আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ভিয়েতনাম কৈ মাছের চাষ প্রযুক্তি।
ভিয়েতনাম কৈ মাছের চাষ প্রযুক্তি
কৈ মাছ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের কাছে আবহমান কাল থেকে একটি অভিজাত ও জনপ্রিয় মাছ হিসেবে পরিচিত। এ মাছটি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু, পুষ্টিকর এবং কম চর্বিযুক্ত। আমাদের দেশে সাধারণত ৩ ধরনের কৈ মাছ পাওয়া যায়, যেমন-দেশী, থাই এবং ভিয়েতনাম কৈ। যদিও ৩ ধরনের কৈ -এর বৈজ্ঞানিক নাম (Anabas testudineus) একই তবুও এদের মাঝে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। জীবন্ত অবস্থায় বাজারজাত করা যায় বিধায় এ মাছের বাজারমূল্য তুলনামূলকভাবে বেশি।

অতীতে এ মাছটি খাল, বিল, পুকুর, ডোবা, হাওর, বাঁওড় এবং প্লাবনভুমিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত কিন্তু দেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচের জন্য বাঁধ নির্মাণ, প্রাকৃতিক জলাশয়ে পলিমাটি পড়ে ক্রমশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ মাছটির প্রাচুর্যতা কমে যাচ্ছে। পুকুরে দেশী কৈ মাছের বৃদ্ধিও আশানুরূপ হয় না। সে কারণে দেশী কৈ মাছের চাষ তেমন বিস্তার লাভ করে নাই ।
এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উদ্দেশে থাইল্যান্ড থেকে ২০০২ সালে দ্রুত বর্ধনশীল কৈ মাছ আমাদের দেশে আনা হয় যা থাই কৈ নামে পরিচিত। এ মাছটি দ্রুত বর্ধনশীল এবং উৎপাদন দেশি কৈ থেকে অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ায় কয়েক বছরের মধ্যে চাষিদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। পরবর্তীতে নানাবিধ কারণে বিশেষত হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ইনব্রিডিং বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন না করায় থাই কৈ সহজেই এর দ্রুত বর্ধনশীল বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলে। এছাড়া ফ্যাকাশে বর্ণের কারণে বাজার মূল্য কম হওয়ায় চাষিরা ন্যায্য মূল্য পায় না বিধায় চাষের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
সমস্যা উত্তরণের লক্ষ্যে ২০১১ সালে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় উচ্চ ফলনশীল কৈ মাছের আরও একটি উন্নত জাত আমাদের দেশে আমদানি করা হয় যা ভিয়েতনাম কৈ নামে পরিচিত। গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে দেখা যায়, ভিয়েতনাম কৈ মাছ থাই কৈ অপেক্ষা প্রায় ৬০% বেশি উৎপাদনশীল। ভিয়েতনাম কৈ এর রং ও স্বাদ অনেকটাই দেশী কৈ -এর মতো এ কারণে খুব দ্রুত এ মাছটি চাষিদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে ফলে চাষের ক্ষেত্র দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিচে এ মাছটির গুরুত্ব ও চাষ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিষদ আলোচনা করা হলো ।
আরও দেখুনঃ