চিংড়ির রোগ ও প্রতিকার নিয়ে আলাপ হবে আজ। প্রতি বছর চিংড়ি রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। ২০০১-২০০২ অর্থ বছরে চিংড়ি রপ্তানি থেকে প্রায় ২০০০ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হচ্ছে এবং উৎপাদিত চিংড়ির শতকরা ৮০ ভাগ বাগদা এবং ২০ ভাগ মিঠা পানির গলদা। সাম্প্রতিক বছর গুলোতে বাগদা চিংড়ি চাষে হোয়াইট স্পট বা চাইনা ভাইরাসরোগ মারাত্নক বিপর্যয় বয়ে আনছে।
পুকুর বা ঘেরের চিংড়ির অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দিলেই বুঝতে হবে চিংড়ি রোগের আক্রান্ত হয়েছে। মাটির প্রকৃতি, পানির তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, অক্সিজেন, পি এইচ ইত্যাদির সমষ্ঠিগত বৈশিষ্ঠ্যের এক বা একাধিক গুণাবলী খারাপ হলে চিংড়ি দুর্বল ও রোগাক্রান্ত হয়। অধিক হারে পোনা মজুদ, অতিরিক্ত খাদ্য ও সার প্রয়োগ, কম গভীরতা উচ্চতাপ, হঠাৎ করে লবণাক্ত কম বেশী হওয়া ইত্যাদি অসহনীয় পরিবেশের কারণেই রোগের প্রাদুর্ভাব হয়।
চিংড়ির রোগ ও প্রতিকার
চিংড়ি রোগের সাধারণ লক্ষণ:
- চিংড়ি পুকুরের পাড়ের কাছে বিচ্ছিন্ন ও অলস অবস্থায় ঘোরা ফেরা করলে।
- খাদ্য গ্রহণ কমিয়ে দিলে বা একেবারে বন্ধ করলে, খাদ্য নালী শূন্য থাকলে।
- ফুলকায় কালো বা হলদে দাগ পড়বে বা অস্বাভাবিক রং দেখা দিলে।
- ফুলকা পঁচন ধরলে।
- পেশী সাদা বা হলদে হয়ে গেলে।
- চিংড়ির ‘খোলস’ নরম হয়ে গেলে
- হাত পা বা মাথার উপাঙ্গ ও গেতে পঁচন ধরলে।
- চিংড়ির খোলস এবং মাথায় সাদা সাদা দাগ হলে।
- চিংড়ি হঠাৎ বা ধীরে ধীরে মরে গেলে।
রোগের নাম কারণ ও লক্ষন:
১) হোয়াইট স্পট বা চায়না ভাইরাস রোগ:
ঘেরের তলদেশের পচাঁ কাদা মাটি তুলে ফেলুন। চুন সার দিয়ে জমি প্রত্তুত করতে হবে। অন্য রোগাক্রান্ত খামারের বজ্য পারন যাতে ঘেরে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে সতক দৃষ্টি রাখতে হবে।
২) মস্তক হলুদ রোগ:
৩) চিংড়ির কালো ফুলকা রোগ:
৪) কাল দাগ রোগ:
দ্রুত পানি পরিবতন এবং প্যাডেল হুইলের সাহায্যে বায়ু সঞ্চালনের রোগের প্রকোপ কমে যায়। মিথাইল ব্লু (২-৫ পিপিএম) পানিতে ব্যবহার করে রোগ নিরাময় করা যায়।
৫) খোলস নরম রোগ
প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম:
- চিংড়ি ঘেরের আকার ছোট করুন ও থঘরে আলাদা নার্সারীর ব্যবস্থা করুন।
- পোনা মজুদহার একর প্রতি ৩ থেকে ৪ হাজারের মধ্যে রাখুন।
- ঘের ভূক্ত আলাদা নাসারীতে চিংড়ি পোনা ২-৩ সপ্তাহ প্রতিপালনের পর চাষের ঘেরে নালা কেটে বের করে দিন।
- প্রস্তুত কালীন সময়ে পরিমিত চুন (কমপক্ষে শতাংশে ১ কেজি) প্রয়োগ করুন।
- চাষকালীন সময়ে পানি পরিবতনের পরপরই প্রতি শতাংশে ৫০-১০০ গ্রাম কার্বনেট চুন প্রয়োগ করে পানি শোধন করুন।
- ঘেরের পানির গভীরতা কম পক্ষে ৩-৪ ফুট রাখুন।
- ১৫ দিন বা একমাস অন্তর অন্তর ঘেরের বজ্য পানি বের করে নতুর পানি ঢুকানোর ব্যবস্থা করুন।
- রাক্ষুসে মাছ, কাকরা ও অন্যান্য চিংড়ি ভূক প্রাণী নিয়ন্ত্রণ করুন।
- খামার জলজ আগাছা মুক্ত রাখুন ও বাঁশের কনচি গাছের শুকনা ডালপালা দিয়ে আশ্রয় করে দিন।
- কোন সমস্যা দেখা দিলে সাথে সাথে নিকটস্থ মৎস্য কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: