চিংড়ি আহরণ পদ্ধতি | অধ্যায়-১ | শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-১

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – চিংড়ি আহরণ পদ্ধতি । যা ” বাগদা চিংড়ি আহরণ ও বাজারজাতকরণ ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত ।

শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

চিংড়ি আহরণ পদ্ধতি

 

চিংড়ি আহরণ পদ্ধতি | অধ্যায়-১ | শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-১

 

চিংড়ি আহরণ পদ্ধতি

চিংড়ি চাষের সময় ও চিংড়ির দৈহিক বৃদ্ধির ওপর ভিত্তি করে চিংড়ি আহরণের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। চিংড়ি আহরণের ক্ষেত্রে চিংড়ির ঘরের পারিপার্শ্বিক অবস্থা, জমি ব্যবহারের পরবর্তীকালীন লক্ষ্য, প্রবর্তী ফসলের সময়, চিংড়ির বাজারদর, পরিবহন ব্যবস্থার সুবিধা, প্রক্রিয়াজাতকরণের সুবিধা প্রভৃতি বিবেচনা করে চিংড়ি আহরণ করা উচিত।

সাধারণত চিংড়ির বয়স ৩ থেকে ৪ মাস হলে চিংড়ি আহরণ করা আরম্ভ হয়। চিংড়ির খামারে বা যেয়ে পর্যাপ্ত খাবার বিদ্যমান থাকলে এবং ঘেরের পরিবেশ চিংড়ির বৃদ্ধির অনুকূল হলে ৪ থেকে ৫ মাসের মধ্যে ১৫ থেকে ৩০ টি চিংড়ি মাখাবিহীন অবস্থায় ১ পাউন্ড ওজনের হয়ে থাকে। এ সময় প্রতিটি চিংড়ির ওজন ৩০ থেকে ৫০ গ্রাম হয়ে থাকে। আমাদের দেশে প্রধানত দু’ভাবে চিংড়ি আহরণ করা হয়ে থাকে, যেমন- ক. আংশিক আহরণ ও খ. সম্পূর্ণ আহরণ।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

ক. আংশিক আহরণ

এ পদ্ধতিতে ঘেরের চিংড়ি ১৫ থেকে ২০ গ্রেডের মধ্যে এসেই অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে নতুন পানি ঢাকোনোর সময় বড় আকারের চিংড়ি ধরা আরম্ভ হয়। জোয়ারের সমর নির্দিষ্ট স্থানে চিংড়ি আটকিয়ে ঝুঁকি জাল দিয়ে বা অন্য কোনো প্রকার ছোট জাল ব্যবহারের মাঞ্চমে আংশিক চিংড়ি ধরা যেতে পারে। এ পদ্ধতিতে শুধু বড় আকারের চিংড়ি ধরে ছোট চিংড়িসমূহ বড় হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়।

সুবিধা

  • সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে বাজারজাত করা যায়।
  • গ্রেড অনুযায়ী চিংড়ির আকার মোটামুটি একই রকম করা যায়।
  • বাজারজাতকরণের ঝুঁকি কম থাকে।
  • খেরের ছোট চিংড়ি বড় হতে সুযোগ পায়।
  • পরিবহন পাত্র ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য জিনিসপত্র কম লাগে।

অসুবিধা

  • চিংড়ি ধরার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম ব্যয় হয়।
  • কিছুটা সময় অপচয় হয়।
  • পরিবহন খরচ বেশি লাগে।

 

চিংড়ি আহরণ পদ্ধতি | অধ্যায়-১ | শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-১

 

খ. সম্পূর্ণ আহরণ

এ পদ্ধতিতে খামারের পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে গেটে জাল পেতে ছোট-বড় সব রকম চিংড়ি ধরা হয়। চিংড়ি সম্পূর্ণভাবে ধরার জন্য ব্যাগ নেট, বেহুন্সি জাল, হাপা নেট প্রভৃতি ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘেরের পানি সম্পূর্ণ নিষ্কাশনের পর স্কুপ নেট (Scoop net) বা হাতের মাধ্যমেও চিংড়ি ধরা যেতে পারে।

সুবিধা

  • খামারে নতুন ফসলের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সুবিধা হয়।
  • চিংড়ি ধরায় কাজে শ্রম বিনিয়োগ কম লাগে।
  • ফসল পর্যায়ক্রম (Crop rotation) করতে সুবিধা হয়।
  • একসাথে সমস্ত চিংড়ি বাজারজাত করা যায়।

অসুবিধা

  • অনেক চিংড়ি ছোট অবস্থায় থেকে যায় বা বড় হওয়ার সুযোগ পায় না।
  • খামারে মোট উৎপাদন কিছুটা কম হয়ে থাকে।
  • ছোট চিংড়ির বাজার চাহিদা কম হয়ে থাকে।
  • চিংড়ি ধরার কাজে বেশি শ্রম বিনিয়ােেপর প্রয়োজন পড়ে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment