Site icon Fisheries Gurukul [ মৎস্য গুরুকুল ] GOLN

মাছের রেণুপোনা ব্যবস্থাপনা

মাছের রেণু ব্যবস্থাপনা

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-মাছের রেণুপোনা ব্যবস্থাপনা

মাছের রেণুপোনা ব্যবস্থাপনা

মাছ চাষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন আকারের পোনার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা অতীব জরুরি। বিভিন্ন আকারের পোনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকার কারণে পোনা ব্যবসারী এবং পুকুর মালিক উত্তরেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন । নিচে বিভিন্ন আকারের পোনার বেড়ে ওঠার পদ্ধতি এবং বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো ।

১. রুইজাতীয় মাছ

 

 

পোনা

ক. মাছের শুক্রাণু ও ডিম্বাণু মিলিত হয়ে ভ্রূণ তৈরির পর যখন তা নাড়াচাড়া শুরু করে (ডিমের ভিতরে) সে

ডিম নিষিক্ত হয়ে ভ্রূণ তৈরির পর ডিম্ব-থলি দুই থেকে তিন দিন পরে মিলিয়ে যায়।

খ.এই ডিম্বথলি ধাপকে সাধারণত ডিম পোনা বলা হয় ।

মিলিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত অবস্থাকে ডিম পোনা বলা হয়ে থাকে ।

গ. ডিম্ব-খলি থাকা অবস্থায় ডিম পোনা পানি হতে খাবার গ্রহণ করে না ।

ঘ. ডিম পোনা মাছের আকার ও প্রজাতির ওপর নির্ভর করে পাঁচ থেকে ছয় মিলিমিটার হয়ে থাকে।

 

 

রেণু পোনা

ক. ডিমপোনার পেটের থলি মিলিয়ে যাবার পরের স্তরই হলে রেণুপোনা । রেণুপোনার দেহ লম্বাটে ও চিকন হয়ে থাকে ।
খ. রেণুপোনাকে সাধারণত সিদ্ধ ডিমের কুসুম খাওয়ানো হয় ।
গ. মাছের আকার ও প্রজাতির ওপর নির্ভর করে রেণুপোনার আকার ছয় থেকে দশ মিলিমিটার হয়ে থাকে।

 

ধানী পোনা

ক. সাধারণত ধানের আকারের পেনাকে ধানীপোনা বলা হয় । ধানী পোনাকে আবার ২ ভাগে ভাগ করা হয়ে
থাকে, যথা-

১) জিরা ধানী— জিরা ধানী অপেক্ষাকৃত ছোট । এই আকার হতে ১০ থেকে ১২ দিন লাগে ।

২) ধানী— ধানী পোনা জিরা ধানী হতে একটু বড় যা হতে ১২ থেকে ১৫ দিন লাগে । ৩) ধানী পোনার মধ্যে মাছের চেহারা পুরাপুরি প্রকাশ পায়। ধানী পোনার প্রধান খাদ্য হলো প্রাণিকণা বা জুপ্লাঙ্কটন। ৪) ধানী পোনার দৈর্ঘ্য এক থেকে দুই সে.মি.। রেণুপোনা হতে ধানী পোনার অবস্থায় পৌঁছতে ১২ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে । এ অবস্থা থেকে নার্সারির দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয় । এখানে পোনা কাটাই করা হয় ।

চারা পোনা বা আঙ্গুলে গোনা

ক. চারা পোনা আকারে মানুষের হাতের আংগুলের সমান বলেই একে আবার আঙ্গুলে পোনাও বলা হয়ে থাকে । মাছ চাষের জন্য চারা পোনা বাং আঙ্গুলে পোনা পুকুরে ছাড়তে হয় । সাধারণত ৫ সে.মি. হতে ১৫ সে.মি. দীর্ঘ পোনাকে চারা পোনা বলা হয় ।

খ. চারা পোনাকে কৃত্রিম খাবার সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এ ছাড়াও চারা পোনার পুকুরে সার প্রয়োগ করা হয় । গ. চারা পোনার দৈর্ঘ্য ১০-১৫ সে.মি.। এ অবস্থায় সাধারণত নার্সারি থেকে পুকুরে ছাড়তে ।

চাপের পোনা

উপরোক্ত বিভিন্ন প্রকার পোনা ছাড়া আরো এক ধরনের পোনা আছে যাকে বলা হয় চাপের পোনা (over wintering fingerlimg)। পূর্ববর্তী বছরের পোনাকে বিক্রি না করে একটি পুকুরে অধিক ঘনত্বে মজুদ করে পরবর্তী বছরে যেসব পোনাকে বিক্রি করা হয় তাকেই চাপের পোনা বলা হয় । চাপের পোনা মজুদ পুকুরে দ্রুত বাড়ে সেজন্য ইদানীং চাপের পোনার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে । নার্সারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে

পুকুর প্রস্তুতির ধাপসমূহ :

ক) কার্প নার্সারি পুকুরের বৈশিষ্ট্য : ক. পুকুরের আয়তন ১০-২৫ শতাংশ ।

খ. পানির গভীরতা ১-১.৫ মি. ।

গ. আয়তকার পুকুর, চাল ১৪২ অথবা ১:১.৫ ।

ঘ. মাটির গঠন দোআঁশ অথবা এটেল দোআঁশ ।

ঙ. তলায় ১০-১৫ সে.মি. বেশি পচা কাদা থাকবে না ।

চ. বাড়ির কাছাকাছি হলে ব্যবস্থাপনার জন্য সুবিধা হয় ।

ছ. পুকুরের সব পাড় উঁচু, মজবুত ও বন্যামুক্ত হতে হবে ।

জ. পুকুরে প্রচুর সূর্যের আলো (প্রায় সারাদিন) এবং বাতাস লাগার ব্যবস্থা থাকবে ।

ঝ. শীত বা গ্রীষ্মকালে পুকুর শুকিয়ে গেলেও অসুবিধা নেই ।

ঞ. মৌসুমি পুকুর নার্সারি ব্যবস্থাপনার জন্য ভালো ।

ট. পানি নিষ্কাশন ও সরবরাহ ব্যবস্থা থাকলে ভালো ।

খ) পাড় মেরামত ও তলদেশের কাদা তোলা পুকুরে অতিরিক্ত কাদা নিম্নলিখিত সমস্যা সৃষ্টি করে :

i) পুকুরের তলদেশে ক্ষতিকারক গ্যাস সৃষ্টি হয় ।

ii) পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন হ্রাস পায় ।

iii) পানির দুর্গন্ধ হয়ে যেতে পারে ।

iv) স্ত্রী মাছের ডিম্ব কোষ বৃদ্ধিতে ক্ষতি সাধন ।

v) পুরুষ মাছের শুক্রাণু সৃষ্টিতে ক্ষতি সাধন ।

vi) মাছ আহরণে সমস্যা হয় ।

 

গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

পুকুরে পাড় ভাঙা থাকলে নিম্নলিখিত সমস্যা সৃষ্টি করে :

i) পাড় ভাঙা থাকলে, মাছ বের হয়ে যেতে পারে ।

iii) বাহির থেকে রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ পুকুরে ঢুকতে পারে ।

ii) বিষাক্ত পানি ঢুকে মাছ মারা যেতে পারে ।

iv) মৎস্যভুক প্রাণী সহজে ঢুকতে পারে ইত্যাদি ।

জলজ আগাছা দুর করা :

জলজ আগাছা নিম্নোক্ত সমস্যা সৃষ্টি করে :

i) জলজ আগাছা পুকুরে থাকলে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে না ফলে প্রাকৃতিক খাদ্য কম তৈরি হয় ।

ii) ক্ষতিকর প্রাণী যেমন : সাপ, ব্যাঙ, গুইসাপ ইত্যাদি আশ্রয় নিতে পারে ।

iii) জলজ আগাছা পুকুরের পুষ্টিকর দ্রব্য শোষণ করে নেয় ।

iv) জলজ আগাছা ব্রুড মাছের চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে । তাই সব ধরনের জলজ আগাছা দূর করতে হবে ।

ঘ) রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ দূর করা : রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ পুকুরে থাকলে নিম্নলিখিত সমস্যার সৃষ্টি হয় ।

i) চাষকৃত মাছের খাদ্য খেয়ে ফেলে ।
ii) চাষকৃত মাছের জায়গা দখল করে নেয় ।
iii) প্রজনন করে মাছের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে ফেলে ।
iv) মাছকে আহত করতে পারে ।

রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ তিনভাবে দমন করা যায়:

i) বার বার জাল টেনে

ii) রোটেনন প্রয়োগ করে ।
প্রতি শতাংশে প্রতি ফুট পানির জন্য ৩০-৩৫ গ্রাম রোটেনন প্রয়োগ করতে হয় ।

iii) পুকুর শুকিয়ে

ইহা রাক্ষুসে অবাঞ্ছিত মাছ দূর করার সর্বাপেক্ষা উত্তম পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে পুকুর রোগ জীবাণুমুক্ত হয়, উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। এই কাজ ফাল্গুন-চৈত্র মাসে করলে খরচ কম হয়। নার্সারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে রাক্ষুসে ও
অবাঞ্ছিত মাছ দূর করার জন্য অবশ্যই পুকুর শুকাতে হবে ।

ঙ) চুন প্রয়োগ :

চুন প্রয়োগে নিম্নলিখিত উপকার হয় :

i) চুন মাটিতে ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করে ।

ii) মাটি ও পানির অম্লত্ব দূর করে ।

iii) জৈব পদার্থের পচন ত্বরান্বিত করে ।

iv) মাটি হতে ক্ষতিকর গ্যাস দূর করে দেয় ।

v) মাটির পিএইচ ওঠা-নামাকে নিয়ন্ত্রণ করে ।

vi) রোগ-জীবাণু ধ্বংস করে ।

পুকুর শুকানোর পরপরই প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন আগের দিন ভিজিয়ে রেখে পরের দিন রৌদ্রোজ্জ্বল সময়ে পাড়সহ সমস্ত পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে । চুন প্রয়োগের পরপরই পুকুরে পানি সরবরাহ করতে হবে ।

চ) সার প্রয়োগে

সার প্রয়োগের মাত্রা:

 

চুন প্রয়োগের ৩-৪ দিন পর রাসায়নিক সার ও গোবর উপরোক্ত মাত্রা অনুযায়ী প্রয়োগ করতে হবে । এর ৪- ৫ দিন পর হররা বা জাল টেনে তলদেশের মাটি নড়া-চড়া করে ভিজানো খৈল পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে ।

ছ) প্রাকৃতিক খাদ্য পরীক্ষা :

সার প্রয়োগের ৫-৭ দিন পর পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হয় । এক্ষেত্রে পানির রং হালকা সবুজ অথবা বাদামি হতে পারে । পানিতে ফাইটোপ্লাংক্টন বেশি থাকলে পানির রং হালকা সবুজ হয় এবং পানিতে জুপ্লাংক্টন বেশি থাকলে পানির রং বাদামি হয় । তিনভাবে পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্য
পরীক্ষা করা যায় ।

(i) গামছা-গ্লাস পরীক্ষা সাহায্যে
(ii) সেকিডিস্কের সাহায্যে
(ii) হাতের সাহায্যে

জ) জলজ পোকামাকড় দমন :

পুকুরে সার প্রয়োগের পর পানিতে প্রাকৃতিক খাবার বৃদ্ধি সাথে সাথে রেণু পোনার ক্ষতি করে এমন অনেক ধরনের জলজ পোকা-মাকড় সৃষ্টি হয়। যেমন : হাঁস পোকা ড্রাগনফ্লাই, ওয়াটার স্টোক, আংগুলী পোকা, গোবর পোকা, বড় আকৃতির জুপ্লাংক্টন যেমন : ক্লাডোসিরা, কপিপোড ইত্যাদি । নার্সারি পুকুরে এ সমস্ত পোকামাকড় থাকলে এরা

ক. রেণুর খাদ্য উপযোগী কীট (জুপ্লাংক্টন) নষ্ট করে ।

খ. রেণু পোনা ধরে খায় বা পেট কেটে মেরে ফেলে ।

দমন পদ্ধতি :

ক. ডিপটারেক্স : ৬-১২ গ্রাম/শতাংশে/ফুট পানির গভীরতা ।
খ. সুমিথিয়ান : ২-৩ গ্রাম/শতাংশে/ফুট পানির গভীরতা ।

জ) পানির বিষাক্ততা পরীক্ষা

পুকুরে রোটেননের সাহায্যে রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ দূর করা হলে এর বিষাক্ততা সাধারণত ৭ দিন পর্যন্ত থাকে। এর পরও সাবধানতা অবলম্বের জন্য মাছ ছাড়ার আগে কিছু পরিমাণ মাছ ঐ পানিতে ২৪ ঘণ্টা রেখে পানির বিষাক্ততা পরীক্ষা করা যায় ।

ঝ) হররা বা জাল টানা :

পুকুরের তলদেশের বিষাক্ত বা ক্ষতিকর গ্যাস দূর করার জন্য হররা বা জাল
টানতে হয় ।

রেণুপোনার খাদ্য ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা :

পোনা মাছের সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার জন্য এবং দৈহিক বৃদ্ধি অর্থাৎ অধিক উৎপাদনের জন্য পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের সাথে সম্পূরক খাদ্যের প্রয়োজন হয় । সম্পূরক খাদ্যের প্রয়োগমাত্রা নির্ভর করে নিম্নলিখিত বিষয়ের উপরে

১ । মাছের চাষ পদ্ধতি
২। খাদ্যের অবস্থা ও পুষ্টিমান
৩। পানির তাপমাত্রা এবং
৪। চাষকৃত মাছের খাদ্যাভ্যাস ।

সাধারণভাবে মাছের আকৃতিগত বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্যের পরিমাণগত প্রয়োজন বৃদ্ধি পায় । কিন্তু দৈহিক ওজন বা আকৃতিগত বৃদ্ধির সাথে সাথে দেহের প্রতি একক ওজনের জন্য খাদ্য চাহিদা হ্রাস পায় । উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১ কেজি ওজনের ১টি মাছের দৈহিক খাদ্য চাহিদার প্রতিটি ১০০ গ্রাম ওজনের ১০টি মাছের দৈনিক খাদ্য চাহিদা মোট পরিমাণের চেয়ে অনেক কম । যদিও ১০টি মাছের মোট ওজন ১ কেজি ।

বিভিন্ন বয়সে মাছের খাদ্য চাহিদা

 

১। জীবন্ত খাদ্য : সাধারণত ক্যাটফিশ জাতীয় মাছ যেমন থাই পাঙ্গাশ, মাগুর, গুলসা, পাবদা, শিং, মাগুর প্রভৃতি মাছের রেণুকে জীবন্ত খাদ্য যেমন- জুপ্লাঙ্কটন, টিউবিফেক্স নামক লাল কেঁচো, আর্টিমিয়ার নপি, ইত্যাদি দেওয়া হয় । হ্যাচিং-এর ১ দিন পর থেকে রেণুকে খুব হালকা আমিষ জাতীয় খাদ্য যেমন তাজা মাছ সিদ্ধ করে পেস্ট করার পর নাইলন কাপড়ে ছেঁকে দুধের মতো তরল করে ৩ ঘণ্টা পর পর রেণুকে খেতে দিতে হবে। ২-৩ দিন পর টিউবিফেক্স খাওয়াতে হয়।

টিউবিফেক্স হলো লাল কেঁচো যা অগভীর ড্রেনে, কলের পাড়ে যেখানে হালকা স্রোত থাকে, এমন স্থানে দেখা যায়। রেণুকে টিউবিফেক্স আন্ত দিলে খেতে পারে না। কারণ তখনও এদের মুখের আকার খুব ছোট থাকে। তাই টিউবিফেক্সকে হামানদিস্তায় পিষে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে রেণুকে খাওয়াতে হয় ।

টিউবিফেক্সের পাশাপাশি রেণুকে আর্টিমিয়া খাওয়াতে হবে। আর্টিমিয়া হচ্ছে লবণাক্ত পানিতে জমানো এক ধরনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চিংড়িজাতীয় প্রাণীর বাচ্চা। শাপলা ফুলের দানার মতো দেখতে আর্টিমিয়ার ডিম কোটাজাত অবস্থায় বাজারে পাওয়া যায়। এসব ডিমকে লবণাক্ত পানিতে কয়েক ঘণ্টা রেখে বায়ুপ্রবাহ দিলে ডিম ফুটে লাল রঙের বাচ্চা বের হয় ।একে নগ্নি বলে । এটা রেণু পোনার উত্তম খাদ্য ।

 

২। অজীবন্ত খাদ্য : সাধারণত কার্পজাতীয় মাছ যেমন, রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প ইত্যাদি মাছের রেণুকে অজীবন্ত খাদ্য দেওয়া হয়। অজীবন্ত খাদ্য হিসেবে যেগুলো ব্যবহার করা হয়, তার মধ্যে মুরগির ডিম, আটা, ময়দা, খৈল, চালের কুঁড়া গমের ভুসি কলিজা সিদ্ধ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ।

৮-১০ দিন পর পোনাকে প্রস্তুতকৃত আঁতুর পুকুরে ছাড়তে হবে। পুকুরে পোনা মজুত করার পর মোট ওজনের ৮-১০% হারে সম্পূরক খাদ্য পানিতে গুলে পাতলা করে সারা পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হয় । দিনে ৩ বার ছিটিয়ে দিতে হয় । সম্পূরক খাদ্য হিসেবে ৫০% ফিশমিল ও ৫০% চালের কুঁড়া দেওয়া যায় । আবার ৩০% রক্তের গুঁড়া ৩৫% খৈল ও ৩৫% কুঁড়া সহযোগে সম্পূরক খাদ্য তৈরি করা যায় ।

সম্পূরক খাদ্যের পরিমাণ :

প্রতি কেজি রেণু পোনার জন্য

পোনার বয়স প্রতি কেজি রেণু পোনার জন্য সম্পূরক খাবারের পরিমাণ

১ম-২য় দিন : ৮ টা অধিক সিদ্ধ মুরগির ডিমের কুসুম ও ২ কেজি সিদ্ধ ময়দার দ্রবণ।

 

৩য়-৫ম দিন : ১.৫ কেজি সিদ্ধ ময়দা ও ১.৫ কেজি এক রাত ভিজিয়ে রাখা সরিষার খৈলের দ্রবণ ।

৬ষ্ঠ-১০ম দিন : ৪ কেজি এক রাত ভিজিয়ে রাখা সরিষার খৈলের দ্রবণ ।

১১তম-১৫তম দিন : ৫ কেজি এক রাত ভিজিয়ে রাখা সরিষার খৈলের দ্রবণ ।

১৬তম-২৩তম দিন : ৬ কেজি এক রাত ভিজিয়ে রাখা সরিষার খৈলের দ্রবণ ।

২৪তম-৩০তম দিন : ৭ কেজি এক রাত ভিজিয়ে রাখা সরিষার খৈলের দ্রবণ ।

৩০ দিনে পোনা ১-২ ইঞ্চি সাইজের হবে ।

এক মাস পর পোনার ঘনত্ব কমিয়ে প্রতি শতাংশে ১০০০-১২০০-তে নামিয়ে এনে দ্বিতীয় ধাপে লালন-পালন

করা যায়, সে ক্ষেত্রে সম্পূরক খাবার নিম্নহারে দিতে হবে ।

পোনার বয়স ১-২ ইঞ্চ সাইজের ১০০০০০ পোনার জন্য প্রতিদিনের সম্পূরক খাবারের পরিমাণ

৩১-৪০ দিন ৮-১২ কেজি চালের কুঁড়া ও সরিষার খৈল (১:১ অনুপাতে)

৪১-৫০ দিন ১২-২৪ কেজি চালের কুঁড়া ও সরিষার খৈল (১:১ অনুপাতে)

৫১-৬০ দিন ১৬ কেজি চালের কুঁড়া ও সরিষার খৈল (১:১ অনুপাতে)

৬১-৭০ দিন ১৮ কেজি চালের কুঁড়া ও সরিষার খৈল (১:১ অনুপাতে)

৭১-৮০ দিন ২০ কেজি চালের কুঁড়া ও সরিষার খৈল (১:১ অনুপাতে) ৮০ দিন পর পোনা ৩-৫ ইঞ্চি সাইজের হবে।

ডিম সিদ্ধ করে কুসুমটা আলাদা করে পানিতে কচলে ভালো করে গুলাতে হবে । ময়দা গুলানো পানি ও কুসুম গুলানো পানিকে সূক্ষ্ম কাপড়ে ছেঁকে নিতে হবে। হেঁকে নেয়া তরল রেণু পোনার চৌবাচ্চায় দিলে ৩-৪ বার ছিটিয়ে দিতে হবে সরিষার খৈল অবশ্যই ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে প্রয়োগ করতে হবে।

পরিমাণমতো খাদ্য দিনে ৩-৪ বার প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায় ।
অধিক উৎপাদনের জন্য এর সাথে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য যেমন- গবাদি পশুর রক্ত বা ফিশমিল দেওয়া যেতে পারে । গ্রাস কার্পের পোনার জন্য নিয়মিত ক্ষুদিপানা প্রয়োগ করতে হয়।

আরও দেখুন:

Exit mobile version