Site icon Fisheries Gurukul [ মৎস্য গুরুকুল ] GOLN

মজুদকালীন ব্যবস্থাপনা | অধ্যায়-৮ | শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২

মজুদকালীন ব্যবস্থাপনা | অধ্যায়-৮ | শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – মজুদকালীন ব্যবস্থাপনা । যা ” সমন্বিত চিংড়ি চাষ ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত ।

শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

মজুদকালীন ব্যবস্থাপনা

 

 

মজুদকালীন ব্যবস্থাপনা

পোনা মজুদ ব্যবস্থাপনা মুলত ৬টি পর্যায়ে বিভক্ত। এই কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারলে পোনার মৃত্যুহার বহুলাংশে কমানো সম্ভব। এর ফলে সন্তোষজনক উৎপাদন নিশ্চিত হয়। পোনা মজুদ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কাজগুলো নিচে বর্ণনা করা হল:

(ক) প্রজাতি ও পরিমাণ নির্ধারণ

নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর ভিত্তিতে পোনার মজুন ঘনত্ব ও প্রজাতি নির্ধারণ করা হয়:

পোনার প্রাপ্যতা

মিশ্র চাষে ৪-৬ ধরনের কার্পের পোনার প্রয়োজন হয়। এসব শোনা একই এলাকায় একই সময়ে পাওয়া দাও যেতে পারে। এজন্য এলাকাগত প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে কার্পের পোনার জাত নির্বাচন করা উচিত। একইভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে এবং যেখানে গলদা চিংড়ির হ্যাচারি আছে সেখানে গলদার পোনা পাওয়া যায় অর্থাৎ পোনার প্রান্তির ওপর ভিত্তি করেই মিশ্র চাষের জন্য প্রজাতি নির্বাচন করতে হবে।

পুকুরের উৎপাদনশীলতা

পুকুরের উর্বরা শক্তি বা উৎপাদনশীলতা মাটির গুণাগুণের ওপর নির্ভরশীল অর্থাৎ পুকুরের পানির গুণাগুণ সম্পূর্ণরূপে মাটির গুণাগুণের ওপর নির্ভর করে। দোআঁশ মাটির উৎপাদনশীলতা বেলে, এঁটেল ও লাল মাটির চেয়ে অনেক বেশি। ফলে দোআঁশ মাটির পুকুরে অন্যান্য মাটির পুকুরের তুলনায় বেশি পোনা মজুদ করা যায়। সুতরাং মাটি ও পানির গুণাগুণ ভেদে পুকুরে পোনা মজুদের ঘনত্ব কম বেশি হতে পারে। এজন্য পুকুর তৈরির সময় পুকুরের মাটির প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা একান্তভাবে দরকার।

কান্তিক্ষত উৎপাদন আকার

বাংলাদেশে সাধারণত গলদা ও কার্প মিশ্র চাষ ১-১.৫ মিটার গভীরতা বিশিষ্ট পুকুরে করা হয়। ফলে শুষ্ক মৌসুমে এসব মিশ্র চাষের অধিকাংশ পুকুরে পানি অনেক কমে যায়। আবার অনেক পুকুর একেবারেই শুকিয়ে যায়। এই সমস্যা বিবেচনা করলে দেখা যায় মিশ্র চাষের জন্য প্রকৃতপক্ষে সময় পাওয়া যায় ৫-৮ মাস। এই অল্প সময়ে বড় আকারের পোনা মজুদ করতে হবে। এসব পুকুরে বেশি ঘনত্বে ছোট আকারের পোনা মজুদ করলে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উৎপাদন লাভ করা সম্ভব হবে না।

ব্যবস্থাপনার ধরন

চাষ ব্যবস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে পোনার মজুদ ঘনত্ব নির্ধারণ করা হয়। পুকুরে শুধু সার প্রয়োগ করা হলে সেখানে মজুদ ঘনত্ব অপেক্ষাকৃত কম হবে। আবার যেসব পুকুরে সার ও খাদ্য দুই-ই ব্যবহার করা হবে সেসব পুকুরে পোনার মজুদ ঘনত্ব বেশি হবে।

শোনার আকার ও ঘনত্ব

পুকুরে ১০-১৫ সেমি আকারে কার্প জাতীয় শোনা এবং ৫ সেমি আকারের গলদা চিংড়ির পোনা মজুদ করা হলে কম সময়ে বেশি উৎপাদন পাওয়া যায়। পুকুরে সাধারণত জুলাই-আগস্ট মাসে পোনা মজুদ করা হয়। এ সময় সচরাচর বড় আকারের পোনা পাওয়া যায় না।

পুকুরে ৭-১০ সেমি আকারের কার্পের পোনা এবং ৩-৪ সেমি আকারের গলদা চিংড়ির পোনা মজুদ করা হলে শতাংশ প্রতি ২২-২৪টি কার্প জাতীয় পোনা এবং ৩২-৩৫টি গলদা চিংড়ির পোনা মজুদ করা যায়। বড় আকারের পোনা মজুদ করলে মজুদ ঘনত্ব ছোট আকারের ঘনত্বের চেয়ে ২০-২৫% কম হবে।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

(খ) পোনা শনাক্তকরণ

কার্পের পোনা আমাদের কাছে অতি পরিচিত। এদের শনাক্তকরণে তেমন কোনো সমস্যা নেই। গলদা চিংড়ির গোনা সকলের কাছে পরিচিত নয়। চাষযাগো নতুন প্রজাতি হিসেবে গলদা চিংড়ির গোনা শনাক্তকরণে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই গলদা চিংড়ির পোনার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা দরকার। গলদা চিংড়ির পোনার বেশিষ্ট্য নিচে বর্ণনা করা হলোঃ

(গ) ভালো ও খারাপ পোনা শনাক্তকরণ

উৎপাদন নিশ্চিত করার প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে সুস্থ সবল পোনা পুকুরে মজুদ করা। এজন্য ভালো ও খারাপ শোনার শনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্যগুলো জানা অত্যন্ত প্রয়োজন।

(ঘ) পোনা শোধন

রোগজীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য পুকুরে মজুদ করার আগে পোনাগুলো জীবাণুমুক্ত করা দরকার। একটি পাত্রের মধ্যে ১০ লিটার পানিতে ১ চা চামচ পরিমাণ পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট বা ২০০ গ্রাম লবণ মিশিয়ে দ্রবণ প্রস্তুত করতে হবে।

প্যাকিং করার আগে উক্ত দ্রবণে পোনাগুলোকে ১ মিনিট গোসল করাতে হবে। পোনাকে গোসল করানোর আগে পাত্রটির মধ্যে একটি ঘন জাল রেখে তার ওপর পোনা ছাড়তে হয়। পোনা পরিবহনের পরেও এ কাজটি করা যেতে পারে। উক্ত দ্রবণে প্রতিবার ৩০০-৫০০ টি করে পোনা প্রায় ৫ বার গোসল করানো যায়।

 

 

(ঙ) পোনা ছাড়ার সময়

মৃদু ঠান্ডা আবহাওয়ায় অর্থাৎ সকাল বা বিকেল বেলায় পুকুরে পোনা মজুদ করা ভালো। রৌদ্রোজ্জ্বল দুপুরে, মেঘলা দিনে বা ভ্যাপসা আবহাওয়ায় পোনা ছাড়া উচিত নয়। চিংড়ির পোনা সাধারণত সন্ধ্যার পর ছাড়া সবচেয়ে নিরাপদ।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version