বাগদা চিংড়ির চাষ। ৩য় অধ্যায় । শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং ১

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – বাগদা চিংড়ির চাষ । যা ” বাগদা চিংড়ির চাষ ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত ।

শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

শিক্ষাক্রম উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত পাঠ্যপুস্তকসমূহ পরিবর্তনশীল চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ করে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং আত্মকর্মসংস্থানে উদ্যোগী হওয়াসহ উচ্চশিক্ষার পথ সুগম হবে। ফলে রূপকল্প-২০২১ অনুযায়ী জাতিকে বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রশিক্ষিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে আমরা উজ্জীবিত।

বাগদা চিংড়ির চাষ

 

শনাক্তকরণ । ৩য় অধ্যায় । শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং ১

 

বাংলাদেশে চিংড়ি চাষের ইতিহাস শতাব্দী প্রাচীন। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে সুন্দরবন এলাকায় সনাতন পদ্ধতিতে ১৮২৯ সাল থেকে চিংড়ি চাষ শুরু হয়। শতাব্দীকাল হতে বৃহত্তর খুলনা জেলার উপকূলীয় অঞ্চলে ধান চাষের সঙ্গে পর্যায়ক্রমিকভাবে লবণ পানির বাগদা চিংড়ি ও মিঠা পানির গলদা চিংড়ি “ভেড়ি চাষ পদ্ধতিতে চাষ করা হতো, যেন অনেকটা অযত্নে অবহেলায় বেড়ে উঠা বনের বৃক্ষরাজির মতো।

এই তেড়ী চাষ পদ্ধতিতে উপকূলীয় এলাকার লবণের মাঠ, ধানক্ষেত বা খালি জায়গায় মাছ চাষের জন্য জোয়ারের পানি প্রবেশ করানো। এই পানিতে মাছের পোনার সাথে চিংড়ির পানাও প্রবেশ করত এবং মাছসহ চিংড়ির এই পোনাকে ৩-৪ মাস খামারে আটকিয়ে রেখে বড় হলে মাছের সাথে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে চিংড়ি আহরণ করা হতো।

স্বাধীনতা উত্তরকালে বা সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে আমাদের দেশে চিংড়ি চাষের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই সময় থেকেই বাংলাদেশ চিংড়ি রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রাথমিক অবস্থায় সম্পূর্ণ সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করা হতো। সময়ের বিবর্তনে কালের চাহিদা মেটাতে চিংড়ি চাষ পদ্ধতিরও ক্রমবিকাশ ঘটে সময়ের তালে তালে।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

তাই আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে সনাতন পদ্ধতির উৎকর্ষতা সাধন করে উন্নত সনাতন পদ্ধতির প্রবর্তণ করা হয়। এই পদ্ধতিতে খামারে জোয়ারের পানির সাথে আসা চিংড়ি পোনার সাথে বাইরে থেকে সংগ্রহ করা চিংড়ির পোনা মজুদ করা শুরু হয়। জোয়ারের পানির সাথে যাতে অবাঞ্চিত চিংড়ি ও রাক্ষুসে মাছ খামারে প্রবেশ করতে না পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

এই চাষ পদ্ধতি প্রবর্তণের ফলে প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ৭৫-১০০ কেজি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৫০-৩০০ কেজিতে উন্নীত হয়। পরবর্তীতে নব্বই দশকের গাড়োর দিকে কক্সবাজার, খুলনা ও সাতক্ষীরা এলাকায় আধানিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষের ব্যাপকতা লাভ করে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে চিংড়ির উৎপাদন দাঁড়ায় হেক্টর প্রতি ৩০০০-৫০০০ কেজি।

 

শনাক্তকরণ । ৩য় অধ্যায় । শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং ১

 

প্রাপ্ত তথ্য মতে ১৯৮৫-৮৬ সালে উপকূলীয় অঞ্চলে চিংড়ি চাষের জমির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৭ হাজার হেক্টর এবং ১৯৯৭-৯৮ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে চিংড়ি চাষের জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর। ১৯৮৫ সালে চিংড়ির বার্ষিক গড় উৎপাদন ছিল হেক্টর প্রতি ৮০-৯০ কেজি। চাষ পদ্ধতির উন্নয়নের সাথে সাথে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে হেক্টর প্রতি প্রায় ৯০০ কেজি।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment