তবে ৩৩ শতাংশ থেকে ২.৫ একর পর্যন্ত পুকুর ব্যবস্থাপনার জন্য সুবিধাজনক। এ ধরনের পুকুরের গভীরতা ৫ ফুট থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। মজুদ পুকুরে মিশ্রচাষে শতাংশ প্রতি ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি আকারের বিভিন্ন প্রজাতির ৫৫ থেকে ৬০টি পোনা মজুদ করা যেতে পারে। তবে ব্যবস্থাপনাভেদে এ সংখ্যা পরিবর্তনযোগ্য।

 

মাছ চাষের ধরন অনুসারে পুকুরের শ্রেণিবিভাগ

 

মদন্য খামার বা পুকুর খননে স্থান নির্বাচন :

মাছের খামার কিংবা মাছ চাষের উদ্দেশ্যে পুকুর খননের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কারিগরি ও অর্থনৈতিক দিক থেকে উপযোগী এমন স্থানে মাছ চাষের পুকুর তৈরি আবশ্যক। ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কোন ভুলত্রুটি হলে পরবর্তী বছরে সেটা শোধরানো সম্ভব। কিন্তু পুকুর খননকালে স্থান নির্বাচনে কোনো ভুলত্রুটি হলে সেটা শোধরানো সম্ভব নয়। কারণ পুকুর খননে সিংহভাগ অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। কাজেই পুঁজির সর্বাধিক সদ্ব্যবহার এবং খামার পরিচালনায় সর্বোচ্চ দক্ষতা অর্জনের জন্য পুকুরের স্থান নির্বাচন, সঠিক নক্সা বা ডিজাইন অবলম্বন এবং পুকুরের বিভিন্ন অংশ যথাযথভাবে নির্মাণ সফল মাছ চাষের পূর্বশর্ত।

আরও দেখুন:

Leave a Comment