আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – প্যাকেটজাত করণ ও কৌটাজাত করণ। যা ” গলদা চিংড়ি সংরক্ষন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত ।
শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।
প্যাকেটজাত করণ ও কৌটাজাত করণ
প্যাকেটজাতকরণ
মাছ বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্যের আসল গুণাগুণ ধরে রাখা এবং কোনোরূপ কলুষিতকরণ (Contamination) ও সংক্রমণ (Infection) হতে রক্ষা করার জন্য কোনো প্রব্যাদি দ্বারা মাছ বা খাদ্য দ্রব্যকে মোড়ানো বা কৌটাজাত করার পদ্ধতিকে পাকেটজাতকরণ (Packaging) পদ্ধতি বন্য হয়। । বিভিন্ন উপায়ে পরিচর্যা বক্রিয়াজাত করার পর মাছ ও মৎস্য জাত দ্রব্যকে সংরক্ষণ, নিরাপদ ও সহজ পরিবহন এবং পরবর্তীতে কোনোরূপ কলুষিত বা সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য প্যাকেটজাতকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্যাকেটজাতকরণ হলো এমন একটি পদ্ধতি যার দ্বারা মাছ বা অন্য কোন দ্রব্যের প্রকৃত গুণাগুণ ঠিক রাখা এবং সংক্রমণ এবং কলুষিতকরণ থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের মোড়ক অবা আবৃত করা হয়। আধুনিক বিপণন ব্যবস্থায় প্যাকেটজাতকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্যাকেটজাতকরণের উদ্দেশ্যগুলো নিম্নরূপ:
(১) ধারক হিসেবে কাজ করে
(২) বিভিন্নভাবে নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষণ করে
(৩) উপযোগ সৃষ্টি করে এবং
(৪) ভোক্তার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
প্যাকেজিং দ্রব্য নির্বাচনে পণ্যের বৈশিষ্ট্যসমূহ
বিভিন্ন প্রকৃতি অনুযায়ী প্যাকেটের গাঠনিক উপাদান নির্ভরশীল। বিভিন্ন প্রকৃতির পণ্যদ্রব্যের জন্য বিভিন্ন উপাদান সংবলিত প্যাকিং সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। যেমন- তাজা মাছ রাখায় জন্য নির্মিত প্যাকেটের উপাদান এবং মৎস্য তৈল প্যাকিং এর জন্য প্যাকেটের উপাদান এক রকম হবে না। নিচে প্যাকিং সামগ্রী নির্বাচনে পণ্যের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করা হলো।
(১) গঠন (Form)। প্যাকেটযোগ্য পণ্যের গঠনের ওপর নির্ভর করে প্যাকেজিং, দ্রব্য নির্বাচন করা হয়। মাছ/চিংড়ির ব্লক, শুটকি মাছ, মাছের তৈল বা ফিসমিল এগুলো প্রতিটির প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্ন। তাই এদের প্রত্যেকের জন্য বিভিন্ন উপাদানে নির্মিত আলানা ধরনের প্যাকেট হবে।
(২) আকার ও আকৃতি (Shape and size): উৎপন্ন দ্রব্যের আকার ও আকৃতির ওপর প্যাকেট তৈরির উপাদান নির্ভর করে। পণ্য যদি বড় আকৃতির হয় তবে প্যাকেজিং দ্রব্য মজবুত উপাদানের তৈরি হয়। আবার পণ্য ছোট হলে ছোট ছোট জগ করে (in group) অপেক্ষাকৃত নরম প্যাকেজিং দ্রব্য দ্বারা প্যাকিং করা হয়। সূচালো অগ্রভাগ বিশিষ্ট পণ্য যেমন- মাছের কাঁটা, হাড়, মাছ চিংড়ি ও কাঁকড়ার পা প্রভৃতির জন্য প্যাকিং প্রব্য মজবুত ও সহজে ছিদ্র হয় না এমন উপাদানের তৈরি হতে হয়।
(৩) দৃঢ়তা বা শক্তি (Strength) পণদ্রব্যের সাথে প্যাকেটের শক্তির বিপরীত সম্পর্ক থাকে। পণ্য যদি খুব শক্ত হয় তখন খুব শক্ত প্যাকেট না হলেও চলে। যেমন- হিমায়িত মাছের ব্লককে পলিথিন দিয়ে মুড়ে দিলেই
(৪) তরল পদার্থের প্রতি সংবেদনশীলতা (Fluid Sensitivity): মাছ উচ্চ আর্দ্রতার মধ্যে রাখা দরকার তা না হলে মাছ থেকে পানি বের হয়ে মাছ শুকিয়ে যায়। আবার শুকনো দ্রব্য যেমন, ফিসমিলকে যদি অধিক আর্দ্রতায় রাখা হয় তাহলে প্রোটিন ডিন্যাচারড হতে পারে আবার পঠনেও পরিবর্তন আসতে পারে। অন্ত্রণ ফিস প্রোটিন কনসেন্ট্রেট (FPC) পানিগ্রাহী (hydroscopic) প্রকৃতির তাই পরিবেশের অর্দ্রতা যেন প্রভাব ফেলকে না পারে সেভাবে প্যাকেটজাত করা হয়।
(৫) রাসায়নিক সংবেদনশীলতা (Chemical Sensitivity): প্যাকেজিং প্রব্যের উপাদানসমূহ রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয় হওয়া দরকার। অস্ত্র ও স্কারধর্মী পণ্যের সাথে প্যাকিং দ্রব্যের বিক্রিয়া ঘটে গুণাগুণ নষ্ট হতে পারে। মাছের কৌটাজাত করণের সময় প্যাকিং মোড়ক বা ক্যানের সাথে মাছের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে পালার গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হয়ে যায়।
(৬) তাপমাত্রার সংবেদনশীলতা (Temperature Sensitivity): প্যাকিং দ্রব্য এমন উপাদান দিয়ে তৈরি হতে হবে যাতে প্রক্রিয়াজাত বা গুদামজাতের সময় তাপমাত্রার তারগুম্যের জন্য কোনো পরিবর্তন না ঘটে। হিমাচনে সব্যকে ৪০° সে. তাপমাত্রায় রাখা হয়। সতরাং হিমায়িত মায়ের মাড়ক অবশ্যই ৪০° সে. তাপমাত্রা সহনশীল হতে হবে। পক্ষান্তরে গরম করে প্রক্রিয়াজাত করা হয় এমন দ্রব্যের ক্ষেত্রে প্যাকিং দ্রব্য উচ্চতাপ সহনশীল হওয়া বাঞ্ছনীয়।
(৭) আলোক সহনশীলতা (Light Sensitivity) প্যাকেজিং দ্রব্য স্বচ্ছ হলে পণ্যের ভিতর আলো প্রবেশ করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই প্রক্রিয়াজাত দ্রব্য আলোক সংবেদনশীল হয়ে থাকে এবং আলোর উপস্থিতি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
(৮) তৈল চুইয়ে পড়া (Oil Sepage): যেসব পণ্যের মধ্যে তৈল দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয় ঐ সব পণ্যের প্যাকিং দ্রব্য এমন হতে হবে যাতে ভৈল লিক না করে। তৈল লিক করলে পণ্যটি বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে এবং পাকেট তৈলাক্ত বা greasy হয়ে যায়। অনেক সময় এ কারণে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা পণ্য সংক্রমিত হতে পারে।
(৯) ক্ষয়রোধক ক্ষমতা (Carrosiveness): প্যাকিং এর সামগ্রী এমন হতে হবে যাতে ধারণকৃত পণ্যের সাথে বিক্রিয়া করে প্যাকেটের কোনো প্রকার ক্ষয় না হয়। যেমন সামুদ্রিক মাছে সালফারযুক্ত এমাইনো অ্যাসিড বেশি থাকে, যা টিনজাতীয় ক্যানে লিকার ছাড়া প্যাকিং এবং প্রক্রিয়াজাত করলে সালফারের সাথে টিনের বিক্রিয়া ঘটে পণ্যের গুণগতমান নষ্ট হয়ে যায়।
(১০) দাহ্যতা (Flamability): প্যাকিং সামগ্রী সহজে দহনযোগ্য হলে ভালো হয় না। গরম অবস্থায় প্যাকিং করার সময় অনেক ক্ষেত্রে আগুন জ্বলে যেতে পারে। যে কারণে দহনযোগ্য দ্রব্য দ্বারা প্যাকিং করলে গরম অবস্থায় পরিবহন বা হ্যান্ডলিংয়ের সময় বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
বিভিন্ন প্রকার প্যাকেজিং দ্রব্যাদি
প্যাকেটজাতকরণের উদ্দেশ্যসমূহ সাধনের লক্ষ্যে এবং পণ্যের গুণগত বৈশিষ্ট্যসমূহ বিবেচনায় রেখে নিদ্রতাবর্ণিত দ্রব্যসমূহকে প্যাকেজিং-এর কাজে ব্যবহার করা যায়:
১. সিরামিক (Ceramic)
২. কাচ (Glass)
৩. ধাতু (Metal)
৪. কাগজ (Paper)
৫. প্লাস্টিক (Plastic)
৬. কাঠ (Wood)
কৌটাজাত করণ
কোলে পচনশীল খাদ্যদ্রব্যকে সম্পূর্ণরুপে বাঘুশূন্য নিয়াশন পাত্রে দাবদ্ধ অবস্থায় উচ্চভাণ প্রয়োগে বাণিজ্যিকভাবে জীবাণুমুক্ত করে সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে কৌটাজাত করণ বলে। বাণিজ্যিকভাবে জীবাণুযুক্ত করণ বলতে তরটুকু জীবানুমুক্ত করা বোঝায় যার ফলে সকল রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। বৌটাজাতকরণ মূলত প্যাকেজিং এর একরী পদ্ধতি যার মাধ্যমে কোনো দ্রব্যের গুণগতমান সংরক্ষণ তাপমাত্রার ওপর ভিত্তি করে ২ হতে ১০ বৎসর পর্যন্ত অপরিবর্তিত রাখা যায়। কৌটাজাত করণের উদ্দেশ্যগুলো নিম্নরূপ।
(১) উচ্চভাপ প্রয়োগের মাধ্যমে সকল ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া কাদে করা এবং তাদের এনজাইমের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়া।
(২) মাছ বা খাদ্যের দেহস্থিত এনজাইমকে দিনেচারড বা অধকৃতস্থ করার মাধ্যমে রাসায়নিক। বিক্রিয়াঘটিত পচন রোধ করা
(৩) অবায়বীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে জারণ প্রক্রিকাকে সম্পূর্ণরূপে রোধ করা।
কৌটা (Can)
কৌটা বিন্নি আকার, আকৃতির ও বিচ্ছিন্ন উপাদানের হয়ে থাকে। তবে প্রক্রিয়াজাতযোগ্য মৎস্য বা খাদ্যদ্রব্যের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কৌটা নির্বাচন করা হয়। সাধারণত কাচ, অ্যালুমিনিয়াম ও টিনের পাত্র মৎস্যজাত পণ্য কৌটাজাত করণে ব্যবহৃত হয়। এদের প্রত্যেকটির কিছু কিছু ব্যবহারিক সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। তবে টিনের পাত্রই মাছ কৌটাজাত করণে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
কৌটাজাত এফিরা
কৌটাজাত মাছ চিংড়িয় গুণগত মান এর কাঁচামাল কাঁচা মাছ/চিংড়িয় বৈশিষ্ট্য এবং ক্যানিং পূর্ব পরিচর্যায় ওপর বহুলাংশে নির্ভর করে। সববয়নেয় সাহু/চিংড়িকে কৌটাজাত করা সুবিধাজনক হয় না। যেসব প্রজাতির মাছের পেশীর গঠন উচ্চ তাপমাত্রায় ঠিক থাকে শুধুমাত্র সেসব মাছকেই কৌটালাত করা হয়।
বেশি চর্বিযুক্ত বা একেবারে কম চর্বিযুক্ত মাহ কৌটাজাত করা হয় না। সাধারণত যেসব মাছের চর্বি ৭-১৫% এর মধ্যে সেগুলো কৌটাজাত করণের জন্য উত্তম। এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র সামুদ্রিক মাছেরই কৌটাজাত করা হয়ে থাকে। টুনা, ম্যাকারেল, গিলচার্ড, সর্জিন, স্যামন, প্রটি প্রকৃতি প্রজাতির মাছ/চিংড়িকে সচরাচর কৌটাজার করতে দেখা যায়। ক্যাশিং পদ্ধতিতে নিম্নলিখিত ধাপসমূষ পর্যায়ক্রমে অনুসরণ করা হয়:
(১) ড্রেজিং (Dreasing): বেশির ভাগ ছোট মজের ক্ষেত্রে ড্রেসিং গুধুমাত্র পাখনা, আইশ, যাথা ও নাড়িভুড়ি ফেলে দেয়া পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। কিনতু বড় আকারের মাজ যেমন-টুনা, স্যামন, এসের ক্ষেত্রে আইপ, মাখা ও বাড়িভুড়ি দেশার পর মেরুদন্ড কাটা ফেলে দেয়া হয়। এভাবে মাহকে বড় বড় টুকরো বা চায় (Chunk) তৈরি করা হয়। মাজের টুকরো কৌটার আকার বা প্রাহকের পছন্দ অনুযায়ী ছোট বড় করা হয়। ড্রেসিং এর মাছ/চিংড়িকে বিশুদ্ধ পানীয় জল ভায়া যৌক কথা বয়।
(২) প্রি বুকিং (Pro-Cooking): কৌটাজাত প্রক্রিয়ায় প্রি বুকিং হলো মাছের পেশি একটু নরম যা টিলা করা যাতে মাছের চামড়া, কাটা পৃথক করা যায়। এই প্রক্রিয়ায় মাছ থেকে কিছু পরিমাণ পানি ও তৈল অপসারণ করা হয়। মাহের প্রজাতি অনুযায়ী লি-কুকিং এর পদ্ধতি, কাপমাত্রা ও সময়কাল নির্ধারণ করা হয়। এ সময় মাছ/চিংড়ির খোলস ও ভেইন এবং অন্য যাহের লাল বা বাদামি পেপি (Blood meat) ফেলে দেয়া হয়।
প্রি বুকিং পর্যায়ে মাছ থেকে সঠিক পরিমাণে পানি অপসারণ এবং পেশিস্থ করুল আমিষের অনটি বাঁধা নিশ্চিত করা হয়। টুনা, হেরিং, স্পাট ও কোনো কোনো সার্ভিনকে বাষ্প প্রবাহিত করে প্রি বুকিং করা হয়। আবার অন্য প্রকার সার্ভিনকে উদ্ভিজ তেলে ভাজা হয়। ধূমায়িতকরণ প্রক্রিয়ায় অনেক সময় স্পটি যাহকে প্রি বুকিং করা হয়ে থাকে। তবে শবণ দ্রবণে অল্প তাপে সিদ্ধ করা প্রি বুকিং এর সাধারণ পদ্ধতি।
(৩) কৌটা পূর্ণক্ষমণ (Filling the can): কৌটার মাছ অরার কাজটি হাত দিয়ে বা বাত্রিকভাবে করা যায়। তবে হাত দিয়ে পূর্ণ করলে ক্যানের ভিতরে কাঁকা স্থান থেকে যেতে পারে। ফলে সেখানে বাভাসের উপস্থিতিতে জারণ ঘটতে পারে। এছাড়া ফাঁকা স্থান থাকলে উচ্চতাপ প্রয়োগের সময় ফোঁটা ফেটে যেতে পারে।
কৌটা পূর্ণক্ষরণের সময় যাছের বা টুকরার সংখ্যা ও নিট রক্ষনের প্রতি বিশেষ দক্ষ্য রাখা হয়। কৌটার ভেতরে পরিপাটি ফত্রে মাছ সাজানো হয় যাতে ক্রেতা পছন্দ করে। ক্যান পূর্ণ করার সময় ফ্যানের উপরের দিকে বিছু স্থান ফাঁকা রাখা এয়। একে ক্যান হেড স্পেদ (Can hoad space) বলা হয়। পরবর্তীতে উচ্চতাপ প্রয়োপের সময় ক্যানের আবদ্ধ মুখ যাতে ফেটে না যায় সেজন্য ফাঁকা স্থান রাখা হয়।
(৫) ফালা বা এডিটি (Adition af additives)। উৎপন্ন দ্রব্যের খাদ, গন্ধ, রং ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোয় জন্য কৌটার মধ্যে বিন্নি প্রকার এডিটিক্স ব্যাবহার করা হয়। এসব এভিটিগুলের মধ্যে লবণ, মসলা, টমেটো সব, সবজি, তৈল ইত্যাদি অন্যতম। এসব এডিটিমূলের ব্যবহার মাত্রা ও অণীজন খুব সাববানতার সাথে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
৫) বায়ুশূন্যকরণ ও মুখবন্ধকরণ (Exhausting & Sealing): মাছভর্তি ক্যানকে মুখ বন্ধ করার পূর্বে এর ভেতর থেকে বাতাস সম্পূর্ণভাবে বের করে দেয়া হয়। বায়ুশূন্য করার কলে কোটা স্ফীত হওয়া, জারণ হওয়া বা কৌটার ভেতরের অংশ ক্ষয় প্রাপ্ত হতে পারে না। বায়ুশূন্যকরণ ও মুখবন্ধকরণ স্বয়ংক্রিয় মেশিনের সাহায্যে সম্পন্ন করা হয়। তবে সম্পূর্ণ কাজটি খুব সতর্কতার সাথে সম্পাদন করা হয়।
(৬) ধৌতকরণ (Washing)। কোটা পূর্ণ করার সময় বা অন্যভাবে কৌটায় গায়ে কোনো পদার্থ লেগে থাকতে পারে যা গুকিয়ে শক্ত হয়ে যেতে পরে। তাই কৌটাসমূহ বিশুদ্ধ পানি দ্বারা ধৌত করা হয়।
(৭) তাপ প্রয়োগে বা রন্ধন (Retorting & Cooking): কৌটাজাত মদ্যদ্রব্যকে সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করার জন্য তাপ প্রয়োগ করা হয়। কৌটার আকার, আকৃতি ও পণ্যের প্রকৃতি অনুযায়ী তাপমাত্রা ও তাপ প্রয়োগের সময়কাল নির্ভর করে। ক্যানিং-এর জন্য উপযোগী বিভিন্ন ধরনের রিটর্ট যন্ত্র পাওয়া যায়। এক সাথে অনেক সংখ্যক কৌটা (২০০-৩০০) রিটার্টিং চেম্বারে রেখে সিস্টম চালনা করা হয়। সাধারণত ১২১° সে. আপমাত্রায় ৫০-৭০ মিনিট পর্যন্ত স্টিম সহযোগে তাপ প্রয়োগ করা হয়।
(৮) ঠান্ডাকরণ (Cooling): উচ্চতাপ প্রয়োগের ফলে গরম কৌটা দ্রুত ঠান্ডা করার প্রয়োজন হয়। দ্রুত ঠান্ডা করলে মাছ অতিরিক্ত রন্ধন (over processing) হয়ে যেতে পারে। ফলে পণ্যের গঠন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। দ্রুত ঠান্ডা করার জন্য ‘গ্রেসরে কুলিং’ পদ্ধতি সংবলিত রিটর্টের সাহায্যে কাজটি সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। এছাড়া কনাপ্রধারের মাধ্যমে ঠান্ডা পানিতে চালনা কারও ক্যাথে ঠান্ডা করা যায়। ঠান্ডাকওগেও বিশুদ্ধ পানি ব্যাবহার করা হয়। ক্লোরিনেটেড পানি ব্যবহার করে সংক্রমণের আশঙ্কা এড়ানো যায়।
(৯) লেবেল লাগানো (Labelling): ঠান্ডা করার পর কৌটার লেবেল লাগানো হয়। পণ্যের বর্ণনা সৎলিত লেবেল লাগানোর সময় প্যাকেজিং এয় নিয়ম অনুসারে যাবতীয় তথ্যাদি সন্নিবেশিত করা হয়। বিভিন্ন কোডের মাধ্যমে কৌটার পায়ে খ্যাচ নম্বর, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখসহ কতিপয় প্রয়োজনীয় তথ্য এম্বোস (Emboss) করা ভালো। এয়ে করে উৎপন্ন দ্রব্যে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে ব্যাচ অনুযায়ী শনাক্তকরণ ও প্রয়োজনে বাজার থেকে প্রত্যাহার করা সহজ হয়।
(১০) মজুদকরণ (Stocking): কৌটাজাত খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনের সাথে সাথে বা তাড়াতাড়ি বিক্রয়ের জন্য সরবরাহ করা বা শিপিং করা হয় না। সাধারণত ১-২ মাস মজুন করার পর কোনো ত্রুটি আছে কিনা তা পরীক্ষার পর বাজারে ছাড়া হয়। ক্যান প্রস্তুত সম্পন্ন হলে নিম্নভাগে মজুদ করা হয়। সাধারণত কৌটাজাত মৎস্যদ্রব্য কক্ষ তাপমাত্রায় ৩-৪ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। বাণিজ্যিক কৌটাজাতকরনের সময় উপরের অধিকাংশ ধাপই স্বয়ংক্রির যন্ত্রের সাহায্যে সম্পন্ন করা হয়। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজের মান নিবিড় পরিদর্শন পদ্ধতি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কৌটাজাত করণের ত্রুটি (Defect)
টিনের কৌটার সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে পণ্যের ভেতর নানা প্রকার রুটি দেখা দেয়। মাহের আদিযে বিদ্যমান সালফারযুক্ত অ্যামাইনো অ্যাসিড কৌটার আয়তনের সাথে বিক্রিয়া করে আয়রন সালফাইড বা টিন সালফাইড উৎপন্ন করে। ফলে কৌটার ভেতর ক্ষয় হয়ে যেতে পায়ে বা কৌটা স্ফীত হয়ে যেতে পায়ে এবং খাদ্য বস্তু কাল বং ধারণ করতে পারে।
এছাড়া টিন প্লেট হতে ধাতব সংক্রমণে খাদ্য বস্তু স্বাস্থ্যগত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এসব ত্রুটি এড়াতে টিন ক্যানকে জিঙ্ক অক্সাইড দিয়ে একটি সংরক্ষক প্রলেপ দেয়া হয়। এই প্রলেপকে লেকার (Lacquer) বলা হয়।সেকার প্রলেপের ফলে বর্ণিত ত্রুটিসমূহের অধিকাংশ দূর হয়ে যায়। অবশিষ্ট ত্রুটি দূর করার জন্য মাছ ও ক্যানের মাঝখানে পাতলা পার্চমেন্ট কাগজ দিয়ে মুড়ে দেয়া হয়। মাছ/চিংড়ির বেলায় কৌটার সামান্য সাইট্রিক অ্যাসিড বা ফসফরিক অ্যাসিড যোগ করে এ জাতীয় ত্রুটি দূর করা যায়।

অন্যান্য মৎস্যজাত দ্রব্য ফিসমিল
মৎস্য আহরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় কিছু কিছু মাছ বা মায়ের উচ্ছিষ্টাংশ (Fish offal) ফেলে দেয়া হয় বা নষ্ট করে ফেলা হয়। মাছ/চিংড়ি ট্রলার কর্তৃক পড়ীর সমুদ্রে মাদ্ধ/চিংড়ি আহরণের সময় মাছ/চিংড়ি ছাড়া জালে আসা অন্য মাছকে সাগরে ফেলে দেয়া হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে মাধ্যচিংড়ির মাথা ও খোলস নদীতে ফেলে দেয়া হয়। সামদিক আহরণে এমন অনেক মাছ থাকে যা মানষ খেতে চায় না। যেমন ললিগো, সেশিয়া, জেলিফিস প্রভৃতি।
ফিসমিল হলো মাছ বা মাছের উচ্ছিষ্টাংশ থেকে অধিকাংশ পানি ও তৈল বের করার পর প্রস্তুতকৃত এক প্রকার গুড়া যা উচ্চমাত্রায় প্রোটিনসমৃদ্ধ বিধায় পশু ও মৎস্য খাদ্য হিসেবে ব্যাপকস্তাবে ব্যবহৃত হয়। যে কোনো ধরনের মাছ বা শেলদিন থেকে ফিসমিল প্রস্তুত করা যায়।
অনেক দেশেই আস্ত মাছ (whole fish) থেকে ফিসমিল তৈরি করা হয়। তবে ট্রাস ফিস ও মাছের উচ্ছিষ্টাংশ দিয়েও ফিসমিল তৈরি করা হয়। ট্রাস ফিস ঐ সমস্ত মাছ যেগুলো আকারে ছেট ও দামে সস্তা। তাই বড় মাছ বা দামি মাছ রেখে এগুলোকে সমুদ্রে ফেলে দেয়া হয়। এতে পুষ্টি সমৃদ্ধ অমিষ জাতীয় খাদ্যের অপচয় হয় এবং এঐসব মাছ পচে পানি দূষিত হতে পারে। সুতরাং তুচ্ছ মনে করে এইসব মাছ ফেলে না দিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে বিকল্প ব্যবহার করা যায়।
ফিলমিলের গঠন: বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের মাছ বা কাঁচামাল থেকে ফিসমিল তৈরি করা হয়। সে কারণে এর গঠনও বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে ফিসমিলে নিম্নবর্ণিত উপাদানসমূহ কমবেশি মাত্রায় অবশ্যই থাকে।
(১) প্রোটিন
(২) তৈল বা ফ্যাট
(৩) পানি
(৪) ছাই
(৫) ক্রড ফাইবার
(৬) ভিটামিন
১) প্রোটিন। উন্নতমানের ফিসমিলে প্রোটিনের পরিমাণ ৬০-৬৫% হয়ে থাকে। তবে এর মাত্রা ৫০-৭০% পর্যন্ত হলেই উন্নত মানসম্পন্ন বিবেচনা করা হয়। ফিসমিলের প্রোটিনে সকল প্রকার অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড বিদ্যমান থাকে।
