আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – চিংড়ির উপাঙ্গসমূহ । যা ” গলদা চিংড়ির জীববিদ্যা ” অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত ।
শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।
চিংড়ির উপাঙ্গসমূহ
চিংড়ির উপাঙ্গসমূহ
চিংড়ির দেহে সর্বমোট ১৯ জোড়া উপাঙ্গ রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জোড়া উপাঙ্গ শিরোবক্ষ অংশে এবং ৬ জোড়া উদর অংশে অবস্থিত। তবে একটু ভালোভাবে লক্ষ করলে দেখা যায় পাঁচ জোড়া শিরোদেশে (Cephalic), অটি জোড়া বক্ষদেশে (Thoracic) এবং হয় জোড়া উপাঙ্গ উদর অঞ্চলে অবস্থিত। উপালগুলো সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে; যথা-
১. ইউনিরেমাস (Uniramous)
২. বাইরেমাস (Biramous) ও
৩. মাল্টিরেমাস বা কলিওরেমাস (Folioramous)
তবে গলদা চিংড়ির প্রথম উপাঙ্গ ছাড়া অন্য সবগুলো দ্বিবাহু বিশিষ্ট। মূল অংশটি দেহের সাথে যুক্ত হয়ে থাকে যা প্রটোপোডাইট নামে পরিচিত। প্রটোপোডাইট (Protopodite) দুটি পডোমেরিস দ্বারা যুক্ত থাকে। নিচেরটিকে কক্সোপোডাইট এবং উপরের টিকে রেলোপোডাইট বলে।
প্রটোপোডাইট দুটি শাখায় বিভক্ত; ভিতরের শাখাটিকে এন্ডোপোডাইট এবং বাইরের শাখাটিকে এক্লোপোডাইট বলে। চিংড়ির উপাঙ্গসমূহ সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা- স্টেনোপোডিয়াম (Stenopodium) বা সরু পা এবং ফাইলোপোডিয়াম (Phylopodium) বা চ্যান্টা আকৃতির পা।
চিংড়ির শিরোপাল
১. শুক্রাণু (Antennule)
২. ঋঙ্গ (Antenna)
৩. ম্যান্ডিবুল (Mandible)
৪. ম্যাক্সিলুলা (Maxilula) ও
৫. ম্যাক্সিলা (Maxila)
১. শুক্রাণু (Antennule): দেহের প্রথম জোড়া উপাঙ্গকে শুক্রাণু বলে। শুক্রাণু প্রটোপোভাইট যায়া পঠিত এবং এটা সাধারণত প্রি-কক্সা, কক্সা ও বেসিস নামক তিনটি অংশে বিভক্ত। প্রি-কক্সা অংশটি বড় এবং এই অংশে চিংড়ির ভারসাম্য রক্ষার অঙ্গ স্ট্যাটোসিস্ট অবস্থিত।
২. ওদ (Antenna): শুক্রাণুর ঠিক নিচে এবং পিজদস্থল থেকে ওদের উৎপত্তি হয়েছে। ওঙ্গ চিংড়ির দ্বিতীয় জোড়া শিরোপাজ। শুঙ্গ কক্সা ও বেসিস নামক দুটি অংশে বিভক্ত। এই উপাঙ্গের এপোডাইট বড় এবং এন্ডোপোডাইট লম্বা। এন্ডোপোডাইটে অবস্থিত স্কোয়ামা (Squama) সাঁতার কাটার সময় চিংড়ির দেহের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে থাকে।
৩. ম্যান্ডিবুল (Mandible): ম্যান্ডিবুল বা চোয়াল মুখের দুই পার্শ্বে অবস্থিত একজোড়া শক্ত উপাঙ্গ। ম্যান্ডিবুলের কক্সা অংশে চামচ আকৃতির এপাকাইসিস এবং মূল অংশে মোলার প্রসেস (Molar process) ইনসিজর প্রসেস (Incisor process) অবস্থিত। মোলার প্রসেসে ৫-৬ টি ডেন্টাল প্লেইট এবং ইনসিজর প্রসেসে ৩টি দাঁত থাকে। ম্যান্ডিবুলের সাহায্যে চিংড়ি খাদ্যবস্তু গ্রহণ ও শেষণ করে থাকে।
৪. ম্যাক্সিলুলা (Mazilula): চিংড়ির উপাঙ্গগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট উপাদটির নাম ম্যাক্সিলুলা। এই উপাঙ্গটি লেবিয়ামের পিছনে অবস্থিত এবং পাতলা আঁইশের ন্যায় তিনটি অংশ দ্বারা গঠিত। এর কিনারা ছোট ছোট সিটা দ্বারা আবৃত থাকে। ম্যাক্সিলুলার এন্ডোপোডাইট বাকানো এবং অগ্রভাগ দুভাগে বিভক্ত। কিন্তু এর কোনো এক্সোপোডাইট নেই। এই উপাঙ্গ খাদ্যবস্তু টুকরো টুকরো করে মুখের ভেতরে প্রবেশ করাতে সহায়তা করে থাকে।
৫. ম্যাক্সিলা (Maxiln): এই উপাঙ্গ জোড়া পাতলা আঁইশের মত এবং ম্যাক্সিলুলার পিছনে অবস্থিত। এই উপালের কক্সা বেশ বড় এবং বেসিস দুভাগে বিভক্ত হয়ে নেখোবেসে পরিণত হয়। ম্যাক্সিলা খাদ্য গ্রহণ ও শ্বসন কাজে সাহায্য করে থাকে।
আরও দেখুনঃ