আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – চিংড়ি বিপণন প্রক্রিয়া উন্নয়নের সম্ভাব্য পথ । যা ” বাগদা চিংড়ি আহরণ ও বাজারজাতকরণ ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত ।
শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।
চিংড়ি বিপণন প্রক্রিয়া উন্নয়নের সম্ভাব্য পথ
চিংড়ি বিপণন প্রক্রিয়া উন্নয়নের সম্ভাব্য পথ
বাংলাদেশের চিংড়ি বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যাসমূহ খুব দ্রুত সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে স্বল্প ও কল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে উপরোক্ত সমস্যাসমূহের সমাধান করা যেতে পারে। চিংড়ি বিপণন প্রক্রিয়া উন্নয়নের সম্ভাব্য কয়েকটি সুপারিশ নিচে উল্লেখ করা হলো:
ক. চিংড়ি চাষের ভূ-প্রাকৃতিক ও কারিগরি উপযোগিতার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট এলাকায় চিংড়ি চাষ এমনভাবে সমপ্রসারণ করতে হবে যাতে উক্ত এলাকায় চিংড়ি উৎপাদন ও সরবরাহের উপর ভিত্তি করে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বাজার ব্যবস্থা গড়ে উঠে। আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বাজার সৃষ্টির ক্ষেত্রে চিংড়ি বিপণন প্রক্রিয়ার সাথে সংশিষ্ট সকল পর্যায়ের লাভ-ক্ষতি বিশেষণ করে নিতে হবে।
খ. চিংড়ি পরিবহন সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে তাপানুকূল সড়ক-যান, নৌ-যান এবং রেল বগির ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে চিংড়ি উৎপাদন এলাকার সাথে সড়ক ও রেল যোগাযোগের উন্নয়নও অপরিহার্য।

গ. বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চিংড়ি সম্পদ প্রতিযোগিতামূলক করার ক্ষেত্রে মৎস্য রপ্তানি পণ্যের যথাযথ মান নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠোর আইন প্রণয়নের পাশাপাশি চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণের উপকরণ সরবরাহের নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে এবং চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।
ঘ. চিংড়ি উৎপাদন এলাকার কাছাকাছি আধুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ সংরক্ষণাগার স্থাপন করতে হবে যাতে চিংড়ির গুণগতমান নষ্ট না হয়।
ঙ. চিংড়ি সংক্ষণ কারখানা বা প্রক্রিয়াজাতকরণ প্যান্টে যাতে সর্বাধিক তাজা চিংড়ি সরবরাহ করা যায় সে ধরনের প্রযুক্তির সম্প্রসারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে অহঃরড়ীরফবহঃ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
চ. চিংড়ি উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে চিংড়ি চাষিদের মধ্যে অধিক উৎপাদনশীল প্রযুক্তি সমপ্রসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে চিংড়ি বিপণন প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সময়ে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
ছ. চিংড়ি সম্পদের সার্বিক বিপণন ব্যবস্থা উন্নয়নের ক্ষেত্রে চিংড়ি চাষ এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রক্রিয়াজাতকরণ সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি, বিপণন কাজে সংশিষ্ট ব্যবসায়ীদের ঋণ প্রদান, প্রক্রিয়াজাতকরণের উপর উপযুক্ত প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এ ছাড়াও চিংড়ি সম্পদ বিপণন প্রক্রিয়ার একটি নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে হবে, যাতে এই নীতিমালার মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের স্বার্থ অক্ষুন্ন থাকে এবং চিংড়ি সম্পদের সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থা গড়ে উঠে।
আরও দেখুনঃ