Site icon Fisheries Gurukul [ মৎস্য গুরুকুল ] GOLN

শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং ২ দ্বিতীয় পত্র ব্যবহারিক | ব্যবহারিক | শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২

শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং ২ দ্বিতীয় পত্র ব্যবহারিক | ব্যবহারিক | শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং ২ দ্বিতীয় পত্র ব্যবহারিক । যা ” শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং ২ দ্বিতীয় পত্র ব্যবহারিক ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত ।

শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

Table of Contents

Toggle

শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং ২ দ্বিতীয় পত্র ব্যবহারিক

 

 

অনুশীলনী- ১: প্রাকৃতিক উৎস থেকে গলদা পোনা সংগ্রহ ও শনাক্তকরণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. গলদা চিংড়ি যদিও মিঠা পানির চিংড়ি তবে ডিম ছাড়ার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলের আধালবণাক্ত পানির জলাশয়ে এরা জীবনের কিছু সময় অতিবাহিত করে থাকে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাসমূহে অর্থাৎ সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলীর নদীসমূহে গলদার পোনা পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়।

সাধারণত ডিসেম্বর থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত উপকূলীয় নদীসমূহে গলদার পানা পাওয়া যায়। সাধারণত খুবই যন ছিদ্রযুক্ত জাল বা মশারি জাল দিয়ে উপকুলীয় নদী থেকে গলদার পোনা সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া হ্যাচারি থেকেও পলদা পোনা সংগ্রহ করা যেতে পারে।

২. গলদা চিংড়ির পোনার (১৮-৯০ মিমি) ক্যারান্সেসে বা শিরোবক্ষের খোলসে লম্বালম্বি কয়েকটি রেখা দেখা যায়। ছোট পোনার ক্ষেত্রে ১টি এবং অপেক্ষাকৃত বড় পোনার ক্ষেত্রে ৭-৮ টি লম্বালম্বি রেখা দেখা যায়। এছাড়া গলদা পোনার উদর খন্ডকের সংযোগস্থলে নীল বর্ণের ডোরাকাটা দাগ দেখা যায় যা জীবনের অবশিষ্ট সময়েও অবিকৃত থাকে।

রোষ্ট্রামের উপরে ও নিচে দাঁত থাকে এবং এই অবস্থায় স্বেচ্ছায় সাঁতার কাটতে পারে। পিএল অবস্থায় এদের গায়ের রং সাধারণত স্বচ্ছ দেখায় এবং মাথায় হালকা বাদামি রঙের রঞ্জন কশা দেখা যায়।

উপকরণ

১. টিনের থালা

২. ঝিনুক

৩. সিলভারের পাতিল

৪. গলদার পোনা

৫. মেজারিং ফ্রাঙ্ক

৬. আতশ কাচ

৭. ড্রপার

৮. পরিশ্রুত পানি

৯. ফরসেপ

১০. গ্লাস স্নইড

১১. ট্রে

১২. ব্যবহারিক খাতা

১৩. পেনসিল ইত্যাদি।

কাজের ধাপ

১. উপকূলীয় অঞ্চলের কোনো নদীর তীরবর্তী পোনা বিক্রয় কেন্দ্রে গমন কর।

২. পোনা বিক্রয় কেন্দ্রের কোনো পোনা ব্যবসায়ীর নিকট থেকে সুস্থ ও সবল পোনা সংগ্রহ কর।

৩. টিনের থালায় পানিসহ কিছু পোনা নিয়ে সেগুলো সুস্থ ও সবল কীনা তা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর।

৪. এবার বিক্রয় কেন্দ্র থেকে সংগৃহীত পোনাগুলো পানিভর্তি মেজারিং ফ্লাস্কে করে পরীক্ষাগারে নিয়ে আস।

৫. পরীক্ষাগারে এসে মেজারিং ফ্লাক থেকে কিছু পোনা পানিসহ টিনের থালায় রাখ।

৬. ড্রপারের সাহায্যে ১ টি পোনা পানিসহ ট্রেতে রক্ষিত গ্লাস সরাইডের উপরিতলে রাখ এবং গ্লাস সরাইডের উপর এক ফোঁটা পরিশ্রত পানি দাও।

৭. এবার আতশ কাচ দিয়ে পোনাটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর।

৮. পোনার শনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ কর।

৯. পেন্সিল দিয়ে পোনার চিত্র ব্যবহারিক খাতায় অঙ্কন কর।

১০. অনুশীলনকৃত কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ কর।

 

 

অনুশীলনী- ২: গলদা চিংড়ির পোনা পরিবহনের কৌশল

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. পোনা দুটি পদ্ধতিতে পরিবহন করা যায়, যথা- (১) সনাতন পদ্ধতি ও (২) আধুনিক পদ্ধতি।

২. প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগৃহীত পোনা সাধারণত সনাতন পদ্ধতিতে পরিবহন করা হয়। সনাতন পদ্ধতির পরিবহনে সিলভার/ মাটির হাড়িতে পোনা পরিবহন করা হয়। এই পদ্ধতিতে সাধারণত ৩-৪ ঘণ্টার দূরত্বে পোনা পরিবহন করা হয়।

৩. হ্যাচারিতে উৎপাদিত পোনা সাধারণত আধুনিক পদ্ধতিতে পরিবহন করা হয়। এই পদ্ধতিতে পলিথিন ব্যাগে অক্সিজেন সরবরাহ করে পোনা পরিবহন করা হয়। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য তাপ নিরোধক বাক্স ও বরফ ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে ৪-৩৬ ঘণ্টার দূরত্বে পোনা পরিবহন করা যায়।

প্রয়োজনীয় উপকরণাদি

১. পলিথিন ব্যাগ

২. অক্সিজেন ভর্তি সিলিন্ডার

৩. রফ

৪. তাপ নিরোধক বাক্স

৫. সিলভার মাটির হাড়ি

৬. সূক্ষ্ম ছিদ্রযুক্ত জাল

৭. রাবার ব্যান্ড

৮. পেনসিল

৯. ব্যবহারিক খাতা

কাজের ধারা

১. কোনো ফড়িয়া বা প্রাকৃতিক উৎস থেকে পোনা সংগ্রহকারীর নিকট গমন কর।

২. সিলভার মাটির হাড়িতে পোনা পরিবহন পদ্ধতিটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর।

