Site icon Fisheries Gurukul [ মৎস্য গুরুকুল ] GOLN

মাটির রাসায়নিক উপাদান | অধ্যায়-২ | শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২

মাটির রাসায়নিক উপাদান | অধ্যায়-২ | শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – মাটির রাসায়নিক উপাদান । যা ” গলদা চিংড়ি চাষ ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত ।

শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

মাটির রাসায়নিক উপাদান

 

 

মাটির রাসায়নিক উপাদান

মাছ বা চিংড়ি চাষের জন্য বন্ধ জলাশয়ের পানির উপযোগিতা মাটির পিএইচ, ফসফরাস, নাইট্রোজেন, জৈব পদার্থ ইত্যাদি উপাদানের মাত্রার ওপর নির্ভরশীল। মাছ চাষের জন্য মাটির উপরাক্তে উপাদানগুলোর মাত্রা নিম্নরূপ হলে ভালো হয়ঃ

পিএইচ -৬.৫-৯

ফসফরাস-১০-১৫ মিগ্রা/১০০ গ্রাম

নাইট্রোজেন -৮-১০ মিগ্রা/১০০ গ্রাম

জৈব পদার্থ -১-২% জৈব কার্বন

পানির গুণাগুণ

পুকুরের উর্বরতা বা জৈব উৎপাদন নির্ভয় কয়ে পুকুয়েয় পানিয় ভৌত-রাসায়নিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় ওপর। পুকুরের ভৌত-রাসায়নিক অবস্থাকে প্রভাবান্বিত করে এমন উপাদানগুলো নিম্নরূপঃ

ভৌত গুণাগুণ

পানির গভীরতা: উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলে গভীরতার কারণে সূর্যালোকের প্রভাবে পানিতে তিনটি স্তরের সৃষ্টি হয়। যথা-ইপিলিমনিয়ন (উপরের স্তর), থার্মোক্লাইন (মধ্য স্তর) হাইপোলিমনিয়ন (নিচের স্তর)। বাংলাদেশের অধিকাংশ পুকুরগুলোর গভীরতা ২-৩ মিটারের মধ্যে।

ফলে হাইপোলিমনিয়ন স্তরটি দেখা যায় না। উপরের স্তরই মাছ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক খাদ্য উৎপাদনে সহায়ক। নার্সারি পুকুরের গভীরতা বেশি হলে চিংড়ির পিএল পানির চাপ সহ্য করতে পারে না। পিএল অগভীর পানিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। নার্সারি পুকুরের গভীরতা ৭৫-৯০ সেমি (২.৫-৩.০ ফুট) হলে ভালো হয়।

তাপমাত্রা: গলদা চিংড়ির তাপমাত্রা সহনশীলতার একটি মাত্রা রয়েছে। পানির তাপমাত্রার সাথে পুকুরের প্রাথমিক উৎপাদন এবং গলদা চিংড়ির দৈহিক বৃদ্ধি সরাসরি সম্পর্কিত। গলদা চিংড়ির পানা উৎপাদনে সহায়ক তাপমাত্রা ২৫-৩১ সে.।

সূর্যালোক: সূর্যই সকল শক্তির উৎস। সূর্যালোকের প্রাপ্ততা ও প্রখরতার ওপর সালোকসংশ্লেষণ নির্ভরশীল যা থেকে পুকুরের প্রাথমিক উৎপাদন ও অক্সিজেন সৃষ্টি হয়। গলদা নার্সারি পুকুরে দৈনিক কমপক্ষে ৬-৮ ঘন্টা সূর্যালোকে পড়া আবশ্যক। রাসায়নিক অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া, নাইট্রাইট, কার্বন ডাই-অক্সাইড, ক্ষারত্ব ও খরতা, পিএইচ, লবণাক্ততা ইত্যাদি।

অক্সিজেন: পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের উৎস প্রধানত দুটিঃ

– পানি সংলগ্ন বাতাস

– সালোকসংশ্লেষণ

তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, অন্যান্য গ্যাসের আংশিক চাপ বাড়ার সাথে সাথে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। বায়ুচাপ বাড়লে অক্সিজেনের দ্রবণীয়তা বাড়ে। নার্সারি পুকুরে অক্সিজেনের মাত্রা ৫-৭ পিপিএম হলে ভালো হয়।

অ্যামোনিয়া: মাছ ও চিংড়ির বর্জ্য, অভুক্ত খাদ্য, বিভিন্ন দ্রব্যের পচন ইত্যাদির ফলে অ্যামানিয়ার সৃষ্টি হয়। যার আধিক্য গলদা নার্সারির জন্য ক্ষতিকর। আয়নিত ও অআয়নিত দুভাবেই অ্যামোনিয়া পানিতে থাকতে পারে। তবে প্রথমটি কম ক্ষতিকর। অআয়নিত অ্যামোনিয়ার মাত্রা ০.০২৫ মিগ্রা/লিটারের বেশি হওয়া উচিত নয়।

নাইট্রাইট: এটি ব্যাকটেরিয়া দহনের ফলে অ্যামানিয়া ও নাইট্রাইটের মধ্যবর্তী অবস্থা। পুকুরের তলার পচা পদার্থ বেড়ে গেলে অক্সিজেনহীন অবস্থায় ব্যাকটেরিয়া নাইট্রেটকে নাইট্রাইটে পরিণত করে। নাইট্রাইটের খুব স্বল্পমাত্রাও গলদা চিংড়ির জন্য অত্যন্ত বিষাক্ত। পানিতে নাইট্রাইটের মাত্রা ০.১ মিগ্রা/লিটারের কম থাকা উচিত।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

কার্ষন ডাই-অক্সাইড: পানিতে কার্বন ডাই-অক্সাইডের উৎস প্রধানত জৈব পদার্থের পচন ও জলজ জীবের শ্বাস প্রশ্বাস। মুক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড পানির পিএইচ-এর মান ৪.৫ পর্যন্ত নামাতে পারে। ১২ মিগ্রা/লি যুক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড গলদা চিংড়ির জন্য ক্ষতিকর নয়। কার্বন ডাই-অক্সাইডের বিষাক্ততা অক্সিজেনের মাত্রার ওপর নির্ভরশীল। সালোকসংশ্লেষণে কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রয়োজনীয় উপাদান। পানিতে এ প্যাস বেশি থাকলে জলজ প্রাণীর অক্সিজেন গ্রহণ করার ক্ষমতা কমে যায়।

ক্ষারত্ব ও খরতা: পানিতে উপস্থিত কার্বনেট, বাই-কার্বনেটের ঘনত্বই ক্ষারত্ব এবং ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এর যৌথ ঘনত্বই হচ্ছে খরতা। গলদা চিংড়ি চাষের জন্য হালকা খয় পানি সবচেয়ে ভালো। পানির ক্ষারত্ব ও খরতার মান ২০ মিগ্রা/লি এর কম বা খুব বেশি বেড়ে গেলে পানির বাফারিং ক্ষমতা কমে যার, প্রাৎমিক উৎপাদন কমে যায়, সারের কার্যকারিতা কমে, গলদা চিংড়ি সহজেই অম্লতা ও অন্যান্য বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। ক্ষারত্ব ও খরতার মান ৪০-২০০ মিগ্রা/লি হওয়া উচিত।

পিএইচঃ পিএইচ হচ্ছে কোনো বস্তুর অম্লত্ব বা ক্ষারত্বের পরিমাপক। পানির পিএইচ বলতে পানির অম্লত্ব বা কারত্বের অবস্থা বুঝায় যা ১ হতে ১৪ পর্যন্ত বিস্তৃত। ৭ দ্বারা নিরপেক্ষ মান নির্দেশিত হয়। পিএইচ এর মান ৭ এর কম হলে অম্লত্ব এবং ৭ এর বেশি হলে ক্ষারত্ব নির্দেশ করে। গলদা চিংড়ির নার্সারির ক্ষেত্রে পিএইচ এর মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গলদা চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে পানির পিএইচ-এর মান ৭.৫-৮.৫ এর মধ্যে থাকা সবচেয়ে ভালো।

লবণাক্তা: গলদা চিংড়ি স্বাদু পানির চিংড়ি তবে স্বল্প লবণাক্ততায় গলদা চিংড়ির চাষ হয়। চাষের ক্ষেত্রে পানির লবণাক্ততা ০-৪ পিপিটি হওয়া উচিত।

 

 

দুর্গবযুক্ত কালো কাদা অপসারণ

চিংড়ি চাষের জন্য পুকুর/ঘের প্রস্তুতিকালে তলার দুর্গন্ধযুক্ত কালো কাদা অপসারণের প্রয়োজন দেখা দেয়। কারণ পুকুর/ষেরের কালো কাদা অপসারণ করা না হলে চাষকালীন সময়ে নিম্নবর্ণিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version