আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-মনোসেক্স তেলাপিয়ার পোনা উৎপাদন কৌশল
মনোসেক্স তেলাপিয়ার পোনা উৎপাদন কৌশল
অনেক দেশে তেলাপিয়া চাষ জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও উষ্ণ ও গ্রীষ্ম অঞ্চলীয় আবহাওয়ায় এদের প্রায় সব বাণিজ্যিক প্রজাতির ক্ষেত্রেই দ্রুত পরিপক্বতার ফলে পোনা উৎপাদন একটি প্রধান সমস্যা । এই কারণে চাষকালীন সময়ে এদের অধিক হারে প্রজননের জন্য পোনার ঘনত্ব প্রচুর বৃদ্ধি পায় এবং আহরণযোগ্য মাছের বৃদ্ধি ও উৎপাদন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কমে যায় ।
এই সমস্যা উত্তরণের জন্য ১৯৬০ সাল থেকেই এই মাছ চাষে অনিয়ন্ত্রণযোগ্য প্রজনন বন্ধ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রজাতির উন্নয়ন ঘটেছে। এসব পদ্ধতিগুলো হলো পোনা বাছাই করে স্ত্রী ও পুরুষ মাছ আলাদাকরণ, সংকরায়ণ করে ও হরমোন প্রয়োগ করে পুরুষ পোনা উৎপাদন এবং জেনেটিক পদ্ধতির মাধ্যমে মনোসেক্স পোনা উৎপাদন।
সংকরায়ণ ও জেনেটিক পদ্ধতির মাধ্যমে তেলাপিয়া সব পুরুষ জাতের পোনা উৎপাদন খুবই কষ্টসাধ্য বিধায় বর্তমানে এন্ড্রোজেন হরমোন প্রয়োগে মনোসেক্স সব পুরুষ জাতের পোনা উৎপাদন খুব সহজ কৌশল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে । এই পদ্ধতিতে ক্ষুদে পোনাকে প্রথম খাবার গ্রহণের সময় হরমোন মিশ্রিত খাবার প্রয়োগ করে পুরুষ পোনায় রূপান্তরিত করা হয় ।
স্বাস্থ্য সচেতন ভোক্তারা মনে করেণ যে, হরমোন প্রয়োগে উৎপাদিত পুরুষ তেলাপিয়া মানুষের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে । কিন্তু অদ্যাবধি এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়নি। ইতিমধ্যে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, এন্ড্রোজেন হরমোন প্রয়োগের ১ মাসের মধ্যে মাছের শারীরিক টিস্যুতে হরমোন এর কোনো অস্থিত্ব বিদ্যমান থাকে না (Green and Teichert Codding 2000) ।

এশিয়ার থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনে বাণিজ্যিকভাবে হরমোন প্রয়োগে তেলাপিয়ার মনোসেক্স পোনা উৎপাদন করা হয়ে থাকে । হরমোন প্রয়োগে মনোসেক্স তেলাপিয়া উৎপাদন পদ্ধতির সুবিধাসমূহ নিম্নরূপ:
১ । এই পদ্ধতি সহজ ও অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক ।
২ । অত্যাধুনিক গবেষণাগার ও যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় না ।
৩ । সর্বোপরি উৎপাদন খরচ খুব কম ।
৪ । ৯০-৯৫% মনোসেক্স পুরুষ জাতের তেলাপিয়া উৎপাদন করা যায় ।
৫ । অধিক উৎপাদন ও বেশি মুনাফার নিশ্চয়তা দেয় ।
আরও দেখুন: