আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় মৎস্য আহরণের সরঞ্জামাদি তৈরি ও সংরক্ষণ।
মৎস্য আহরণের সরঞ্জামাদি তৈরি ও সংরক্ষণ
অসংখ্য পুকুর, ডোবা, খাল-বিল, নদী-নালা, হাওর-বাঁওড় বিস্তীর্ণ প্লাবনভূমির সমন্বয়ে এ দেশে রয়েছে বিশাল মৎস্য ভাণ্ডার। এই বিশাল মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে মৎস্য শিকার নীতিমালা, মৎস্য আহরণে ব্যবহৃত সরঞ্জাম শ্রেণিবিন্যাস, মাছ ধরার জাল তৈরি ও সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকা একান্ত প্রয়োজন। নিচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো ।
মৎস্য আহরণে ব্যবহৃত সরঞ্জাম শ্রেণিবিন্যাস :
মৎস্য আহরণে যেসব সরঞ্জাম ব্যবহৃত হয় সেগুলো ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
১. মাছ ধরার জাল (Fishing nets ),
২. মাছ ধরার ফাঁদ (Fishing traps),
৩. মাছ ধরার বড়শি (Fishing hooks) এবং
৪. কোঁচ জাতীয় যন্ত্রপাতি (Wounding gears)
১. মাছ ধরার জাল :
জাল হলো মাছ ধরার একপ্রকার প্রধান উপকরণ। প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম উভয় ধরনের তন্তু দ্বারা জাল তৈরি করা হয়। পুকুর, ডোবা, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়, সমুদ্র প্রভৃতি জলাশয় থেকে মাছ বা মৎস্য সম্পদ আহরণের জন্য সুতার তৈরি ফাঁস বিশিষ্ট যে সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয় তাকে মাছ ধরার জাল বলা হয়। বিভিন্ন ধরনের সুতা দিয়ে মাছ ধরার জাল তৈরি করা হয় । আবার বিভিন্ন জালের ফাঁসের আকারও বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে ।
ফাঁসের আকার (Mesh size ) :
জালের বিস্তৃতি অবস্থায় দুটি বিপরীত গিটের মর্ধবর্তী সর্বাধিক কৌনিক দূরত্বকে জালের ফাঁস বা মেস সাইজ বলে। ফাঁসের আকার = ২ x ফাঁসের এক বাহুর দৈর্ঘ্য
সুতার প্রকারভেদ :
মাছ ধরার জাল তৈরির জন্য তন্তু ব্যবহৃত হয়। এসব তন্তু (Fibre) -কে সুতা বলা হয় । আর মাছ ধরার জালে ব্যবহৃত সুতার ক্ষুদ্রতম একক হলো তন্তু। মাছ ধরার জাল তৈরির সুতা দুই ধরনের ।
১. প্রাকৃতিক তন্তু (Natural fibre) :
সাধারণত এগুলো মনো ফিলামেন্টের (Mono filament) হয়ে
থাকে । যেমন- কটন, শণ, পাট, নারিকেলের ছোবড়া (coir) প্রাকৃতিক সিল্ক ইত্যাদি ।
২. কৃত্রিম তন্তু (Synthetic fibre) :
এগুলো মাল্টি ফিলামেন্ট (Multi filament) হয়ে থাকে। যেমন- নাইলন, ট্রেটন, অরলন, এনভাইলন, ভিনাইল ইত্যাদি ।
মাছ ধরার জালের প্রকারভেদ :
মাছ ধরার জাল প্রধানত দুই প্রকার যেমন-
১. গিঁটযুক্ত জাল (Knotted net)
২. গিঁটবিহীন জাল ( Knot less net)
১. গিঁটযুক্ত জাল :
যেসব জালের ফাঁসে গিঁট থাকে তাকে গিঁট যুক্ত জাল বলে । গিঁট হলো এক বা একাধিক টুয়াইন (Twine) যখন পরস্পর প্যাচানো অবস্থায় সংযুক্ত হয় তখন তাকে গিঁট বলে। আমাদের দেশে মৎস্য আক্রণে সাধারণত যে সমস্ত পিট যুক্ত জাল ব্যবহৃত হয় সেগুলো নিম্নরূপ :
ক. বেড় জাল
খ. ভেজাল জাল
গ. স্রোতী জাল বা সুতি জাল
ঘ. ঝাকি জাল বা খেগলা জাল
ঙ. কৈ জাল
চ. ফাঁস জাল
ছ. ধর্ম জাল
জ. ঠেলা জাল
ক. বেড়া জাল :
এই জাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্লাবনভূমি, বিল-ঝিল এবং পুকুর-দিখি হতে মৎস্য আহরণে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত লম্বার ৫০ মিটার থেকে ২০০ মিটার ও পাশে ৫-৬ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। জালের ফাঁস ০.৫ সে.মি. থেকে ২.৫ সে.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। জালকে ভাসমান রাখার জন্য জালের উপরের প্রান্তে ফ্লোট ও জালকে নিচের দিকে ডুবিয়ে রাখার জন্য Sinker হিসেবে জালের নিচের প্রান্তে মোটা রশি লাগানো থাকে। এই জাল সাধারণত অগভীর পানিতে স্থাপন করে একটি নিরটি এলাকা ঘিরে ফেলা হয়।
আবার কোনো কোনো বিলে যেখানে প্রচুর পরিমাণ জলজ আগাছা বিদ্যমান থাকে সেখানে জাল স্থাপন করে ভেতরের কচুরিপানা, শ্যাওলা ইত্যাদি পরিষ্কার করে জালের দুই প্রান্তে টেনে ঘেরের আকৃতি ছোট করে আনা হয়। এরপর আস্তে আস্তে জাল টেনে নৌকায় তোলা হয় ও পরে মাছ ধরা হয়। জালটি স্থাপন করে মাছ ধরতে সাধারণত ৮-১০ জন লোকের প্রয়োজন হয়। বেড় জালে সাধারণত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে।
তবে কোন প্রজাতির মাছ কী পরিমাণে ধরা পড়বে তা নির্ভর করে মাছ ধরার স্থান, মাছের প্রাচুর্য, সমর ও ঋতুর ওপর। বেড় জাল দ্বারা সাধারণত রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ এবং ছোট মাছের মধ্যে সাধারণত পুঁটি, টেংরা, চান্দা, চেলা, চাপিলা প্রভৃতি মাছ আহরণ করা হয়।

খ. ভেসাল জাল :
কোনো কোনো এলাকায় ভেসাল জালকে খরা জাল বা টং জালও বলা হয়। এই জাল ব্যবহার করার জন্য জালের দুই পাশে দুটি লম্বা বাঁশ (জালের সমপরিমাণ) বেঁধে বাঁশ দুটির পেছনের অংশ একত্রে আটকানো হয়। সামনের দিকে জালের সমপরিমাণ লম্বা একটি মোটা সুতা দুই বাঁশের অগ্রভাপের সাথে বেঁধে দেয়া হয়। দুটি বাঁশের সাথে আটকানো ত্রিভুজাকার জালটি মাটিতে পৌঁছা বাঁশের খুঁটির সাথে আটকানো হয় ৷ জালটি বাঁশের ফ্রেমের সাথে এমনভাবে আটকানো হয় যাতে তা একটি ঢেঁকিকলের মতো কাজ করে।
এই জাল সাধারণত খালের পরিষ্কার স্থানে, নদী ও বিলের সংযোগস্থলে, দুই বিলের সংযোগ স্থলে, কোনো রাস্তা বা বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশে বা প্রাঙ্ক ঘেষে অথবা যেখানে মাছ চলাচল বেশি সেখানেই এটি স্থাপন করা হয়। এই জাল দিয়ে মাছ ধরার সমর জালের পেছনের অংশ অর্থাৎ দুই বাশের সংযোগ স্থলকে উপরের দিকে তোলা হয় এবং তখনই জালের সামনের অংশ পানিতে ডুবে থাকে।
একটি নির্দিষ্ট সময় পানিতে রাখার পর দুই বাঁশের মিলিত স্থানে উঠে চাপ দেয়া হলে এর সামনের অংশ পানি থেকে উপরে উঠে আসে। এরপর জাল ঝেড়ে যাছ সংগ্রহ করে নৌকার বা হাঁপায় বা ঝুড়িতে রাখা হয়। বেড় জালের মতো ভেসাল জালেও বিভিন্ন প্রজাতির বড় মাছ যেমন- রুই, কাতলা, মৃগেলসহ, পুঁটি, টেংরা, খলিসা, চাদা, চেলা ইত্যাদি ছোট ছোট মাছ প্রচুর পরিমাণে ধরা পড়ে।

গ. স্রোতী জাল বা সুতি জাল :
এটি একটি ফানেল আকৃতির জাল। জালের মুখ খালের দুই পাশে বাঁশের খুঁটি দ্বারা স্থাপনের মাধ্যমে খোলা রাখা হয়। ব্যবহারের সময় জালের পিছনের অংশ (থলে) রশি দ্বারা বন্ধ করে রাখা হয়। জালের ফাঁস থলের দিকে (পেছনের অংশ) সাধারণত ০.৫ সে.মি. এবং মুখের দিকে ক্রমান্বয়ে বেড়ে গিয়ে ৪.৫ সে.মি. হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট সময় পর পর থলের মুখ খুলে মাছ সংগ্রহ করা হয়। স্রোতী জাল সাধারণত অক্টোবর মাস থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিলের ভিতর বা সংযুক্ত খালের মধ্যে এই জাল ব্যববহার করা হয়।
বর্ষা শেষে বিলের পানি যখন নেমে যেতে শুরু করে তখনই খালের মধ্যে স্রোতের বিপরীতে মুখ করে এই জাল স্থাপন করা হয়। ফলে পানির মধ্যে নেমে আসা প্রায় সব ধরনের মাছই এতে ধরা পড়ে। এই জালে প্রচুর পরিমাণে পুঁটি, টেংরা, চাপিলা, চান্দা, পাবদা ইত্যাদি মাছ ধরা পড়ে ।
ঘ. ঝাঁকি জাল বা খেপলা জাল :
ঝাঁকি জালকে অনেক অঞ্চলে খেপলা জাল বলে। আবার কোন অঞ্চলে একে কনুই জালও বলে। ঝাঁকি জাল বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নাইলনের সুতার তৈরি, বৃত্তাকার এবং এর প্রান্তের দিকে পকেট ও লোহার কাঠি থাকে। জালের কেন্দ্রের সাথে থাকে ৫-৭ মিটার লম্বা রশি। লম্বা রশিটি ডান হাতের কব্জির সাথে বেঁধে নদী-খালের তীর বা নৌকা থেকে পানিতে জালটি নিক্ষেপ করা হয়। এ জাল বৃত্তাকার অবস্থায় পানিতে পড়ে এবং লোহার ওজন থাকার ফলে তাড়াতাড়ি পানির তলদেশে চলে যায়। তারপর রশি ধরে টেনে জাল উত্তোলন করা হয় ।
জালের পকেটে বা চূড়ায় আটকানো মাছ সংগ্রহ করা হয় । মাছ ধরার কাজে সারা বছরই এ জালের ব্যবহার হয়ে থাকে। ঝাঁকি জাল দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, যেমন- রুই, কাতলা, মৃগেল, কার্পিও, কালিবাউস, শোল, গজার, টেংরা, পুঁটি, মলা, ঢেলা ইত্যাদি মাছ আহরণ করা হয়ে থাকে ।
ঙ. কৈ জাল :
এটি এক ধরনের ফাঁস জাল। এই জালে কৈ মাছ বেশি আহরণ করা হয় বলে এ জালের এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। কৈ জাল সাধারণত ১০-১২ মিটার লম্বা এবং ০.৬ মিটার থেকে ১.০ মিটার চওড়া হয়ে থাকে। এর ফাঁস ৩.২ সে.মি. থেকে ৪.৫ সে.মি. হয়ে থাকে। খুবই চিকন সুতা (নাইলনের একক আঁশ বা সুতার কয়েকটি আঁশ) দ্বারা এ জাল তৈরি করা হয়। জালকে পানির মধ্যে টান টান অবস্থায় রাখার জন্য জালের উপরের অংশে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত মোটা সুতা দ্বারা পানিতে ভাসমান কাঠি ব্যবহার করা হয় ।
এ জাল সাধারণত ধান ক্ষেতের আইলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত পাতা হয়। জালের প্রান্তদ্বয় শক্ত কোন খুঁটি বা ধানের তিন চারটি গোছা একত্র করে বাঁধা হয়। অনেক সময় একাধিক জাল এক সঙ্গে জোড়া দিয়ে পাতা হয় । সাধারণত জুন-জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ জালের ব্যবহার হয়ে থাকে। এ জাল ব্যবহার করে কৈ মাছ ছাড়াও শিং, মাগুর, খলিসা, টাকি, প্রভৃতি মাছও ধরা হয় ৷
চ. ফাঁস জাল :
এটি একটি বড় ফাঁসের গিলনেট। মাছের সাধারণত চলাচলের পথে যখন এই জাল পাতা থাকে এবং মাছ যখন এই জালের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করার চেষ্টা করে তখন মাছের মাথা জালে আটকা পড়ে এবং জালে জড়িয়ে যায় বলে এই জালকে ফাঁস জাল বা গিলনেট বলে। এই জালের ফাঁস ৪.৫ সে.মি. থেকে ১৫ সে. মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই জাল দৈর্ঘ্যে ২০ মিটার থেকে ৫০০ মিটার এবং প্রস্থে ১ থেকে ৩ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। জালের ঊর্ধ্ব প্রান্তে ফ্লোট এবং নিম্ন প্রান্তে মাটির চারা (ওজন) সংযুক্ত থাকে। ফাঁস জালের উভয় প্রান্ত বাঁশের কাঠি বা খুঁটির সাথে বেঁধে পানিতে স্থাপন করা হয়।
বেশির ভাগ সময় জালটি ধান ক্ষেতের আইলের মাঝে বা জঙ্গল পরিষ্কার করে তার মাঝে স্থাপন করা হয়। সাধারণত সন্ধ্যার দিকে জালটি স্থাপন করে সকালে তোলা হয় । আবার কখনও কখনও সকালে স্থাপন করে সন্ধ্যায় তোলা হয় । আগষ্ট থেকে নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত এ জালে প্রচুর পরিমাণ রুই, কাতলা, কার্পিও এবং ছোট মাছের মধ্যে পুঁটি, টাকি, ভেদা বা মেনি ইত্যাদি মাছ ধরা পড়ে। উপকূলীয় অঞ্চলে ইলিশ ধরার কাজেও ফাঁস জাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।
ছ. ধর্ম জাল :
ধর্ম জাল একটি চার কোনাকার জাল, যার চারটি কোণা আড়াআড়ি ভাবে স্থাপিত ২টি বাঁশের কঞ্চির মাধ্যমে একটি লম্বা বাঁশের সাথে যুক্ত থাকে। এই বাঁশ দিয়ে জালটি পানিতে ডোবানো হয় এবং কিছু সময় পর পর তুলে জ্বালে প্রাপ্ত মাছ ধরে নেয়া হয়। ধর্ম জাল সাধারণত জুলাই থেকে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস পর্যস্ত ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই জালের ফাঁস ০.৫ সে.মি. থেকে ১.৫ সে.মি পর্যন্ত হয়ে থাকে। উপরের স্তরের প্রায় সব মাছই যেমন- পুঁটি, মলা, চেলা, বাঁশপাতারি, বাতাসি, রাইখর ইত্যাদি মাছ এই জালে ধরা পড়ে।
জ. ঠেলা জাল :
ত্রিকোণাকার বাঁশের ফ্রেমের সাথে এই জাল আটকানো থাকে। ফ্রেমটির একটি লাঠি কিছুটা লম্বা থাকে এবং তা হাতলের কাজ করে। হাতলের সাহায্যে জাল টেনে মাছ ধরা হয়। জালের ফাঁস ০.৫ সে.মি. থেকে ১.৫ সে.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই জাল সাধারণত অগভীর পানিতে মাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত হয়।
আবার অনেক সময় কচুরিপানা বা আগাছার ভিতরে ঠেলে দিয়েই জালটি ভোলা হয়। ফলে আগাছা ৰা কচুরিপানার মধ্যে যে সমস্ত মাছ লুকিয়ে থাকে সেগুলো এই জাল দ্বারা আহরণ করা যায়। এই জালে সাধারণত কৈ, শিং, মাগুর, চিংড়ি, খলিসা, পুঁটি, টাকি ইত্যাদি মাছ ধরা পড়ে।
গিটবিহীন জাল :
যেসব জালে পিট থাকে না তাকে গিঁটবিহীন জাল বলে । এটি এমন এক ধরনের বিশেষ ভাল যার ঘরগুলো পাকানো ইয়ার্নের সাহায্যে তৈরি করা হয় এবং একটির সাথে অপরটি বুননের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়।
জল সংরক্ষণ :
আমাদের দেশে মৎস্য আহরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের জাল ব্যবহার করা হয়। অধিকাংশ জেলে তাদের সুতার তৈরি জাল সংরক্ষণ করার জন্য গাব ফলের নির্যাস ব্যবহার করে থাকে। এ প্রাকৃতিক সংরক্ষক দেশের সর্বত্র প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এতে কম খরচে অতি সহজে সুতার তৈরি জাল সংরক্ষণ করা যায় । নিচে জাল সংরক্ষণের সুবিধাসমূহ দেয়া হলো—
জাল সংরক্ষণের সুবিধাসমূহ
- জাল সংরক্ষণ করলে জালের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়;
- জালের শক্তি বাড়ে;
- জাল সংরক্ষণ করলে জালের কুঁচকানো রোধ করা যায়
- জালে পচন খটার এমন সব অণুজীবসমূহের বৃদ্ধি রোধ করে। ফলে জালের পচন রোধ হয়;
- জালে গাব ব্যবহার করলে জালের গিটি স্থানান্তর রোধ করে
- জাল সহজেই পানিতে ডুবে যায়;
- অতিরিক্ত পানি শোষন রোধ হয় এবং পচনকারী অণুজীবের ক্রিয়া বন্ধ হয়।
জাল সংরক্ষণের ধরন : মাছ ধরার জাল সংরক্ষণকে ৩টি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. জীবাণু শরু করার মাধ্যমে জাল সংরক্ষণ :
এই পদ্ধতিতে পচনকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার লক্ষ্যে জাল সিদ্ধ করার পর রোদে শুকিয়ে কপার সালফেট দ্রবণে ভিজিয়ে পরে শুকিয়ে অথবা কপার নেপথোনেট দ্রবণে ভিজিয়ে তারপর শুকিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়।
আরও দেখুন: