মিশ্র মাছ চাষ নিয়ে আজ আলাপ করবো। পুকুরে একসাথে একের অধিক প্রজাতির মাছের পোনা চাষ করা হয় তখন তাকে মাছের মিশ্র চাষ বলে। আবার একথাও সত্য যে একের অধিক প্রজাতির মাছ একসাথে চাষ বলা হয় না । অর্থাৎ যে যে মাছ একে অন্যের প্রতিযোগিতায় নামবে না অথচ প্রত্যক প্রজাতির মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে- এমন ব্যবস্থার চাষ পদ্ধতিকেই কেবল মাছের মিশ্র চাষ বলে।
মিশ্র মাছ চাষ
আমাদের জলসম্পদকে আরও ভালো ভাবে কাজে লাগাতে হলে মিশ্র মাছের নিবিড় চাষ পদ্ধতি আমরা অবলম্বন করতে পারি। জলাশয়ের প্রাকৃতিক খাবার, আলোক, তাপ ও জলবায়ু উৎকৃষ্ট ভাবে মাছের উৎপাদনের জন্য কাজে লাগবে এই মিশ্র চাষের ফলে। কারণ বিভিন্ন মাছের গতিবিধি, আচরণ, খাদ্যাভাস ভিন্ন ভিন্ন।
মিশ্র মাছ চাষ
রুইজাতীয় মাছের সাথে মলা-পুঁটির মিশ্র চাষ
পুকুর/মৌসুমী জলাশয় নির্বাচন
• দো-আঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটির পুকুর ভালো।
• পুকুর/জলাশয় বন্যামুক্ত এবং মাঝারী আকারের হলে ভালো হয়।
• পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ে এমন পুকুর নির্বাচন করা উচিত।
• পানির গভরীতা ১-১.৫ মিটার হলে ভালো হয়।
পুকুর প্রস্তুতি
• পাড় মেরামত ও আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
• রাক্ষুসে ও ক্ষতিকর প্রাণী অপসারণ করতে হবে।
• শতাংশে ১ কেজি করে চুন প্রয়োগ করতে হবে।
• চুন প্রয়োগের ৭-৮ দিন পর শতাংশ প্রতি ৫-৭ কেজি গোবর ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম টিএসপি সার দিতে হবে।
পোনা মজুদ, খাদ্য ও সার প্রয়োগ
• শতাংশ প্রতি ১০-১৫ সে. মি. আকারের ৩০-৩২ টি র্বই জাতীয পোনা এবং ৫-৬ সে. মি. আকারের ৬০ টি মলা ও ৬০ টি পুটি
মাছ মজুদ করা যায়।
• মাছের পোনা মজুদের পরদিন থেকে পোনার দেহের ওজনের শতকরা ৫-১০ ভাগ হারে সম্পুরক খাবার হিসেবে খৈল, কুড়া, ভূষি দেয়া যেতে পারে।
• গ্রাস কার্পের জন্য কলাপাতা, বাধা কপির পাতা, নেপিয়ার বা অন্যান্য নরম ঘাস দেয়া যেতে পারে।
• মলা-পুঁটি মাছের জন্য বাড়তি খাবার দরকার নাই।
• প্রাকৃতিক খাবার জন্মানোর জন্য পোনা ছাড়ার ১০ দিন পর শতাংশ প্রতি ৪-৬ কেজি গোবর, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।
মাছ আহরণ
• পোনা মজুদের ২ মাস পর হতে ১৫ দিন পর পর বেড় জাল দিয়ে মলা-পুঁটি মাছ আংশিক আহরণ করতে হবে।
• ৭৫০-৮০০ গ্রাম থেকে বেশী ওজনের কাতল ও সিলভার কার্প মাছ আহরণ করে সমসংখ্যক ১০-১২ সে. মি. আকারের পোনা পুনরায় মজুদ করতে হবে।
• বছর শেষে চূড়ান্ত আহরণ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: