আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় মৎস্য সম্পদ হ্রাসের প্রতিকারের উপায়সমূহ – যা বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদ এর অন্তর্ভুক্ত।
মৎস্য সম্পদ হ্রাসের প্রতিকারের উপায়সমূহ
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে মৎস্য সম্পদ হ্রাসের প্রতিকারের জন্য নিম্নোক্ত পদ্ধতিসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারে :
- বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দিয়ে বন্যা বা জোয়ারের পানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ না করে আংশিক বন্ধ করার ব্যবস্থা করা। – যাতে কিছু পরিমাণ মাছ প্রজননের জন্য খাল-বিলে প্রবেশ করতে পারে এবং বিলের সদ্য প্লাবিত এলাকায় প্রজনন ঘটিয়ে বংশবিস্তার করতে পারে;
- বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সাথে ফিশপাস বা ফিশ ফ্রেন্ডলি স্ট্রাকচার তৈরি করা যেতে পারে। এতে প্রজননযোগ্য মাছ নদী থেকে বিলে এবং বিল থেকে নদীতে সুষ্ঠুভাবে পরিভ্রমণ ও প্রজনন করতে পারবে;
- বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভিতর সুইস গেট দিয়ে প্রয়োজন মতো পানি ঢুকিয়ে সমন্বিত পদ্ধতিতে ধান ও মাছচাষ করা যেতে পারে;
- কৃষি জমিতে নিয়ন্ত্রিত ও পরিমিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থাপনা হলো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (Integrated Pest Management)-এর মাধ্যমে রোগ-বালাই প্রতিরোধ বা দমনের ব্যবস্থা করা;
- সেচের জন্য পানি ব্যবহারে সংযমী হওয়া। মাছের আবাসস্থল নষ্ট হয় এমন স্থান হতে পানি সেচ বা সম্পূর্ণ পানি – শুকিয়ে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা;
- অতি আহরণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করার জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানো । অতি আহরণ রোধকল্পে মৎস্য সংরক্ষণ আইন কঠোরভাবে মেনে চলা;
- দূষণ প্রতিরোধকল্পে পরিবেশ আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা; –
- শিল্প স্থাপনের পূর্বেই বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা শিল্প স্থাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বাধ্যতামূলক করা; –
- অপরিশোধিত পয়ঃ কোনো অবস্থাতেই মুক্ত জলাশয়ে যেন না যায় তার ব্যবস্থা করা;
- মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন প্রয়োগের জন্য মৎস্য বিভাগীয় অবকাঠামো ও জনশক্তি বাড়ানো এবং – প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা প্রদান করা;
- মৎস্য সম্পদ হ্রাসের কোনো কারণ চিহ্নিত এবং প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বয় সাধনের জন্য – আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির মাধ্যমে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার ব্যবস্থা করা ।
আরও দেখুন: