পুকুরের আয়তন নির্ধারণ পদ্ধতি

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় পুকুরের আয়তন নির্ধারণ পদ্ধতি – যা মাছচাষে পুকুরের ধরন ও পুকুর খনন এর অন্তর্ভুক্ত।

পুকুরের আয়তন নির্ধারণ পদ্ধতি

যে কোনো পুকুরের আয়তন নিম্নে বর্ণিত সূত্রের সাহায্যে বের করা যায়।

পুকুরের আয়তন (শতাংশ) = ৪৩৫.৬

যেমন- কোনো পুকুরের দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট এবং প্রস্থ ৫০ ফুট হলে

পুকুরের আয়তন হবে = ১১.৪৮ শতাংশ। (৪৩৫.৬ বর্গফুটে ১ শতাংশ) আবার

পুকুরের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের মাপ যদি ফুটে না নিয়ে মিটারে নেওয়া হয়ে থাকে তাহলে

পুকুরের আয়তন (শতাংশ) = ৪০.৪৮

যেমন- পুকুরের দৈর্ঘ্য ১০০ মিটার এবং প্রস্থ ৫০ মিটার হলে

পুকুরের আয়তন হবে = ১২৩.৫২ শতাংশ। (৪০.৪৮ বর্গমিটারে ১ শতাংশ)

পুকুর খননে মাটি কাটার হিসাব :

পুকুরের আয়তন নির্ধারণের পর পুকুর কাটা শুরু করতে হয় । সাধারণভাবে মাটি কাটার হিসাব নিম্নে বর্ণিত সূত্রের সাহায্যে অতি সহজেই বের করা যায়। পুকুরের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতা যদি ফুটে হিসাব করা হয় তাহলে দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x গভীরতা = ঘনফুট।

যেমন- কোনো পুকুরের দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট, প্রস্থ ৫০ ফুট এবং ঐ পুকুরে ৫ ফুট গভীর করে মাটি কাটতে হবে। পুকুরের মাটির ধরন যদি এঁটেল হয় তাহলে ১ : ১.৫ ঢাল রেখে মাটি কাটতে হবে । অর্থাৎ মাটি কাটার সময় ১ ফুট গভীরতার জন্য ১.৫ ফুট মাটি ছেড়ে দিতে হবে। এখন মাটি কাটার হিসাব হবে।

পুকুরের প্রাথমিক দৈর্ঘ্য = ১০০ ফুট উচ্চতা বা গভীরতা

উচ্চতা বা গভীরতা          = ৫ ফুট

প্রাথমিক প্রস্থ                  = ৫০ ফুট
গড় দৈর্ঘ্য                          = (১০০+৮৫)/২ = ৯২.৫ ফুট

গড় প্রস্থ = (৫০+৩৫) /২ = ৪২.৫  ফুট

 

 

পুকুরের আয়তন নির্ধারণ পদ্ধতি
চিত্র-২২ : লম্বালম্বি সেকশান

 

 

মোট মাটির পরিমাণ = দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x উচ্চতা

= ৯২.৫ × ৪২.৫ × ৫
= ১৯,৬৫৬.২৫
= ১৯,৬৫৬ ঘনফুট (প্রায়)

 

পুকুরের আয়তন নির্ধারণ পদ্ধতি
চিত্র-২৩ : আড়াআড়ি সেকশান

 

 

প্রতি হাজার (১ হাজার = ১০০০ ঘনফুট) মাটি কাটার মূল্য যদি ৩০০০ টাকা হয় তাহলে মোট মাটি কাটতে খরচ হবে ১৯.৬ x ৩০০০ = ৫৮,৮০০ টাকা ।

 

পুকুরের আয়তন নির্ধারণ পদ্ধতি
চিত্র-২৪ : পুকুরে মাটি কাটার পরে সিড়ির দৃশ্য

 

পুকুরের আয়তন নির্ধারণ পদ্ধতি
চিত্র-২৫ : পুকুরে মাটি কাটার পরের দৃশ্য

 

আবার অনেক সময় বৃষ্টিবাদল বা অন্য যে কোনো কারণে পুকুরের তলদেশে খননকৃত মাটি মাপ না করে পুকুরের পাড়ে উত্তোলিত মাটি মাপ করেও মাটির হিসেব বের করা যেতে পারে। যেমন- কোনো পুকুরের পাড়ের দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট, পাড়ের ঢালের দৈর্ঘ্য ১৫ ফুট, পাড়ের উচ্চতা ১০ ফুট এবং পাড়ের চূড়া বা টপের প্রস্থ ৬ ফুট হলে মোট মাটির পরিমাণ হবে।

 

 

পুকুরের আয়তন নির্ধারণ পদ্ধতি
চিত্র-২৬ : পুকুর পাড়ের আড়াআড়ি সেকশন

 

 

পাড়ের দৈর্ঘ্য = ১০০ ফুট
উচ্চতা = ১০ ফুট
টপের দৈর্ঘ্য = ৬ ফুট

পাড়ের গড় প্রস্থ = ২১ ফুট
ঢালের দৈর্ঘ্য = ১৫ ফুট (১ : ১.৫)

মাটির পরিমাণ = ?

প্রতি হাজার ঘনফুট মাটি কাটার মূল্য যদি ৩০০০ টাকা হয় তাহলে মোট মাটি কাটতে খরচ হবে ২১ x ৩০০০ = ৬৩,০০০ টাকা । আবার মাটির মাপ যদি এমন হয় যেমন- কোন পুকুরের দৈর্ঘ্য ১০০ -২, প্রস্থ ৫০ -৩ এবং গভীরতা ১০ -৪´ হয়।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

তাহলে সূত্রানুযায়ী

১০০-২ x ৫০-৩” x 10-8
= ১০০.১৭ × 50.25 × 10.33
= ৫১,৯৯৭ ঘনফুট (প্রায়)।

 

২ কে ফুটে পরিণত করতে হবে
১২ = ১ ফুট
5 = ০.০৮৩ ফুট = ১২
০.১৬৬ = ০.১৭
৩ = ০.২৫, 8″= = ০.৩৩

১০০০ ঘনফুট মাটির মূল্য = ৩০০০ টাকা ১ ঘনফুট মাটির মূল্য = = ৩.০ টাকা ।
সুতরাং মোট মাটির মূল্য = ৫১,৯৯৭ × 3.0
= ১,৫৫,৯৯১ টাকা ।

আরও দেখুন:

Leave a Comment