৩. হ্যাচারি থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে পোনা পরিবহন কার্যক্রমটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর।

৪. পলিথিন ব্যাগে অক্সিজেন সরবরাহ পদ্ধতিটি এবং পলিথিন ব্যাগের মুখ রাবার ব্যান্ড দিয়ে আটকানারে এ পদ্ধতিটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর।

৫. সনাতন ও আধুনিক পদ্ধতিতে পোনা পরিবহনের নিয়মগুলো ধারাবাহিকভাবে খাতায় লেখ।

 

 

অনুশীলনী- ৩: গলদা চিংড়ি পোনা পরিবহনের জন্য প্যাকিং অনুশীলন করা

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. পরিবহনের সময় ৪ ঘণ্টার বেশি হলে বরফ এবং অক্সিজেন দুই-ই ব্যবহার করতে হবে।

২. তাপমাত্রা হ্রাস-বৃদ্ধি রােেধর জন্য তাপ নিরোধক পাত্র ব্যবহার করা হয়।

৩. প্রতি লিটার পানিতে প্রতি ঘণ্টা পরিবহনের জন্য ১০ গ্রাম বরফের প্রয়োজন।

৪. অক্সিজেন সরবরাহকৃত পলিথিন ব্যাগে প্রতি লিটার পানিতে ৫০০টি ছোট পোনা পরিবহন করা যায়।

৫. পরিবহনকালে পানির তাপমাত্রা ২০-২৫°সে. এর মধ্যে রাখতে হবে।

উপকরণ

১. ৩৬” × ২০” আকারের ২টি পলিথিন ব্যাগ

২. ৪-৫ লিটার স্বচ্ছ পানি

৩. অক্সিজেন সিলিন্ডার

৪. ১টি মগ

৫. ১টি প্লাস্টিকের বড় গামলা

৬. ৪টি রাবার ব্যান্ড

৭. ১০০০-৩০০০টি পোনা

৮. ব্যবহারিক খাতা

৯. পেন্সিল

১০. রাবার

কাজের ধাপ

১. নিকটস্থ কোনো বাজার থেকে বড় আকারের ২টি পলিথিন ব্যাগ সংগ্রহ কর।

২. এবার নিকটবর্তী কোনো হ্যাচারিতে গমন কর।

৩. একটি পলিথিন ব্যাগকে আরেকটি পলিথিন ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে ব্যাগ দুটিকে একত্রিত করে এর ভিতর ৪/৫। লিটার পানি রাখ।

৪. এবার পলিথিন ব্যাগের পানিতে ৩-৪ হাজার চিংড়ির পোনা রেখে এতে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে অক্সিজেন। সরবরাহ কর।

৫. পলিথিন ব্যাগ অক্সিজেন পূর্ণ হলে অক্সিজেন সিলিন্ডারের নলটি ব্যাগ থেকে বের করে নিয়ে ব্যাগের মুখ রাবার। ব্যান্ড দিয়ে ভালভাবে বাঁধ যাতে অক্সিজেন বের না হয়ে যায়।

৬. অতঃপর পলিথিন ব্যাগের নিচের দুই কোণা রাবার ব্যান্ড দিয়ে বাঁধ যাতে পানি ও অক্সিজেনের চাপে ব্যাগ ফেটে যায়।

৭. এবার ব্যবহারিক খাতায় প্যাকিং পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে লিখ।

 

 

অনুশীলনী- ৪: গলদা চিংড়ির পোনা গণনা পদ্ধতি

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. পোনা দুভাবে গণনা করা যায়, যথা- ক) সরাসরি গণনা ও খ) Eye estimation পদ্ধতি।

২. অল্প পরিমাণ পোনা সরাসরি ঝিনুক দিয়ে গণনা করা যায়। তবে বিপুল সংখ্যক পোনা Eye estimation পদ্ধতিতে গণনা করা উত্তম।

উপকরণ

১. কুপনেট

২. সাদা চামচ

৩. পলিথিন ব্যাগে ৪-৫ লিটার পরিষ্কার পানি

৪. ব্যবহারিক খাতা

৫. পেনসিল

৬. রাবার

কাজের ধাপ

১. নিকটস্থ কোনো হ্যাচারিতে গমন কর।

২. পলিথিন ব্যাগে পরিষ্কার পানি নিতে হবে।

৩. পিএল ট্যাংক থেকে স্কুপ নেটের সাহায্যে পোনা সংগ্রহ কর।

৪. সাদা চামচে পিএল নিয়ে এক চামচে পিএল-এর সংখ্যা গণনা কর।

৫. এ প্রক্রিয়াটি কয়েকবার অনুশীলন কর।

৬. এক চামচে পিএল এর গড় সংখ্যা নির্ণয় কর।

৭. গণনাকৃত পোনা পলিথিন ব্যাগে সংরক্ষণ কর।

৮. পোনা গণনার কাজটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখ।

 

 

অনুশীলনী- ৫: হ্যাচারিতে উৎপাদিত পিএল পুকুরের পানিতে খাপ খাওয়ানো পর্যবেক্ষণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. পুকুরে ছাড়ার আগে পোনাকে পুকুরের লবণাক্ততা, তাপমাত্রা ও পিএইচ এর সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। কারণ পুকুরের পানির তাপমাত্রা, লবণাক্ততা ও পিএইচ এর ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে মজুদকালে পোনার আকস্মিক মৃত্যু হতে পারে।

২. পরিবহনকৃত পাত্রের পানি ও পুকুরের পানির তাপমাত্রার পার্থক্য ১৭ সে এর বেশি থাকা উচিত নয়। তাপমাত্রা। ঘণ্টায় ১.৫° সে. এর বেশি কমানো বা বাড়ানো ঠিক নয়।

৩. পরিবহন পাত্র ও পুকুরের পানির লবণাক্ততার তারতম্য ২ পিপিটি এর মধ্যে থাকা উচিত। এই লবণাক্ততা। ঘণ্টায় কমানোর হার ৩ পিপিটি এর বেশি এবং বাড়ানোর হার ১ পিপিটির বেশি হওয়া উচিত নয়।

৪. পিএইচ এর তারতম্য ঘণ্টায় ০.৫ এর কম বা বেশি হওয়া উচিত নয়।

উপকরণ

১. পরিবহনকৃত পলিথিন ব্যাগ ভর্তি পোনা

২. প্লাস্টিকের ১টি ছোট মগ

৩. ধারালো ছুরি

৪. রিফ্লাক্টোমিটার

৫. পিএইচ মিটার

৬. থার্মোমিটার

৭. পেনসিল

৮. রবার

৯. ব্যবহারিক খাতা।

কাজের ধাপ

১. কোনো চিংড়ি খামারের পুকুর পাড়ে যাও

২. পরিবহনকৃত পলিথিন ব্যাগ পুকুরের পানিতে ১০-১৫ মিনিট ভাসিয়ে রাখ।

৩. এবার পলিথিন ব্যাগের মুখ খুলে রিফ্লাক্টোমিটার ও পিএইচ মিটারের সাহায্যে ব্যাগের পানির ও পুকুরের পানির যথাক্রমে লবণাক্ততা ও তাপমাত্রা পরীক্ষা কর। ব্যাগের পানির ও পুকুরের পানির যথাক্রমে লবণাক্ততা ও তাপমাত্রার মধ্যে তারতম্য থাকলে তা ব্যবহারিক খাতায় লিখ।

৪. ব্যাগের পানি ও পুকুরের পানির লবণাক্ততা ও তাপমাত্রার মধ্যে তারতম্য থাকলে এবার মগের সাহায্যে পলিথিন ব্যাগের পানি ও পুকুরের পানি অদল-বদল করে পলিথিন ব্যাগের পানির ও পুকুরের পানির মধ্যে লবণাক্ততা ও তাপমাত্রার সমতা আন।

৫. উভয় পানির মধ্যে লবণাক্ততা ও তাপমাত্রার সমতা হয়েছে কিনা তা আবার পরীক্ষা কর।

৬. লবণাক্ততা ও তাপমাত্রায় সমতা এলে পলিথিন ব্যাগের মুখ পুকুরের পানিতে কাত করে ধর। এ অবস্থায় পোনা আতে আতে সাঁতার কেটে বের হয়ে যাবে।

৭. পোনা অভ্যস্তকরণের পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখ।

 

 

অনুশীলনী- ৬: পোনা বেঁচে থাকার হার পরীক্ষা

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. পোনা মজুদের পর বিভিন্ন কারণে কিছু পোনা বিশেষ করে দুর্বল, রোগাক্রান্ত পোনা মারা যেতে পারে। পোনা মারা গেলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পানির উপর ভেসে উঠে। মৃত পোনা ঢেউ-এর অনুকূলে পাড়ের কাছাকাছি চলে আসে।

উপকরণ

১. সিলভারের সাদা প্লেট/গামলা

২. প্লাস্টিকের ছোট মগ

৩. পেন্সিল

৪. রাবার

৫. ব্যবহারিক খাতা

কাজের ধাপ

১. নিকটস্থ খামারের পোনা মজুদকৃত পুকুরের পাড়ে যাও।

২. পোনা মজুদের ৬-৮ ঘণ্টা পর পুকুরের পাড়ের কাছাকাছি পোনার চলাফেরা পর্যবেক্ষণ কর।

৩. পুকুর পাড়ের কিনারা থেকে মগ দিয়ে মৃত পোনা সংগ্রহ করে প্লেট বা গামলায় রাখ।

৪. এবার মৃত পোনা গণনা করে মোট সংখ্যা বের কর।

৫. মৃত পোনার সমসংখ্যক পোনা পুনরায় মজুদের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. মৃত পোনা পর্যবেক্ষণের পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লেখ।

 

 

অনুশীলনী- ৭: সম্পূরক খাদ্য উপাদান পরিচিতি

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. বাংলাদেশে চিংড়ি খাদ্যের বিভিন্ন উপাদান সহজেই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এসব খাদ্য উপাদানের মধ্যে ফিসমিল, চালের কুঁড়া, তিলের খৈল, গমের ভুসি, ময়দা, চিটা গুড় প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

উপকরণ

১. ফিসমিল

২. চালের কুঁড়া

৩. তিলের খৈল

৪. গমের ভুসি

৫. ময়দা

৬. সয়াবিন তৈল

৭. চিটাগুড়

৮. সরিষার খৈল

৯. ৮/১০ টি পলিথিন ব্যাগ

১০. পেনসিল

১১. ট্রে

১২. ব্যবহারিক খাতা

কাজের ধাপ

১. নিকটস্থ বাজার থেকে ১০০ গ্রাম করে ফিসমিল, চালের কুঁড়া, তিলের খৈল, গমের ভুষি, ময়দা, সয়াবিন। খৈল, সরিষার খৈল, চিটাগুড়, প্রভৃতি উপাদান আলাদা আলাদাভাবে ছোট পলিথিন ব্যাগে সংগ্রহ কর।

২. সংগৃহীত খাদ্য উপাদানগুলো পরীক্ষাগার কক্ষে নিয়ে বিভিন্ন ট্রের উপর সারিবদ্ধভাবে পলিথিন ব্যাগসহ রাখ।

৩. প্রতিটি পলিথিন ব্যাগের মুখ খুলে খাদ্য উপাদানগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর।

৪. প্রতিটি খাদ্য উপাদানের বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহারিক খাতায় লেখ।

৫. এবার খাদ্য উপাদানগুলো পর্যবেক্ষণের পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লেখ।

 

 

অনুশীলনী- ৮: খাদ্য উপাদানসমূহের মিশ্রণের মাধ্যমে চিংড়ির সম্পূরক খাদ্য প্রস্তুতকরণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. যে পরিমাণ খাদ্য তৈরি করা হবে তার শতকরা ৪০ ভাগ চালের কুঁড়া, ২০ ভাগ চিংড়ির মাথা চূর্ণ, ১২.৫ ভাগ সরিষার খৈল, ২০ ভাগ ফিসমিল, ৪ ভাগ সাগু চূর্ণ, ৩ ভাগ মাছের তৈল, ০.২৫ ভাগ লবণ ও ০.২৫ ভাগ। ভিটামিন থাকতে হবে।

খাদ্য উপকরণ

১. চালের কুঁড়া/গমের ভুসি = ৮০০ গ্রাম

২. চিংড়ির মাথা চূর্ণ = ৪০০ গ্রাম

৩. সরিষার খৈল = ২৫০ গ্রাম

৪. ফিসমিল = ৪০০ গ্রাম

৫. সাগু দানা = ৮০ গ্রাম

৬. মাছের তৈল = ৬০ গ্রাম

৭. লবণ =৫ গ্রাম

৮. ভিটামিন = ৫ গ্রাম

উপকরণ

১. একটি ছোট ড্রাম

২. ১টি বালতি

৩. ১টি ছোট মগ

৪. মিনসিং মেশিন

৫. চাটাই

৬. পেনসিল

৭. রাবার

৮. ব্যবহারিক খাতা

কাজের ধাপ

উপরে বর্ণিত খাদ্য উপাদানগুলো নিকটস্থ বাজার থেকে বাজারদর যাচাই করে সংগ্রহ কর।

১. ২. অতঃপর খাদ্য উপাদানগুলো পরীক্ষাগার কক্ষে নিয়ে এসে শুকনা অবস্থায় ড্রামে ভালোভাবে মিশিয়ে ফেল।

৩. উপাদানগুলো উত্তমরূপে মেশানারে পর মগে করে অল্প অল্প পানি দিয়ে সমগ্র মিশ্রণটি ভালোভাবে নেড়ে আঠালো পেস্ট বা মন্ডে পরিণত কর।

৪. এবার এই ম-ের কিছু অংশ হাত দিয়ে ছোট ছোট বল তৈরি কর এবং অবশিষ্ট অংশ সেমাই বা মিনসিং মেশিন। দিয়ে পিলেট খাদ্য তৈরি কর।

৫. পিলেট খাদ্যগুলো এবার চাটাই এর উপর ছড়িয়ে দিয়ে রৌদ্রে ভালো করে শুকিয়ে নাও এবং বলগুলো ভেজা খাদ্য হিসেবে সরাসরি পুকুরে প্রয়োগ কর।

৬. এবার কাজগুলো ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লেখ।

 

 

অনুশীলনী- ৯: গলদা চিংড়ি আহরণ কৌশল পর্যবেক্ষণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. একসাথে একই আকারের পোনা মজুদ করা হলেও একই সময়ে প্রতিটি চিংড়ি সমান বড় হয় না। গলদার পোনা মজুদের ৩-৫ মাসের মধ্যে কিছু চিংড়ির ওজন ৮০০-১০০ গ্রাম হয়ে যায়। গলদা চিংড়ি বাজারজাতকরণের জন্য লাভজনক ওজন হচ্ছে ৭০-৮০ গ্রাম। এক্ষেত্রে আংশিক আহরণ পদ্ধতিতে চিংড়ি ধরা হয়।

২. আংশিক আহরণ পদ্ধতিতে চিংড়ি আহরণের জন্য খেপলা জাল, বেড় জাল বা বাঁশের চাই ব্যবহার করা হয়।

৩. চিংড়ি চাষের পরিকল্পিত মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে অথবা পুকুরের পানির স্তর কমে গেলে সমপূর্ণ আহরণ পদ্ধতিতে চিংড়ি আহরণ করা হয়।

৪. সমপূর্ণ আহরণ পদ্ধতিতে পুকুর শুকিয়ে অথবা বেড় জাল টেনে চিংড়ি ধরা হয়।

৫. অমাবস্যা-পূর্ণিমার তিথিতে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সময় চিংড়ি সহজেই আহরণ করা যায়।

উপকরণ

১. ঝাঁকি জাল

২. বেড় জাল

৩. পাম্প মেশিন

৪. বাঁশের চাই

৫. ৩/৪টি ঝুড়ি (মাঝারি আকারের)

৬. পেনসিল

৭. রাবার

৮. ব্যবহারিক খাতা

৯. চট

কাজের ধাপ

(ক) আংশিক আহরণ

১. অমাবস্যা-পূর্ণিমার তিথিতে নিকটবর্তী কোনো গলদা চিংড়ি পুকুরের পাড়ে যাও।

২. পানি সরবরাহ গেটের কাছে সন্ধ্যার সময় চাই স্থাপন কর।

৩. পরবর্তী দিন সকাল বেলায় চাঁই পানির মধ্যে থেকে পাড়ে তালে এবং চাই থেকে ৭০-৮০ গ্রাম ওজনের গলদা চিংড়ি সংগ্রহ করে ঝুড়িতে রাখ

৪. পুকুরের যে সব স্থানে খাবার প্রয়োগ করা হয় সে সব জায়গায় সন্ধ্যা বা সকাল বেলায় কঁকি জাল দিয়ে ৭০-৮০ গ্রাম ওজনের চিংড়ি আহরণ কর।

৫. আহরণকৃত চিংড়ি ঝুড়িতে রাখ।

৬. আহরণ পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লেখ।

(খ) সমপূর্ণ আহরণ

১. নিকটস্থ কোন গলদা চিংড়ির পুকুরের পাড়ে যাও।

২. এবার প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়ে বেড় জাল দিয়ে যতটা সম্ভব চিংড়ি ধরে ফেল।

৩. এবার পাম্প মেশিন দিয়ে পুকুরের পানি সম্পূর্ণরূপে নিষ্কাশন করে ফেল।

৪. অতঃপর হাত দিয়ে ছোট বড় সব চিংড়ি ধরে ফেল।

৫. আহরিত চিংড়ি ঝুড়িতে রাখ।

৬. আহরণ পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লেখ।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

অনুশীলনী- ১০: আহরিত চিংড়ি বাছাইকরণ অনুশীলন

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. তাপমাত্রা বেশি থাকলে আহরণের প্রথম ৩ ঘণ্টার মধ্যেই চিংড়ির গুণগত অবস্থার বেশি অবনতি ঘটে। এ অবথা রাধেকল্পে অল্প পরিমাণ চিংড়ি আহরণপূর্বক ঠান্ডা পানি দিয়ে ধৌত করে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে।

২. উপযুক্ত মূল্য পাওয়ার জন্য চিংড়ির গ্রেডিং যথাযথভাবে হওয়া একান্ত দরকার। এজন্য আহরিত চিংড়ি খামার থেকেই সঠিকভাবে গ্রেডিং করে বাজারজাতকরণের জন্য প্যাকিং করতে হবে।

উপকরণ

১. চিংড়ি

২. ছোট ড্রাম

৩. পরিষ্কার পানি

৪. বরফ মিশ্রিত পানি

৫. বাঁশের চাটাই/হোগলা

৬. ৪/৫টি ট্রে

৭. পেনসিল

৮. রাবার

৯. চট

১০. ব্যবহারিক খাতা

কাজের ধাপ

১. চিংড়ি ধরার পর পরই ছায়াযুক্ত স্থানে চাটাই বা হাগলার উপর রাখ।

২. এবার চিংড়িগুলো পরিষ্কার পানি দিয়ে ধৌত কর।

৩. পরিষ্কার পানি দিয়ে ধৌত চিংড়িগুলোকে এবার ড্রামের ভেতর বরফ মিশ্রিত পানিতে রাখ।

৪. এবার চিংড়িগুলোকে বরফ থেকে তুলে ট্রেতে রাখ।

৫. অতঃপর চিংড়িগুলো বিভিন্ন গ্রেডে বাছাই কর।

৬. গ্রেড অনুযায়ী চিংড়িগুলো বিভিন্ন ট্রেতে সঠিক নিয়মে বরফ ও চিংড়ি স্তরে স্তরে সাজাও।

৭. ট্রেতে স্তরে স্তরে সাজানো চিংড়িগুলোকে ভেজা চট দিয়ে ঢেকে ছায়াযুক্ত ঠান্ডা স্থানে রাখ।

৮. প্রাথমিক ধৌতকরণ ও গ্রেডিং এর পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লেখ।

 

 

অনুশীলনী- ১১: রোগাক্রান্ত চিংড়ির রোগ পর্যবেক্ষণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

(ক) খামারে নিম্নবর্ণিত লক্ষণ দেখে রোগাক্রান্ত চিংড়ি শনাক্ত করা যায়।

১. পুকুরে হঠাৎ মৃত চিংড়ি পাওয়া গেলে।

২. ভােের চিংড়ি খামারের পাড় ঘেষে বা পানিতে ভেসে চলাচল করলে।

৩. হঠাৎ পানির রঙের পরিবর্তন ঘটলে।

৪. পুকুরের পানি থেকে পচা ডিমের মত গনধ পেলে।

৫. দিনের বেলায় পানির উপর দিয়ে চিংড়ি দ্রুত সাঁতার কাটলে।

৬. পানির তাপমাত্রা ৩২° সে. এর উপরে হলে।

৭. পানির পিএইচ-এর মাত্রা কম বা বেশি হলে।

(খ) এছাড়া চিংড়ির দৈহিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেও চিংড়ির রোগ শনাক্ত করা যায়। নিম্নের এক বা একাধিক লবণ দেখে রোগ শনাক্ত করা যায়।

১. চিংড়ির খোলস বা ক্যারাপেসে কাল বা বাদামি রং দেখা দিলে

২. বহিঃখোলস হালকা সাদা বর্ণ ধারণ করলে

৩. চলন উপাজা, ইউরোপড় এবং ক্যারাপেসে ফাটল দেখা দিলে এবং কালো দা

৪. পুকুর পাড়ের কাছে চিংড়ি অলসভাবে ঘোরাফেরা করলে

৫. চিংড়ির খোলস নরম হলে

৬. ফুলকায় কালো বা হলদে দাগ দেখা গেলে

৭. খাদ্য গ্রহণ না করলে।

৮. দেহ কিংবা লেজ বেঁকে গেলে।

৯. চিংড়ির দেহে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে আঙুল কিছুটা বসে গেলে।

(গ) চিংড়িকে রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে নিম্নবর্ণিত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

১. পুকুর নিয়মিত শুকিয়ে চুন প্রয়োগ করতে হবে।

২. নিয়মিতভাবে ৪০-৫০% পানি পরিবর্তন করতে হবে।

৩. কম ঘনত্বে পোনা মজুদ করতে হবে।

৪. উন্নত মানের সমপূরক খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।

৫. দ্রবীভূত অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. পুকুরের তলদেশ পরিষ্কারের ব্যবস্থা করতে হবে।

উপকরণ

১. চিংড়ি

২. প্লাস্টিকের বালতিত্র

৩. ট্রে

৪. নিডল

৫. ফরসেপ

৬. পেনসিল

৭. রাবার

৮. ব্যবহারিক খাতা

কাজের ধারা

১. নিকটস্থ খামার থেকে ৮/১০ টি চিংড়ি সগ্রহ কর।

২. সংগৃহীত চিংড়ি বালতিতে করে দ্রুত পরীক্ষাগারে নিয়ে আস।

৩. ফরসেপ দিয়ে চিংড়িগুলো বালতি থেকে তুলে ট্রেতে রাখ।

৪. নিড়ল দিয়ে নেড়ে চেড়ে চিংড়িগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর।

৫. চিংড়ির খোলসের রং, ফুলকার রং, উপাঙ্গসমূহের অবস্থা প্রভৃতি পর্যবেক্ষণ কর এবং এসব অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অবস্থা খাতায় লিপিবদ্ধ কর।

৬. চিংড়ির রোগ শনাক্তকরণের পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লেখ।

 

 

অনুশীলনী- ১২: আপদকালীন সমস্যা শনাক্তকরণ, পর্যবেক্ষণ ও মাকোবেলাকরণ/পদক্ষেপ গ্রহণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. চিংড়ি খামারে সাধারণত দুধরনের আপদকালীন সমস্যা দেখা দিতে পারে; অক্সিজেনের অভাবজনিত সমস্যা ও। লবণাক্ততা হ্রাস-বৃদ্ধির সমস্যা।

২. পুকুরে অতিরিক্ত পোনা মজুদ অথবা সরবরাহকৃত অব্যবহৃত খাদ্যের পচনক্রিয়ার ফলে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিতে পারে। এছাড়া একাধারে কয়েকদিন আকাশ মেঘলা থাকলে বা বর্ষণমুখর থাকলেও পুকুরে অক্সিজেনের। স্বল্পতা দেখা দেয়। চিংড়ি চাষের পুকুরের অক্সিজেনের সর্বোত্তম মাত্রা হচ্ছে ৫-৭ পিপিএম।

৩. অতিবৃষ্টির কারণে পুকুরের পানির লবণাক্ততা হ্রাস পায় এবং অনাবৃষ্টির কারণে পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পায়। চিংড়ি চাষের জন্য লবণাক্ততার উত্তম মাত্রা হচ্ছে ১০-২৫ পিপিটি।

উপকরণ

১. ডিও মিটার

৩. পেনসিল

২. রিফ্লাক্টোমিটার

৪. ব্যবহারিক খাতা

কাজের ধাপ

১. নিকটস্থ কোনো খামারের পুকুরের পাড়ে যাও।

২. ডিওমিটার দিয়ে পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ কর এবং তা খাতায় লিখ।

৩. অক্সিজেনের মাত্রা কম হলে পুকুরের পানি পরিবর্তন করে বা প্যাডেল হইলের মাধ্যমে অক্সিজেনের সরাহের ব্যবস্থা করা।

৪. এবার রিফ্লাক্টোমিটার দিয়ে পানির লবণাক্ততা পরিমাপ কর এবং তা খাতায় লিখ।

৫. অতিবৃষ্টিজনিত কারণে লবণাক্ততার মাত্রা কম হলে সুইস গেটের ফলবোর্ড ব্যবহার করে পুকুরের উপরের। স্তরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা।

৬. অনাবৃষ্টির কারণে লবণাক্ততার মাত্রা বেশি হলে গভীর নলকূপের সাহায্যে মিঠা পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা করা।

৭. এবার আপদকালীন সমস্যা পর্যবেক্ষণ ও মোকাবেলার কৌশল ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখ।

 

 

অনুশীলনী- ১৩: চিংড়ি হ্যাচারির বিভিন্ন অংশ পর্যবেক্ষণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

(ক) কোনো হ্যাচারি পরিদর্শন পর্যবেক্ষণের পূর্বে হ্যাচারি কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি নেয়া প্রয়োজন।

(খ) হ্যাচারি কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে হ্যাচারির নিম্নেক্ত অংশসমূহ পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

১. ব্রড চিংড়ি প্রতিপালন ট্যাংক

২. পনিং ট্যাংক

৩. লার্ভা প্রতিপালন ট্যাংক

৪. অ্যালজি চাষের ট্যাংক

৫. আর্টিমিয়া ট্যাংক

৬. রটিফার চাষের ট্যাংক

৭. লোনা পানির জলাধার

৮. মিঠা পানির জলাধার

৯. লোনা পানির ওভারহেড ট্যাংক

১০. পরিস্রাবণ ট্যাংক

১১. পাম্প হাউস

১২. নার্সারি পুকুর

১৩. গুদাম ঘর

১৪. জেনারেটর

 

 

অনুশীলনী- ১৪: একটি চিংড়ি হ্যাচারির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি পর্যবেক্ষণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

(ক) কোনো হ্যাচারির যন্ত্রপাতি পর্যবেক্ষণ করার পূর্বে হ্যাচারি কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে পূর্বানুমতি নেয়া প্রয়োজন।

(খ) হ্যাচারি কর্তৃপক্ষের অনুমতিসাপেক্ষে হ্যাচারির নিম্নবর্ণিত যন্ত্রপাতিসমূহ পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

১. মাইক্রোস্কোপ (Microscope)

২. ব্যালান্স (Balance)

৩. ক্যাথেটার (Catheter)

৪. টিস্যু হামোজেনাইজার (Tissue homogeniser)

৫. সেন্ট্রিফিউজ (Centrifuge)

৬. সিরিঞ্জ (Syringe)

৭. ডিসেক্টিং বক্স (Dissecting box)

৮. থার্মোমিটার (Thermometer)

৯. রিফ্লাক্টোমিটার (Refractometer)

১০. পিএইচ মিটার (PH meter)

১১. অক্সিজেন মিটার (Oxygen meter)

১২. রেফ্রিজারেটর (Refrigerator)

১৩. ডিপ ফ্রিজার (Deep freezer)

১৪. অ্যারেটর (Aerator)

১৫. জেনারেটর (Generator)।

১৬. বৈদ্যুতিক চুলা (Electric heater)

১৭. অক্সিজেন সিলিন্ডার (Oxygen cylinder)

১৮. সেক্কি ডিস্ক (Secchi disk)

১৯. প্ল্যাংকটন গণনাকারী এসআর সেল গণনা

২০. ট্রলি / পিক-আপ (Plankton counting S.R. cell)

২১. হ্যাক ‘স’ করাত (Hack saw)

২২. বেন্ডার (Blender)

২৩. ডেসিকেটর (Desiccator)

২৪. হ্যাক-কীট (Hach-kit)

উপকরণ

১. মেজারিং টেপ

২. রাবার

৩. পেনসিল

কাজের ধারা

১. নিকটস্থ কোনো চিংড়ি হ্যাচারিতে গমন কর।

২. হ্যাচারির বিভিন্ন যন্ত্রপাতিগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর।

৩. হ্যাচারির বিভিন্ন যন্ত্রপাতিসমূহ পর্যবেক্ষণকালে এসব যন্ত্রপাতির ব্যবহার/পরিচালনা সম্বন্ধে হ্যাচারি ব্যবস্থাপকের নিকট থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ কর।

৪. হ্যাচারির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখ।

 

 

অনুশীলনী- ১৫: ডিমওয়ালা গলদা চিংড়ি পর্যবেক্ষণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. গলদা চিংড়ি স্বাদু পানির সকল জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে পরিপক্বতা লাভ করে।

২. বাগদা চিংড়ির মত এদের এ্যাবলেশনের প্রয়োজন হয় না।

৩. স্ত্রী গলদা চিংড়ির উদরাঞ্চলের সন্তরণ পদে নিষিক্ত ডিম জমা থাকে।

৪. উদরাঞ্চলে রাখা ডিম ফুটতে ১৮-২৩ দিন সময় লাগে।

উপকরণ

১. কুপ নেট/ঝাঁকি জাল

২. ট্রে

৩. স্বচ্ছ পানিসহ গামলা

৪. ফরসেপ

৫. পেনসিল

৬. রাবার

৭. ব্যবহারিক খাতা

কাজের ধাপ

১. নিকটবর্তী কোনো হ্যাচারি/গলদা চিংড়ির খামারে গমন কর।

২. হ্যাচারির ব্রড ট্যাংক থেকে কুপ নেট দিয়ে গলদা চিংড়ি সংগ্রহ কর।

৩. ধৃত চিংড়ি গামলার পরিষ্কার পানিতে রাখ।

৪. গামলা থেকে পুরুষ চিংড়িগুলো সরিয়ে ফেল।

৫. স্ত্রী ডিমওয়ালা চিংড়ি সাবধানে ট্রেতে রাখ।

৬. ডিমওয়ালা চিংড়ি সাবধানে পর্যবেক্ষণ কর।

৭. চিংড়ির দেহের ডিমের অবস্থান, ডিমের বর্ণ, ডিমের আকার ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ কর।

৮. অনুশীলনকৃত কার্যক্রমটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ কর।

 

 

অনুশীলনী- ১৬: চিংড়ির নার্সারি পুকুর প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. নার্সারি পুকুরের আয়তন খামারের মোট উৎপাদন এলাকার ১/১০ ভাগ হওয়া উচিত। তবে একটি নার্সারি। পুকুরের আয়তন ৫০০ বর্গমিটার হলে ভালো হয়।

২. দোআঁশ, এটেল বা বেলে দোআঁশ মাটি নার্সারি পুকুরের জন্য ভালো।

উপকরণ

১. চুন

২. গোবর সার

৩. ইউরিয়া সার

৪. টিএসপি সার

৫. পাওয়ার ট্রিলার

৬. পেনসিল

৭. ব্যবহারিক খাতা

কাজের ধারা

১. উপকূলীয় অঞ্চলের চিংড়ি চাষ এলাকায় কোনো নার্সারি পুকুরে গমন কর।

২. নির্মিত নার্সারি পুকুরের তলদেশ ২-৫ সপ্তাহ সূর্যালোকে শুকিয়ে নিতে হবে।

৩. পুকুরের তলদেশ লাঙল বা ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে মাটির পিএইচ অনুযায়ী চুন প্রয়োগ করতে হবে।

৪. চুন প্রয়োগের ৪/৫ দিন পর ৮০০-১০০০ কেজি/একর গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে।

৫. এরপর একর প্রতি ২০ কেজি ইউরিয়া ও ৩৮ কেজি টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে।

৬. সার প্রয়োগের পর ৬ ইঞ্চি পানি প্রবেশ করিয়ে ১০-১২ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

৭. অতঃপর পানির অভীরতা ২-৩ ফুট বাড়াতে হবে।

৮. পানিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাকৃতিক খাদ্য না জন্মালে পুনরায় ৮ কেজি/একর ইউরিয়া সার এবং ২০ কেজি/- একর টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে। এর পর ৫-৬ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

৯. নার্সারি পুকুর প্রতুতির ধাপগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর।

১০. ব্যবহারিক খাতায় নার্সারি পুকুর প্রস্তুতির ওপর প্রতিবেদন লেখ।

 

 

অনুশীলনী- ১৭: একটি খামারে চিংড়ির রোগ নির্ণয় সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও পরামর্শ প্রদান

প্রাসঙ্গিক তথ্য

কোনো খামারের চিংড়ির যে কোনো রোগ নির্ণয়ের জন্য খামারটির বিস্তারিত তথ্য জানা বিশেষ প্রয়োজন। খামার প্রভুতির বিভিন্ন পদক্ষেপ, খামার ব্যবস্থাপনার অতীত ও বর্তমান কার্যক্রম রোগ নির্ণয়ের জন্য জানা, অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া রোগ শনাক্তকরণের জন্য খামারের মাটি ও পানির ভৌত রাসায়নিক গুণাগুণ সংক্রান্ত তথ্য ও রোগাক্রান্ত চিংড়ির বাহ্যিক লক্ষণসমূহ ভালোভাবে জানা দরকার।

উপকরণ

১. ওয়াটার এনালাইজার

২. সয়েল এনালাইজার

৩. থার্মোমিটার

৪. সেক্কি ডিক ইত্যাদি

কাজের ধাপ

১. নিকটস্থ কোনো চিংড়ি খামার বা পুকুরে গমন করা।

২. খামার/পুকুর মালিকের সাথে খামারের সমস্যা ও রোগবালাই সম্পর্কে আলোচনা কর।

৩. নমুনা ছকে তথ্যসমূহ লিপিবদ্ধ কর।

৪. মাটি ও পানির ভৌত রাসায়নিক গুণাগুণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ কর।

৫. বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ শেষে সকল অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে আলোচনা কর ও সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ কর।

৬. খামারের জন্য পরবর্তী করণীয় কার্যক্রম সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান কর।

৭. অনুশীলনকৃত কার্যক্রম ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ কর।

(১) খামারের তথ্যাবলি

– খামার মালিকের নাম ও ঠিকানা

– খামারের অবস্থান

– আয়তন

– খামার স্থাপনের সাল

– পানির উৎস

(২) খামারের জৈবিক তথ্য

– চাষকৃত প্রজাতি

– মজুদ ঘনত্ব

– পোনা মজুদের তারিখ

– রোগাক্রান্ত মাছ/চিংড়ির শতকরা হার

– রোগ শুরুর তারিখ

– প্রয়োগকৃত খাদ্যের প্রকার ও পরিমাণ

– খাদ্য প্রয়োগের সময়

(৩) ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তথ্য

– পুকুর প্রতুতির পদক্ষেপসমূহ

– পুকুর শুকানো হয়েছে কিনা

– চুন প্রয়োগ করা হয়েছিল কিনা

– অন্য কোনো রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করা হয়েছিল কিনা

– নিয়মিত পানি পরিবর্তন করা হয় কিনা

পানি পরিবর্তনের হার কর নাম ও সারের পরিমাণ

(৪) পানির রাসায়নিক গুণাগুণ

– পানির তাপমাত্রা

– পিএইচ এ্যালকালাইনিটি

– দ্রবীভূত অক্সিজেন অ্যামোনিয়া

– ঘোলাজ্ব

(৫) রোগের লক্ষণ

– মাছ/চিংড়ির শরীরে দাগ, ঘা, ক্ষত প্রভৃতি

– চিংড়ি মাছের চলাচল, সাঁতার কাটার ধরন

– ফুলকার অবস্থা

(৬) পরজীবী সংক্রান্ত

– বহিঃপরজীবী

– অন্তঃপরজীবী

– ছত্রাক

– ব্যাকটেরিয়া

(৭) অন্যান্য সমস্যা

(৮) সুপারিশ

 

 

অনুশীলনী- ১৮: মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে গলদার লার্ভার বিভিন্ন ধাপ পর্যবেক্ষণ

প্রাসঙ্গিক তথ্য

১. গলদা চিংড়ির লার্ভা মোট ১১টি পর্যায় বা ধাপ অতিক্রম করে পোস্ট লাভা পর্যায়ে পৌঁছায়। তাপমাত্রা, খাদ্য পানির গুণাগুণের সাথে এ সময়ের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।

২. গলদা চিংড়ির লার্ভার ১১টি পর্যায়ের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:

উপকরণ

১. মাইক্রোস্কোপ

২. লার্ভার বিভিন্ন পর্যায়ের স্নাইড

৩. রবার

৪. পেনসিল

৫. ব্যবহারিক খাতা

কাজের ধাপ

১। ল্যাবরেটরিতে গমন কর।

২। মাইক্রোস্কোপ সেট কর।

৩। লার্ভার প্রত্যেকটি পর্যায়ের স্থায়ী স্লাইড মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ কর।

৪। লার্ভার প্রত্যেকটি পর্যায়ের শনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যবেক্ষণ কর।

৫। লার্ভার প্রত্যেকটি পর্যায়ের পর্যবেক্ষিত বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ কর।

৬। লার্ভার প্রত্যেকটি পর্যায়ের চিত্র ব্যবহারিক খাতায় অঙ্কন কর।

৭। অনুশীলন কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করা।

 

 

তথ্য সূত্র

১. কাদির, মো. ম. ২০০০। শ্রিম্প কালচার অ্যান্ড ব্রিডিং-১, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা।

২. কাদির, মো. ম. ২০০০। শ্রিম্প কালচার অ্যান্ড ব্রিডিং-২, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা।

৩. কাদির, মো. ম: মো. ই. হোসেন, ১৯৯৭। চিংড়ি চাষ ব্যবস্থাপনা, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, ২ ঢাকা।

৪. আহমেদ, ম.ক. ১৯৯৭। চিংড়ি চাষ ও হ্যাচারী ব্যবস্থাপনা, হক প্রিন্টার্স, ১৪৩/১ আরামবাগ, ঢাকা।

৫. নূরুজ্জামান, মো. ২০০৫। মাছের স্বাস্থ্য পরিচর্যা, আহরণ ও সংরক্ষণ, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা।

৬. জাতীয় মৎস্য পক্ষ সংকলন, ২০০৫। মৎস্য অধিদপ্তর, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ, ঢাকা।

৭. গলদা চিংড়ি চাষ, ২০০৭। স্বাদু পানির চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্প, মৎস্য অধিদপ্তর, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়।

৮. পাল,সুকু, ১৯৯৫। চিংড়ি জীববিদ্যা ও চাষ ব্যবস্থাপনা, মনিকা পাবলিশিং হাউজ, ঢাকা, বাংলাদেশ।

৯. বাফরু, ১৯৯৬। গলদা চিংড়ির চাষাবাদ কারিগরি নির্দেশিকা, বাংলাদেশ এ্যাকুয়াকালচার এন্ড ফিসারিজ রিসার্চ ইউনিট, ঢাকা, বাংলাদেশ।

১০. Mazid M.A; and M.Kamal 1997. Fish and Shrimp Culture Management, Proceed- ings of National Seminar on the Occasion of Fish Fortnight 1996 BFRI Proc. No.593 pp.

১১. Mazid M.A; M.S. Hossain and Others, 1997, Gear Selectivity Study of Floodplain Fishery in Bangladesh. BFRI, Tech. Rep. 14-30 pp.

১২. Connell 1.1 1995. Control of Fish Quality, Fishing News Book, Oxford U.K. 245 pp.

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version