Site icon Fisheries Gurukul [ মৎস্য গুরুকুল ] GOLN

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চিংড়ি সম্পদের ভূমিকা | অধ্যায়-২ | শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চিংড়ি সম্পদের ভূমিকা। যা ” গলদা চিংড়ি চাষ ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত ।

শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চিংড়ি সম্পদের ভূমিকা

 

 

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চিংড়ি সম্পদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উন্নতমানের আমিষজাতীয় খাদ্যের অন্যতম উৎস হিসেবে সারা বিশ্বে চিংড়ি জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে। ফলে বিশ্ববাজারেও চিংড়ির চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন দেশে চিংড়ির উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রাকৃতিক উৎস থেকে উৎপাদন ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেলেও খামার থেকে উৎপাদিত চিংড়ির পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে বাংলাদেশের উপকূলীয় বাগদা চিংড়ি খামারের সংখ্যা ৩২,০০০ টি এবং আয়তন প্রায় ১,৭০,০০০ হেক্টর।

অপরদিকে গলদা চিংড়ি খামারের সংখ্যা ১০৫০০০ টি (ছোট ঘের/পুকুরসহ) এবং আয়তন প্রায় ৪৭,০০০ হেক্টর। স্বাধীনতা উত্তরকালে বাংলাদেশ চিংড়ি রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বিশ্ববাজারে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে খামার থেকে মাত্র ৪০০০ মে. টন চিংড়ি উৎপাদিত হয়।

বর্তমানে এ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ৫৫,০০০ মে, উনে উন্নীত হয়েছে। ১৯৯৮১-৮২ সালে চিংড়ি রপ্তানি করে আহ হয় ৩৮২ কোটি টাকা। বর্তমানে এ আয়ের পরিমাণ প্রায় ৪০০০ কোটি টাকা। প্রাকৃতিক পরিবেশে উৎপন্ন বাংলাদেশের চিংড়ির গুণগতমান ও বিশ্ববাজারে যথেষ্ট সুনাম অর্জনে সক্ষম হয়েছে। তবে বাংলাদেশে চিংড়ি চাষের এলাকা বৃদ্ধি পেলেও হেক্টর প্রতি উৎপাদন আশানুরূপ বৃদ্ধি পায়নি।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণের ফলে উপকূলীয় এলাকার দরিদ্র জনসাধারণের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১ লক্ষেরও বেশি দরিদ্র জনগাষ্ঠেী সমুদ্র উপকূল ও নদীতে পোনা আহরণের কাজে এবং প্রায় ৪ লক্ষ লাকে সরাসরি চিংড়ি চাষের সাথে জড়িত (হেক্টর প্রতি ২ জন হিসেবে)।

এছাড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, ডিপো, হ্যাচারি, নার্সারি, আড়ৎ ও অবতরণ কেন্দ্র, চিংড়ি আহরণ-সামগ্রী প্রস্তুত ও পরিবহন ইত্যাদি কাজে সার্বক্ষণিক ১.৫ লক্ষ লোক নিয়োজিত। দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে চিংড়ি সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

তবে পরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষ করা হলে উৎপাদন ও আয় দ্বিগুণ/তিনগুণ পরিমাণে বৃদ্ধিসহ এ ক্ষেত্রে আরো কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব। পুষ্টি সরবরাহ, কর্মসংস্থান, দারিদা বিমোচন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনসহ অন্যান্য আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডে চিংড়ি শিল্পের অবদান সর্বাধিক। চিংড়িই বাংলাদেশের এমন একটি শিল্প যেখানে আমদানিকৃত সামগ্রী ছাড়াই এ পণ্য উৎপাদিত হয়ে আসছে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে।

বাংলাদেশে প্রায় ১,৫০,০০০ হেক্টর জমিতে পর্যায়ক্রমে ধান ও চিংড়ি চাষ এবং চিংড়ি ও রুই জাতীয় মাছের চাষ হয়। এ প্রক্রিয়ায় এক ফসলে চিংড়ির বার্ষিক গড় উৎপাদন ২০০ কেজি/হে, এবং ধানের বার্ষিক গড় উৎপাদন ২ ২.৫ মে. টন/হে।

 

 

পর্যায়ক্রমিক উৎপাদনে মাছের উৎপাদন ১-১.৫ টন/হে, যা জাতীয় আমিষের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রায় ৩০,০০০ হেক্টর জমিতে পর্যায়ক্রমে লবণ ওচিংড়ির চাষ হচ্ছে এবং মাত্র ১৫-২০ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ির একক চাষ হচ্ছে (অন্যান্য প্রাকৃতিক মাছসহ)। গলদা চাষ এলাকায় খামার পার্শ্বস্থ বাঁধে শাকসবজি, ফল, পশুখাদ্য ইত্যাদি উৎপাদিত হচ্ছে এবং জৈবিক ব্যবস্থাপনায় এ সকল ফসল কীটনাশক ছাড়া উৎপাদিত বলে “অর্গানিক পণ্য হিসেবে বিশেষভবে সমাদৃত হচ্ছে।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version