Site icon Fisheries Gurukul [ মৎস্য গুরুকুল ] GOLN

দেশী মাগুর মাছের একক চাষ ব্যবস্থাপনা

দেশী মাগুর মাছের একক চাষ ব্যবস্থাপনা

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় দেশী মাগুর মাছের একক চাষ ব্যবস্থাপনা।

দেশী মাগুর মাছের একক চাষ ব্যবস্থাপনা

বাজারে ব্যাপক চাহিদা ও উচ্চমূল্য এবং অত্যন্ত লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও গোনার অপ্রতুলতার কারণে দেশী সাজরের চাষ আশানুরূপ প্রসার লাভ করছে না। প্রাকৃতিক উৎসে আর তেমন দেশী মাগুরের পোনা পাওয়া যায় সা। তদুপরি প্রাকৃতিক উৎস বা হ্যাচারি থেকে মাগুর মাছের মানসম্পন্ন পোনা সংগ্রহ করে চাষ করা গেলে এ মাছটির চাষ যেমন লাভজনক হবে তেমনি প্রয়োজনীয় প্রাণিজ আমিষও পাওয়া যাবে।

মাগুর মাছ চাষের সুবিধা

পোনা মজুদ :

প্রাকৃতিক উৎস থেকে যে-জুন মাসে পোনা সংগ্রহ করে মজুদ করতে হবে। একক পদ্ধতিতে মাগুর মাছ চাষে ২-০ ইঞ্চি আকারের পোনা প্রতি শতাংশে ১০০-২০০টি মপ করা যায়। কিন্তু একক চাষ ছাড়া রুইজাতীয় মাছের সাথে মিশ্রচাষে মানুর মাছের পোনা শতাংশ প্রতি ৫০-১০০টি হারে ছাড়া যায়। পোনা শোধন করার জন্য পোনা ছাড়ার সমর ১০ লিটার পানিতে ১ চা চামচ (৫ গ্রাম) পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট প্রাণে ১-২ মিনিট রেখে পুকুরে ছাড়লে পোনা মৃত্যুহার কম হয়।

 

চিত্র- ৭ সাক্ষর মাছ

 

 

মজুদ পরবর্তী সার প্ররোগ :

অন্যান্য মাছ চাষের ন্যায় মিশ্রচাষের ক্ষেত্রে নিয়মিতভাবে ১০ দিন পর সার প্রয়োগ করতে হবে। গোবর প্রতি শতাংশে ১-২ কেজি এবং ইউরিয়া ও টিএসপি ১০০ গ্রাম হারে ১০ দিন পর পর সারা পুকুরের পানিতে গুলিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে। তবে পুকুরের পানিতে অতিরিক্ত শ্যাওলা দেখা দিলে বর্ষাকানে ও শীতকালে সার এরোগের হার কমিয়ে দিতে হবে।

সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ :

মাগুর মাছ পুকুরের তলার আধা-পচা পাতা, কীটপতঙ্গ ও তাদের শূককীট ইত্যাদি খেয়ে থাকে । তা ছাড়া মাগুর মাছের খাদ্য হিসেবে শিং মাছের অনুরূপ উপকরণ দিয়ে সম্পূরক খাদ্য তৈরি করে প্রয়োগ করা যায়। গরু ছাগলের নাড়িভুঁড়ি কুচিকুচি করে কেটে সরাসরি পুকুরে ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া কেঁচো টুকরো টুকরো করে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে কম খরচে ভালো ফল পাওয়া যায় । সাধারণত পুকুরে বিদ্যমান মাছের মোট ওজনের শতকরা ৭-৮ ভাগ খাবার প্রয়োগ করতে হয়। সকাল সন্ধায় দুই বার খাবার প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ফিশমিল বা শুটকী মাছের গুঁড়া অবশ্যই কীটনাশকমুক্ত হওয়া উচিত।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

রোগ ও প্রতিকার :

রোগ প্রতিরোধের লক্ষ্যে মাগুর চাষের পুকুরে বর্ষা শেষে কিন্তু শীত আসার আগে একবার প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন ২ ভাগে ভাগ করে ৪-৫ দিন পর পর পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে। মাগুর মাছ ক্ষতরোগ ও পেটফোলা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। রোগে আক্রান্ত হলে পুকুরে চুন বা লবণ শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে প্রয়োগ করতে হবে এবং রোগাক্রান্ত মাছগুলোকে পুকুর থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।

মাগুর মাছের বৃদ্ধি হার :

গুণগত ও পুষ্টিমানসমৃদ্ধ খাবারের ওপর মাগুর মাছের বৃদ্ধি নির্ভর করে । সঠিক উপায়ে পরিচর্যা করলে মাগুর মাছ ৬-৮ মাসের মধ্যে ১০০-২০০ গ্রাম পর্যন্ত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং এদের বাঁচার হার ৭০-৭৫% পাওয়া যায় ।
মাছ আহরণ : পুকুরের পানির গভীরতা সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামলে মাগুর মাছ ধরার ব্যবস্থা নিতে হবে। বেড় জালে সব মাছ ধরা পড়ে না । তাই পুকুর সেচ দিয়ে সব মাছ ধরে ফেলতে হবে। অনেক সময় কাদার মধ্যে বেশ কিছু মাছ লুকিয়ে থাকে। পুকুর সেচের ৮-১০ ঘণ্টার মধ্যে ঐ মাছগুলো কাদা থেকে বেরিয়ে এলে তারপর ধরতে হয় । মিশ্রচাষের ক্ষেত্রে পুকুরের পানি কমার সাথে সাথে রুই জাতীয় মাছ আংশিক আহরণের মাধ্যমে কমিয়ে ফেলতে হবে।

সম্ভাব্য আয় ব্যয়

সারণি-১৭ : ১০ শতাংশ আয়তনের পুকুরে সম্ভাব্য উৎপাদন আয় ও ব্যয়ের হিসাব

 

 

উৎপাদন ও আয়

মাগুর মাছ ৭৫ কেজি

আয় ও ব্যয়

প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা করে ৪৫০ ×৭৫ = ৩৩,৭৫০ টাকা

নিট লাভ = ৩৩,৭৫০ – ১৫, ১০০ = ১৮, ৬৫০ টাকা

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version