(২) তৈল: ফিসমিলে ভৈলের পরিমাণ ৫-১০% এর মধ্যে রাখা হয়। মাছের মধ্যে বিদ্যমান চর্বি ফিসমিল। তৈরির সময় বের করে নেয়া হয়। ফিসমিলে চর্বি বা তৈলের পরিমাণ ৫% এর নিচে হলে বেশি কড়া হয়ে যায়। পক্ষান্তরে অতিরিক্ত ভৈলের কারণে জারিত হয়ে ফিসমিল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আদর্শ মান হিসেবে ফিদমিলে ৮% ভৈল থাকা ভালো।
(৩) পানি (Moisture)। ফিসমিলে পানির পরিমাণ ৬-১০% পর্যন্ত থাকতে পারে। কবে ৮% এর বেশি থাকা ঠিক নয়। পানি বেশি থাকলে সহজেই ফিসমিলের গুণগতমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
(৪) ছাই (Ash): ফিসমিলে প্রোটিনের পরিমাণের সাথে ছাই এর বিপরীত সম্পর্ক বিদ্যমান। অর্থাৎ বেশি প্রোটিন হলে ছাই কম হবে। আর বেশি ছাই হলে কম পরিমাণ রোটিন পাওয়া যাবে। সাধারণ মাত্রা হিসেবে ফিসমিলে ১২ থেকে ৩৩% পর্যায় ছাই থাকতে পারে। তবে ১৮% ছাই ভালো ফিসমিলে থাকা বাঞ্ছনীয়।
(৫) জুড ফাইবার (Crude fibre): ফিসমিলে ১-২% এর বেশি ক্রুড ফাইবার থাকে না। ক্রুড ফাইবার আর্দশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
(৬) ভিটামিন। ফিসমিলে অতি অল্প পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ লবণ থাকে। উল্লেখযোগ্য ভিটামিনসমূহের মধ্যে রাইবোফ্লেভিন, নায়াসিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, কলিন ও ভিটামিন বি-১২ অন্যতম। ফিসমিলে ভিটামিনের পরিমাণ নিচে দেয়া হলো।
(ক) রাইবোফ্লাজিন:৩ মিন্না/পাউন্ড
(খ) নায়াসিন:৩০ মিগ্রা/পাউন্ড
(গ) প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড
(ঘ) কোলিন:০.১-০.৩ মিল্লা/পাউন্ড
(ঙ) ভিটামিন ই
ফিসমিলের শ্রেণীবিভাগ
ফিসমিলে প্রোটিনের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে নিম্নলিখিতভাবে শ্রেণিবিভাগ করা হয়ে থাকে।
(১) প্লোভ এ। এতে ৫৫-৭০% পর্যন্ত রোটিন থাকে
(২) গ্রেড বি। এতে ১০% এর বেশি এবং ৫৫% এর কম প্রোটিন থাকে
(৩) গ্রেড সি: এতে ১০% এর কম প্রোটিন থাকে
ফিলমিল তৈরির পদ্ধতি
ফিসমিল তৈরির বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। সবচেয়ে সহজতম পদ্ধতি হলো মাছ রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে ফিসমিল তৈরি করা। এতে ফিসমিলের গুণগতমান নিম্নমানের হয়। এ কারণে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে মাছ শুকিয়ে গুড়া করে ফিসমিল তৈরি করা হয়। এটিই পৃথিবীব্যাপী ফিসমিল তৈরির পরিচিত পদ্ধতি। বাণিজ্যিকভাবে ফিসমিল উৎপাদনের এ পদ্ধতিকে অস্ত্র বিয়োজন পদ্ধতি (Win reduction method) বলা হয়। ধারাবাহিকভাবে এই পদ্ধতিতে বিভিন্ন পর্যায়সমূহ নিচে বর্ণনা করা হলো।
ক. চূর্ণকরণ বা পেষণ (Grinding): মাছের উচ্ছিষ্টাংশ (Fish grinder offal) অথবা বড় আকৃতির মাছকে মাসে পেষক যন্ত্রের (imeat grinder) সাহায্যে পেষণ করা হয়। তবে ১০ ইঞ্চি লম্বা বা আর ছোট আকারের মাছকে পেষণ করার দরকার হয় না।
খ. সিদ্ধকরণ (Cooking): পেষণ করা মাছ বা ছোট আকৃতির সম্পূর্ণ মাছকে আবদ্ধ অবস্থায় চাপের মধ্যে
বাষ্প প্রবাহিত করে সিদ্ধ করা হয়। ফলে মাছের মাংস ও হাড় নরম হয় এবং কোষ প্রাচীর ভেঙে যায়। এভাবে চাপ ও তাপের দ্বারা মাছের তৈল বেরিয়ে আসে। সিলিভারাকৃতির কুকারের সাহায্যে সিদ্ধ করা হয়। কুকার ১৫-২০ ফুট দৈর্ঘ্যে এবং ১৫-৩০ ইঞ্চি ব্যাসের হয়ে থাকে এবং এটির ভেতর মাছ নড়াচড়া করার জন্য কনভেয়ার বেল্ট থাকে। কুকারের ভেতর সারিবদ্ধ পাইপের মাধ্যমে বাষ্প পরিচালনা করা হয়।
৭. সপ প্রয়োগ (Pressing): সুদিং করা নাহফে এষপঃ বায়ায্যহিকলবে তাপ যন্ত্রের মধ্য দিয়ে অতিক্রন করানো হয়। চাপ প্রয়োগের ফলে কুকিং করা মাছ থেকে দুটি অংশ পাওয়া যায় (১) তরল অংশ যাকে প্রেস লিকার বলা হয়। এটি মাছ থেকে বেরিয়ে আসা পানি ও তৈলের সমষ্টি। (২) শুকনো অংশ যা প্রায় শুকনো মাছের বান্ধ, একে ঢোস কেক বলা হয়। গ্রেস কেকে ৪০-৭০% পানি (Moisture) বিদ্যমান থাকে।
খ. শুদ্ধকরণ (Drying) প্রেস কেককে এবারে গরম বাতাসের প্রবাহ সংবলিত ড্রায়ারের মধ্যে ফেলে শুকানোর ব্যবস্থা করা হয়। ড্রায়ারের তাপমাত্রা ৬০° সে. এর নিচে রাখা হয়।
৪) কিউরিং (Curing): উৎপন্ন দ্রব্য যেন বেশি গরম না হয়ে যায় সেজন্য কনতেবার বেল্টের সাহায্যে ফিসমিলকে উপরে নিচে নাড়াচাড়া করার ব্যবস্থা করা হয়। তাপমাত্রা ৬০° সে. এর বেশি হলে ফিসমিলের প্রোটিন ডিনেচারড হয়ে যেতে পারে। বাতাসের উপস্থিতিতে জারিত হয়ে ফিসমিলের গুণাগুণ যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য ডাস্ট অক্সিড্যান্ট হিসেবে বিউাটাইলেটেড হাইড্রক্সি টলুইন (HHT) ব্যবহার করা হয়।
চ) গুড়াকরণ (Milling): ঠান্ডা করার পর প্রেস কেককে গুড়া করে চূড়ান্ত পণ্যদ্রব্য হিসেবে ফিসমিল তৈরি করা হয়।
হ) প্যাকেটকরণ ও মজুদকরণ (Packaging and strorage): প্রস্তুতকৃত ফিসমিলকে বায়ুরোধী প্যাকেটে সুবিধাজনক ওজনে প্যাকেট করা ও মজুদ করা হয়। ফিসমিল প্যাকিং ও গুদামজাতকরণে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা হয় যাতে কোনো পোকামাকড় বা ইঁদুর প্যাকেট কেটে না দেয়। বাভাসের সংস্পর্শে ফিসমিলের গুণগতমান নষ্ট হয়ে যায়।
ফিসমিলের ব্যবহার
এক সময় ফিসমিল শুধুমাত্র জমিতে সার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে ফিসমিলের ব্যাপক ব্যবহার বেড়েছে। কোনো কোনো দেশে আহরিত মাছের প্রায় ৫০% ফিসমিল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এর বহুবিষ ব্যবহার রয়েছে। তবে পশুপাখির খাদ্য হিসেবে এর ব্যবহার অন্যতম।
ফিসমিলে উচ্চমাত্রায় প্রোটিনের কারণে পোল্ট্রি ফিড বা হাঁস মুরগির খাদ্য হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। উন্নত মাছ চাষ ও মাছ/চিংড়ি চাষের জন্যও এটি অপরিহার্য সম্পূরক খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিছু কিছু ফিসমিল বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্রক্রিয়াজাত করে মানুষের খাওয়ার উপযোগী করা হয়। এছাড়া ঔষধ শিল্পে কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক দ্রব্যাদি তৈরিতে ফিসমিল ব্যবহার করা হয়।
আরও দেখুনঃ