Site icon Fisheries Gurukul [ মৎস্য গুরুকুল ] GOLN

সহনশীল মৎস্য উৎপাদনে মাটি ও পানির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

সহনশীল মৎস্য উৎপাদনে মাটি ও পানির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

সহনশীল মৎস্য উৎপাদনে মাটি ও পানির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

সহনশীল মৎস্য উৎপাদনে মাটি ও পানির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

১.কৃষিবিদ কাজী শামস আফরোজ.২.কৃষিবিদ ড. মোহাঃ সাইনার আলম।

সহনশীল মৎস্য উৎপাদনে মাটি ও পানির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

সহনশীল মৎস্য উৎপাদনে মাটি ও পানির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

প্রতিটি প্রাণীর সুন্দরভাবে বসবাসের জন্য তাদের উপযোগী স্বাস্থ্যকর বাসস্থানের প্রয়োজন। মাছের বাসস্থান হচ্ছে জলাশয় এবং জীবন ধারণের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে পানি। জলাশয়ের উৎপাদন ক্ষমতা প্রাথমিকভাবে মাটির বিভিন্ন গুণাগুণের ওপর নির্ভর করে। পুকুরের মাটি ও পানির গুণাগুণ যথাযথ মাত্রায় না হলে মাছের উৎপাদন কম হবে। উর্বর মাটি ও পানি মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরিতে অধিক পরিমাণে প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দেয়। সুতরাং সফলভাবে মাছচাষে মাটি ও পানির গুণাগুণের গুরুত্ব অপরিসীম।

মৎস্যচাষে মাটির গুণাগুণ

মাটির গুণাগুণ পানির গুণাগুণকে (পানির পিএইচ, অম্লত্ব, ক্ষারত্ব ইত্যাদি) সরাসরি প্রভাবিত করে, তাই পুকুর বা খামারের স্থান নির্বাচনের সময় মাটির ধরন জেনে নেয়া প্রয়োজন। দো-আঁশ মাটি মাছ ও চিংড়ি চাষের জন্য উত্তম। মাটির পিএইচ ৬.৫ থেকে ৭.৫ থাকা বাঞ্ছনীয়। এসিড সালফেটযুক্ত মাটি মৎস্যচাষ ব্যবস্থাপনায় গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই স্থান নির্বাচনের সময় এরূপ এলাকা পরিহার করা উচিত। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে এসিড সালফেটযুক্ত মাটি উঠিয়ে ফেলে সেখানে ভাল মাটির উপযুক্ত স্তর তৈরি করতে হবে। পুকুরের উৎপাদনশীলতা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্ভর করে তলদেশের উর্বর মাটির ওপর। সর্বোত্তম পুকুরের তলদেশের মাটিতে জৈব পদার্থসমূহের পচন তাড়াতাড়ি হয়, মাটি ও পানির আন্তঃক্রিয়া সার্বক্ষণিকভাবে চলে এবং তলদেশের মাটি থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকারক পদার্থসমূহ সহজেই পানিতে মুক্ত হয়।

দো-আঁশ মাটিতে সার প্রয়োগ সবচেয়ে বেশি কার্যকর। কাদা মাটির পানি ধারণক্ষমতা বেশি। তলদেশে ৪-৬ ইঞ্চি কাদাযুক্ত পুকুর বেশ উৎপাদনশীল। তবে জলাশয়ের কালো কাদায় অধিক জৈবিক পদার্থ থাকে, যা পানির অক্সিজেন চাহিদা বাড়ায় ও পানির গুণাগুণের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই অধিক কাদাযুক্ত পুকুর পরিহার করা উচিত। সার প্রয়োগের মাধ্যমে পুকুরে অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টিকারক পদার্থসমূহের সরবরাহের ফলে পুকুরের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং মাছের অধিক উৎপাদনও পাওয়া যায়। পুকুরের তলদেশীয় মাটির রাসায়নিক গুণাবলি অনেকাংশে পার্শ্ববর্তী জমির মাটির সাথে পারস্পরিকভাবে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত এবং পার্শ্ববর্তী জমি থেকে আসা পুষ্টি উপাদানের কারণে ঐ পুকুরের তলদেশের মাটিতে পুষ্টিকারক পদার্থের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।

সহনশীল মৎস্য উৎপাদনে মাটি ও পানির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

মাছ চাষে পানির গুণাগুণ
জলাশয়ের পানির গুণাগুণকে দুই ভাগে ভাগ কর হয়, ক. ভৌত গুণাগুণ ও খ. রাসায়নিক গুণাগুণ। মাছচাষে এগুলোর প্রভাব ও প্রতিকারের ব্যবস্থা সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো। সারণি-১ দ্রষ্টব্য।

ক. ভৌত গুণাগুণ
আলো : পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনে আলোর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপুর্ণ। সবুজ উদ্ভিদকণা সূর্যালোকের উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতির মাধ্যমে গ্লুুকোজ, ফাইটোপ্লাঙ্কটনের (মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য) খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং উৎপাদিত অক্সিজেন পানিতে দ্রবীভূত হয়ে জলজ জীবকুলের শ্বাসকার্যে ব্যবহৃত হয়। একটি পুকুরের পানিতে দিনের বেলায় নিরবচ্ছিন্নভাবে ৬-৮ ঘণ্টা পর্যাপ্ত সূর্যালোক পড়লে প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন কাক্সিক্ষত মাত্রায় বৃদ্ধি পায়।

তাপমাত্রা : মাছের বৃদ্ধি, প্রজনন ও অন্যান্য জৈবিক কার্যক্রম তাপমাত্রা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাপমাত্রা বেড়ে গেলে জলজপ্রাণীর বিপাকক্রিয়া বেড়ে যায়। এ অবস্থায় পানির পরিবেশ ভাল থাকলে মাছ বা চিংড়ি বেশি খায় এবং বাড়েও বেশি। পানির তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি পেলে মাছের বিপাকীয় হার ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। পানির তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে হলে মাছ খুব কম খায় এবং ৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে হলে মাছ খাওয়া বন্ধ করে দেয়।

ঘোলাত্ব : পলি ও বালুকণাসহ পানিতে ভাসমান ও দ্রবীভূত নানা জৈব ও অজৈব পদার্থের উপস্থিতিজনিত কারণে পানি ঘোলা হয়। সকল জলাশয়ে পানি কিছু না কিছু ঘোলা থাকে। ঘোলা পানি সূর্যালোক প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে, ফলে পানির প্রাথমিক উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায়। পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পায়, ফলে মাছ খাবি খায়। অতিরিক্ত ঘোলা পানিতে মাছের শ্বাস ক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটে, মাছের ফুলকা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি মাছ মারাও যেতে পারে। মাটির গঠন পরিবর্তন করে কাদা মাটির দ্বারা সৃষ্ট ঘোলাত্ব নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

তাছাড়া পুকুরে বাইরের পানি প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে তথা পাড় উঁচু করে, পাড়ে ঘাসের আবরণ সৃষ্টি করে এবং জৈবসার ব্যবহার করে ঘোলাত্ব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। শতকে ১.৫-২.০ কেজি হারে পোড়া চুন বা জিপসাম বা ৫০-১০০ গ্রাম হারে ফিটকিরি পানিতে দ্রবণ তৈরি করে প্রয়োগ করলে ঘোলাত্ব দূর হয়। খসখসে পাতাবিশিষ্ট (খোকসা, শেওড়া, বাঁশ) গাছের ডাল বা কলাগাছ কেটে পানিতে দিলে অথবা ধানের খড় এক সপ্তাহ ডুবিয়ে রাখলেও ঘোলাত্ব নিবারণ হতে পারে।

স্বচ্ছতা : জলাশয়ে পানির স্বচ্ছতার উপর ফাইটোপ্লাংকটনের সালোকসংশ্লেষণ হার এবং বেনথোসের বিস্তার নির্ভর করে। পানির স্বচ্ছতার পরিমাপ ২০ সেমি. বা তার কম হলে পানিতে ফাইটোপ্লাংকটনের ব্লুম হয়, যা জলজ পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং মাছের উৎপাদন কমে যায়। আর পানির স্বচ্ছতার পরিমাপ ৩০ সেমি.-এর বেশি হলে পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমাণ কম রয়েছে মর্মে বিবেচিত হয়, যা জলাশয়টির অনুর্বরতা নির্দেশ করে। সার প্রয়োগের মাধ্যমে পানির স্বচ্ছতা কমানো যায়।

খ. রাসায়নিক গুণাগুণ
দ্রবীভূত অক্সিজেন : পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের উৎস মূলত বায়ুমণ্ডল এবং পানির ভিতরে সংঘটিত সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত অক্সিজেন, তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, বায়ুচাপ ও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতার সঙ্গে পানিতে অক্সিজেন দ্রবণীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা বেড়ে গেলে পানিতে অক্সিজেনের দ্রবণীয়তা কমে যায়। অক্সিজেন স্বল্পতা  রোধে করণীয়সমূহ হচ্ছেÑ ১) পুকুরের পানি পরিবর্তন করে; ২) এরেটর বা অন্য উপায়ে পানিতে প্রচুর ঢেউ সৃষ্টি করে বাতাস ও পানির সংস্পর্শ বৃদ্ধি করে; এবং ৩) প্রখর রৌদ্রোজ্জ্বল সময়ে হররা টেনে তলদেশের বিষাক্ত গ্যাস বের করে।

সারণি ১ : পুকুরে পানির গুণাগুণের আলো ভাল বা উৎপাদন সহায়ক মান

পুকুরে পানির গুণাগুণের আলো ভাল বা উৎপাদন সহায়ক মান

কার্বন ডাই-অক্সাইড : মুক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে উদ্ভিদ কর্তৃক জলাশয়ে সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদিত হয়। এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস পায়। মাত্রাতিরিক্ত ফাইটোপ্লাংকটনের ব্লুুম ও অত্যাধিক জৈব বস্তুর পচনের ফলে মুক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইডের বৃদ্ধি ঘটে। পুকুরে চুন প্রয়োগ করে অথবা মাছের মজুদ ঘনত্ব কমিয়ে মুক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ হ্রাস করা যায়।

অ্যামোনিয়া : মাছ ও চিংড়ির বর্জ্য, অভুক্ত খাদ্য, বিভিন্ন নাইট্রোজেনজাত পদার্থের পচন এবং হঠাৎ করে ফাইটোপ্লাংকটন মারা গিয়ে পচনের ফলে পুকুরে অ্যামোনিয়ার সৃষ্টি হয়। পুকুরে অ্যামোনিয়া আয়োনাইজড (NH4) ও আন-আয়োনাইজ্ড (NH3) এই দু’রূপে থাকে। আন-আয়োনাইজ্ড অ্যামোনিয়া মাছ ও চিংড়ির জন্য খুব বিষাক্ত।

তাপমাত্রা ও পিএইচ বেড়ে গেলে আন-আয়োনাইজ্ড অ্যামোনিয়া বেড়ে যায়। পুকুরে অ্যামোনিয়ার মাত্রা বেড়ে গেলে পানির রং তামাটে অথবা কালচে হয়। ফলে মাছ এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করার পাশাপাশি চক্রাকারে দ্রুত সাঁতার কাটতে থাকে। পুকুরে ভাল পানি সরবরাহ করে এবং মজুদ ঘনত্ব, সার ও খাদ্য প্রয়োগ নিয়ন্ত্রণ করে অ্যামোনিয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

সহনশীল মৎস্য উৎপাদনে মাটি ও পানির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

পিএইচ : মাছ চাষে পানির পিএইচ ৬.৫ থেকে ৮.৫ এর মধ্যে থাকা সর্বোত্তম। পিএইচ এর মান ৪-এর নিচে এবং ১১-এর ওপরে হলে অধিকাংশ মাছের জন্য তা মারাত্মক। পানির পিএইচ বেড়ে গেলে মাছের ফুলকা নষ্ট হয়, চোখের কর্নিয়া ও লেন্স নষ্ট হয়, অসমোরেগুলেশন ক্ষমতা হ্রাস পায়, মাছ ও চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়। সাধারণত চুন প্রয়োগ করে পানির পিএইচ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

খরতা : পানিতে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মোট ঘনত্ব হচ্ছে খরতা, যা প্রকাশ করা হয় (CaCO3) এর পরিমাণ দিয়ে। মাছ ও চিংড়ি চাষের জন্য হালকা খর পানি সবচেয়ে ভাল। খরতার মান ২০ পিপিএমের কম অথবা বেশি হলে – ১) পানির বাফারিং ক্ষমতা কমে যায়, ফলে পিএইচ দ্রুত ওঠানামা করে; ২) পুকুরে সার দিলে তা কার্যকর হয় না; ৩) ক্ষারত্ব বেড়ে গেলে (>৩০০ মিলিগ্রাম/লিটার) পুকুরের প্রাথমিক উৎপাদন হ্রাস পায়; এবং ৪) মাছ সহজেই অম্লতা ও অন্যান্য ধাতুর বিষক্রিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়। ক্ষারত্ব ও খরতা নিয়ন্ত্রণে পুকুরে নিয়মিত চুন অথবা জিপসাম প্রয়োগ এবং নতুন পানি সরবরাহ করতে হবে।

সারণি-২ : চুন প্রয়োগের মাত্রা

চুন প্রয়োগের মাত্রা

মাটি ও পানির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় চুনের ব্যবহার
চুন ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ অজৈব যৌগ যা এসিড মাধ্যমকে ক্ষারীয় বা নিরপেক্ষ করে। এছাড়াও মাটি ও পানির পিএইচ মাছ চাষের উপযোগী (৬.৫-৮.৫) রাখে; পানিতে খরতার পরিমাণ ২০ মিলিগ্রাম/লিটার-এর বেশি রাখতে সহায়তা করে; সারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে; নার্সারি পুকুর প্রস্তুতকালীন চুন প্রয়োগের মাধ্যমে পরজীবী ও রোগজীবাণু দূর করা যায় এবং পুকুরের তলায় অবস্থিত জৈব পদার্থের পচন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পদার্থের পর্যাপ্ততা বৃদ্ধি করে। চুনের ক্যালসিয়াম নিজেই একটি গুুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান এবং কাদায় আবদ্ধ ফসফরাস মুক্ত করে ও ফাইটোপ্লাংকটন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

চুন প্রয়োগের ফলে শামুক-ঝিনুকের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা যায়; পানির ঘোলাত্ব কমায়; এবং পানির স্বচ্ছতা ও সালোকসংশ্লেষণের হার বৃদ্ধি করে। চুনের গুরুত্ব বলতে গেলে বলতে হয়- মাছ চাষে চুন যেমন, সব তরকারিতে নুন তেমন।

চুন প্রয়োগের মাত্রা ও প্রয়োগ পদ্ধতি : চুন প্রয়োগের মাত্রা সারণি ২ দ্রষ্টব্য। প্রথমে প্রয়োজনীয় পরিমাণ চুন পুকুর পাড়ে ব্যারেলে/মাটির গর্তে/মাটিতে পোঁতা হাড়িতে/পাকা চৌবাচ্চায় ৭-৮ ঘণ্টা ভেজাতে হবে। ঠাণ্ডা হওয়ার পর অধিক পরিমাণ পানিতে গুলিয়ে নেটের উপরে ফেলে ছেঁকে পুকুরের পাড়সহ সমস্ত পানিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। তবে পুকুর বা চিংড়ি ঘেরের তলা প্রস্তুতির সময় চুনের পাশাপাশি চুন প্রয়োগের ৪-৫ দিন আগে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে চুনের সাথে ব্লিচিং পাউডার (৬৫% ক্লোরিন) ব্যবহারের মাত্রা প্রতি শতকে ১৫০ গ্রাম। দুপুর বেলা চুন প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। চুন প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

পানি আছে যেখানে, মাছ চাষ সেখানে- এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ ও লালন করে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রাণিজ আমিষের চাহিদাপূরণের লক্ষ্যে আধুনিক ও উন্নত মৎস্যচাষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সকল ধরনের জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যকর ও পরিবেশসম্মত উদ্যোগ গ্রহণ ছাড়া আর কোন সহজ বিকল্প নেই। জলাশয়ের মাটি ও পানির যথাযথ ও কার্যকর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে মাছের রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। ফলশ্রুতিতে জলাশয়ের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিসহ মাছের উৎপাদন কাক্সিক্ষত পর্যায়ে উন্নীত হবে এবং টেকসই উৎপাদন বজায় রাখা সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন:

স্বাদুপানির ঝিনুকে মুক্তা চাষ : গবেষণায় অর্জিত সাফল্য

 

Exit mobile version