আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-ফিশ কালচার অ্যান্ড ব্রিডিং-২ দ্বিতীয় পত্র ব্যবহারিক
ফিশ কালচার অ্যান্ড ব্রিডিং-২ দ্বিতীয় পত্র ব্যবহারিক
জব নং-০১
জবের নাম : গুণগত মানসম্পন্ন ব্রুড মাছ সংগ্ৰহ ।
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা : সুস্থ সবল নীরোগ পিতা মাতাই সুস্থ সবল এবং টেকসই বংশধর উৎপন্ন করতে পারে । ব্রুড মাছ সংগ্রহের সময়
সংগৃহীত মাছের বৃদ্ধি হার বেঁচে থাকার হার, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খাদ্য রূপান্তর হার (FCR), ডিম উৎপাদন ক্ষমতা ইত্যাদি সকল বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে । ভালো গুণসম্পন্ন রেণু উৎপাদনের জন্য নিম্নোক্ত উৎস থেকে ব্রুড মাছ সংগ্রহ করা আবশ্যক :
১ । প্রাকৃতিক উৎস থেকে অর্থাৎ নদ-নদী বা প্লাবন ভূমি হতে বন্য জাতের মাছ সংগ্রহ করে।
২। হ্যাচারিতে দ্রুত বর্ধনশীল পোনা সংগ্রহ করে ।
৩। ব্রুড ব্যাংক থেকে ব্রুড মাছ সংগ্রহ করে ।
৪ । এক হ্যাচারি থেকে অন্য হ্যাচারীতে ব্রুড আদান প্রদান করে অর্থাৎ ব্রুড বিনিময় করে ।
(বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত ব্রুড মাছকে আলাদা আলাদা পুকুরে রাখতে হবে)
উপকরণ :
১। হ্যাচারি পর্যন্ত যাওয়ার জন্য উপযুক্ত যানবাহন
২। খাতা ও পেন্সিল
৩ । ব্রুড মাছ
৪ । জাল
৫ । হাপা
কাজের ধাপ :
১। বিদ্যালয়ের নিকটতম স্থানে কোনো মৎস্য প্রজনন হ্যাচারি মালিকের সাথে হ্যাচারি পর্যবেক্ষণের বিষয়ে
পূর্বে যোগাযোগ করি।
২ । নির্দিষ্ট তারিখে শ্রেণি শিক্ষকসহ মৎস্য প্রজনন হ্যাচারি পর্যবেক্ষণের জন্য গমন করি ।
৩ । হ্যাচারি মালিক নিয়োজিত লোকের কাছ থেকে ঐ হ্যাচারির ব্রুড সংগ্রহের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করি ।
৪ । নিকট আত্মীয়ের সম্পর্কের মাছ থেকে পোনা উৎপাদন অর্থাৎ অন্তঃপ্রজনন সম্পর্কে ধারণা লাভ করি ।
৫ । পর্যবেক্ষণের বিভিন্ন তথ্য ও বিষয়গুলো ধারাবাহিক ভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিপিবন্ধ করি ।
জব নং-০২
জবের নাম : গুণগত মান সম্পন্ন ব্রুড মাছ প্ৰতিপালন
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা :
একটি হ্যাচারির প্রাণ হলো ব্রুড মাছ । প্রজনন সফলতা ও ভালো মানের পোনা প্রাপ্তি বহুলাংশে নির্ভর করে ব্রুড মাছ ব্যবস্থাপনার উপর উন্নত গুণ সম্পন্ন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ হ্যাচারি নিয়ন্ত্রণাধীন ও ব্যবস্থাপনাধীন পুকুরে যথাযথভাবে পরিচর্যা করতে হবে ।
১ । বিভিন্ন উৎস থেকে ব্রুড মাছ সংগ্রহ করি।
২ । সংগৃহীত ও বাছাইকৃত ব্রুড মাছকে ভালো পরিবেশে উৎপাদনশীল পুকুরে পালন করি । এক্ষেত্রে পুকুরের
আয়তন ৫০-১০০ শতাংশ ও গভীরতা ৬-৮ ফুট হলে ভালো হয় ।
৩ । মজুদ ঘনত্ব সঠিক মাত্রায় রাখি । এক্ষেত্রে প্রতি শতাংশে ৬-৮ কেজি মাছ রাখি ।
৪ । প্রাকৃতিক খাদ্যেও পাশাপাশি বাহির থেকে ২৫-৩০% প্রোটিনসমৃদ্ধ সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করি
৫ । নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করি। রোগ-বালাই প্রতিরোধ ব্যবস্থা আগে থেকেই গ্রহন করি ।
৬। মাঝে মাঝে আংশিক পানি পরিবর্তন করি ।
৭ । কোনো পুকুরে কী প্রজাতির এবং ওজনের মাছ আছে তা রেজিস্টার খাতায় লিখে রাখি।
৮ । প্রজনন শেষে ব্রুড মাছ পৃথক পুকুরে পরিচর্যা করি।
উপকরণ :
১। হ্যাচারিতে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত যানবাহন ।
২। খাতা ও পেন্সিল ।
কাজের ধারা :
১। বিদ্যালয়ের নিকটতম স্থানে মৎস্য প্রজনন হ্যাচারি মালিকের সাথে হ্যাচারি পর্যবেক্ষণের বিষয়ে পূর্বেই যোগাযোগ করি ।
২ । নির্দিষ্ট তারিখে শ্রেণি শিক্ষকসহ মৎস্য প্রজনন হ্যাচারিতে যাই ।
৩ । হ্যাচারি মালিক নিয়োজিত লোকের কাছ থেকে ঐ হ্যাচারির ব্রুড মাছ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য যেমন : তাদের খাদ্য ব্যবস্থাপনা, খাদ্য গুদামজাতকরণ, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, পুকুর প্রস্তুতি ইত্যাদি বিভিন্ন
বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করি।
৪ । পর্যবেক্ষণের বিভিন্ন তথ্য ও বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিপিবন্ধ করি ।
জৰ নং-০৩
জবের নামঃ বিভিন্ন প্রজাতির প্রজননক্ষম স্ত্রী ও পুরুষ মাছ শনাক্তকরণ ও বাছাইকরণ ।
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ।
ব্রুড মাছের সঠিক নির্বাচনের উপর কৃত্রিম প্রজননের সফলতা নির্ভর করে। মাছ বাছাইয়ের ব্যাপারটি মূলতঃ অভিজ্ঞতার উপর নির্ভরশীল। ব্রুড মাছ বাছাই ও পরিবহনের কাজটি সকাল বেলায় পানির তাপমাত্রা বাড়ার আগেই করি। নিম্নবর্ণিত পরিপক্ব স্ত্রী ও পুরুষ মাছের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য দেখে নির্বাচন ও বাছাই করি।
উপকরণ :
১। হ্যাচারি পর্যন্ত যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন ।
২। প্রত্যেক ছাত্র/ছাত্রীদের পুকুরে নামার জ উপযুক্ত পোশাক ।
কাজের ধারা
১। বিদ্যালয়ের তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের মাধ্যমে নিকটতম কোনো হ্যাচারি মালিকের সাথে পূর্বে যোগাযোগ করি ।
২। নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হ্যাচারিতে পৌঁছি।
৩। ব্রুড মাছের পুকুরে বেড় জাল দিয়ে ব্রুড মাছ ধরি এবং ব্রুড মাছ বাছাই করি।
৪। হ্যাচারির অভিজ্ঞ কর্মীর সহায়তার বিভিন্ন প্রজাতির ব্রুড মাছের স্ত্রী ও পুরুষ ব্রুডের বৈশিষ্ট্যগুলো শনাক্ত করি ।
৫। পর্যবেক্ষণের বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করি ।
জব নং-০৪
জবের নাম : পিটুইটারি গ্রন্থি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ ।
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা :
মাছের যে গ্রন্থি প্রজননের সময় গোনাডোট্রোপিন নামক হরমোন নিঃসৃত করে তাকে পিটুইটারি গ্রন্থি বা পি.জি
বলে । কৃত্রিম প্রজননে ব্যবহৃত হরমোন বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করি। এর মধ্যে মাছের পিটুইটারি গ্রন্থি অন্যতম উৎস। পিজি সংগ্রহের জন্য মাছ নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মাছ প্রজনন উপযুক্ত অর্থাৎ ১ বছরের বেশি বয়স হতে হবে। আর মাছ পচন ধরার আগেই পিজি সংগ্রহ করে নিই। সংগৃহীত পিজি সাধারণ তাপমাত্রায় অ্যালকোহলে এসিটনে সংরক্ষণ করি ।
উপকরণ :
১। এক বছরের বেশি বয়সের এবং এক কেজি বা সামান্য বেশি ওজনের কয়েকটি তাজা রুই-কাতলা মাছ ।
২। হ্যান্ডেলসহ হ্যাক’স ব্লেড
৩ । মাছের মাথা বসাবার জন্য কাঠের ফ্রেম
৪ । ছুরি, কাঁচি, চিমটা, নিডল, স্কালপেল ইত্যাদি
৫ । অ্যালকোহলসহ কাচের ছোট ভায়াল
কাজের ধারা :
১। কাঠের ফ্রেমের সাহায্যে মাছকে পিঠ উপর দিকে অবস্থায় ধরে রাখি ।
২। হাত করাত দিয়ে আস্তে আস্তে মাছের মাথার খুলি কেটে সরিয়ে ফেলি ।
৩। খুলির নিচেই মাছের মস্তিষ্ক দেখা যাবে । চিমটা দিয়ে সাবধানে মাছের মস্তিষ্ক সরিয়ে ফেলি ।
৪ । মস্তিষ্কের নিচে মাঝামাঝি অংশে একটি গর্তের মধ্যে হালকা গোলাপি রঙের পিজি দেখা যাবে । টিস্যু
দিয়ে জায়গাটা পরিষ্কার করে নিই ।
৫ । গর্তটির মুখে পাতলা একটা আবরণ থাকে । খুব সাবধানে চিমটা দিয়ে আবরণ সরিয়ে পিজিকে আলাদা
করে তুলে আনি । খেয়াল রাখি যেন গ্লান্ডটি গলে না যায় ।
৬। সংগৃহীত পিজি একটি ভায়ালে অ্যাবসলিউট অ্যাকোহলে বা এসিটনে রাখি ।
৭ । এভাবে সংগৃহীত গ্লান্ড ২০-৩০মি.মি. ছোট শিশিতে বিশুদ্ধ অ্যালকোহল বা এসিটনে ২৪ ঘণ্টা রাখার পর
শিশির পুরনো অ্যালকোহল বা এসিটনে বদলিয়ে নতুনভাবে শিশি ভরে রাখি ।
৮ । গৃহীত পদক্ষেপগুলো ছবিসহ ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করি ।
সতর্কতা।
১। শুধু মাত্র পরিপ মাছ থেকেই প্লান্ড সংগ্রহ করতে হবে।
২। পচনশীল মাছ থেকে গ্লান্ড সংগ্রহ করা উচিত নয় ।
৩। গ্লান্ডটি সাবধানে তুলে আনতে হবে যাতে পিজি গলে না যায় ।
৪ । গ্লাভ কোনভাবেই যেন পানির সংস্পর্শে না আসে।
জব নং-০৫
জবের নাম : বিভিন্ন হরমোনের দ্রবণ তৈরিকরণ ।
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা :
হরমোন ইনজেকশন দ্রবণ তৈরির জন্য প্রথমে মাছের ওজনের ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় হরমোন/পিজি মেপে পোরসেলিন কিংবা টিস্যু হোমোজিনাইজারে পতিত পানি দ্বারা উত্তমভাবে মিশ্রিত করি। এরপর পানিকে সেন্ট্রিফিউজ করে ৩০ মিনিট স্থির রেখে দ্রবণের উপর থেকে শুধুমাত্র জলীয় অংশটুকু সংগ্রহ করি। হয় । আর উক্ত জলীয় অংশই হরমোন ইনজেকশন দ্রবণ হিসেবে ব্যবহার করি ।
উপকরণ:
১ । সুই
২। মাপন যন্ত্র
৩ । হামান দিস্তা
৪ । টিস্যু হমোজিনাইজার
৫। সেন্ট্রিফিউজ মেশিন
৬ । বিশুদ্ধ পানি
৭। টিস্যু পেপার
৮। সিরিঞ্জ
৯ । বিকার
কাজের ধারা
১। মাছের প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়েছে এমন একটি হ্যাচারির সাথে যোগাযোগ করি ।
২। শ্রেণি শিক্ষকসহ হ্যাচারিতে হাজির হই ।
৩ । প্রথমেই মাছের প্রজাতি ও ওজন জেনে ছক “ক” অনুযায়ী ইনজেকশনের ডোজ ও প্রয়োগ মাত্রা হিসেব করে নেই ।
৪ । অ্যালকোহল বা এসিটোনে রক্ষিত (PG) কে টিস্যু পেপারে চেপে শুষ্ক করি
৫ । শুষ্ক পিজিকে সামান্য পতিত পানি বা ০.৩% লবণ দ্রবণসহ একটি টিস্যু হোমোজিনাইজারে পিষি ।
৬ । পিজি গুলানো দ্রবণটি সেন্ট্রিফিউজ দ্বারা থিতিয়ে নেই ।
৭। সবশেষে উপরের পরিষ্কার দ্রবণ পৃথক করি আর এই দ্রবণই হলো তৈরিকৃত হরমোন ইনজেকশন দ্রবণ ।
৮। মাছের দেহের মাংস পেশিতে নবম স্থানে ইনজেকশন দেই ।
জব নং-০৬
জবে নাম : মাছকে হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগ করা ।
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
অন্ত মাংসপেশীয় (intramuscular) ইনজেকশন দ্বারা হরমোন ব্রুড মাছে প্রয়োগ করি। (এছাড়া অন্তঃগহবরীর (intramuscular) ইনজেকশনের মাধ্যমে ও হরমোন প্রয়োগ করা যেতে পারে। অন্যদিকে ইনট্রামাসকুলার ইনজেকশন প্রয়োগ পদ্ধতি সহজতর ও বেশি কার্যকরী। এ ইনজেকশন সাধারণত লেজের অঞ্চলে অথবা পৃষ্ঠ পাখনার নিচে এবং পার্শ্বরেখার উপরের অংশে প্রয়োগ করি।
দুটো ইনজেকশনের ক্ষেত্রে উভয় পাশে ১টি করে দেই। ইনট্রামাসকুলার ইনজেকশনের জন্য একটি আঁইশের নিচে প্রথম দেহের সমান্তরালে এবং পরে ৪৫° কোণে সুচ প্রবেশ করাই। ২ সি.সি. মাপের হাইপোডামিক সিরিঞ্জ হরমোন ইনজেকশন দেওয়ার জন্য ব্যবহার করি। B.D.H (ব্রিটিশ ড্রাগ হাউস) ২২ নং সুচ ১-৩ কেজি ওজনের মাছকে এবং ছোট আকারের মাছকে ১৯ নং সুচ দিয়ে সহজে ইনজেকশন দেই ।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
১। ব্রুড মাছ
২। সিরিঞ্জ ও সুচ
৩। গামছা
৪। স্পঞ্জের প্যাড
৫। খাতা ও পেন্সিল ইত্যাদি
৬। সূক্ষ্ম ব্যালেন্স
৭। টেস্ট টিউব
৮। পিজি
৯। সেন্ট্রিফিউজ
কাজের ধারা
১। মাছের প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়েছে এমন একটি হ্যাচারিতে যাই ।
২। নির্ধারিত সময়ে শ্রেণি শিক্ষকসহ হ্যাচারিতে হাজির হই।
৩। মাছের প্রজাতি ও আকার অনুযায়ী ইনজেকশন ডোজ বা প্রয়োগ মাত্রা হিসেব করে নিই ।
৪। ইনজেকশন দেওয়ার জন্য সিরিঞ্জ দিয়ে প্রবণ উঠিয়ে নিই ।
৫ । মাছের দেহের মাংশপেশির নরম স্থানে বা উপর পৃষ্ঠ পাখনার নিচে বা পার্শ্বরেখায় ইনজেকশন প্রয়োগ ।
করি ৷
৬। এবারে একটি আঁইশের নিচে প্রথমে দেহের সমান্তরালে এবং পরে ৪৫° কোণে সুচ প্রবেশ করিয়ে
ইনজেকশন প্রয়োগ করি ।
৭। গৃহীত পদক্ষেপগুলো ছবিসহ ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করি ।
জব নং-০৭
জবের নাম : পরিপq ডিম ও নিষিক্ত ডিম শনাক্তকরণ ।
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা : কার্প হ্যাচারিতে দুই প্রণালিতে ডিম নিষিক্ত হয় ।
১। সহজাত বা স্বাভাবিক পদ্ধতি : হরমোন ইনজেকশন দেয়ার পর স্ত্রী মাছকে ব্রিডিং পুলে স্রোত ও ফোয়ারা সহকারে রাখি। পুরুষ মাছকে হরমোন ইনজেকশন দেয়ার পর পৃথক ব্রিডিং পুলে স্রোত ও ফোয়ারা সহকারে স্ত্রী মাছ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে রাখি। স্ত্রী মাছের ডিম ছাড়ার ২ ঘণ্টা পূর্বে পুরুষ মাছকে স্ত্রী মাছের ব্রিডিং পুলে স্থানান্তর করি। স্ত্রী মাছ পুরুষ মাছের সাহচর্যে ডিম পাড়ে ও ডিম নিষিক্ত হয় ।
২। স্ট্রিপিং পদ্ধতি : হরমোন ইনজেকশন দেয়ার পর স্ত্রী মাছকে ব্রিডিং পুলে স্রোত ও ফোয়ারা সহকারে রাখি। পুরুষ মাছকে হরমোন ইনজেকশন দেয়ার পর পৃথক ব্রিডিং পুলে স্রোত ও ফোয়ারা সহকারে স্ত্রী মাছ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে রাখি। ডিম পাড়ার সঠিক সময়ে স্ত্রী মাছ ধরে পেটে সামান্য চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে একটি পাত্রে ডিম সংগ্রহ করি।
এরপর পুরুষ মাছের পেটে চাপ দিয়ে মিন্ট পূর্ব সংগৃহীত ডিমের উপর ফেলি এবং মুরগির নরম পালক দিয়ে মিল্টকে ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে ডিমকে নিষিক্ত করি। নিষিক্ত ডিমকে পরিমাপ সহকারে হ্যাচিং জার অথবা হ্যাচিং পুলে পানির স্রোত ও ফোয়ারার মধ্যে স্ফুটনের জন্য রাখি।
উপকরণ :
১ । প্ৰজনন চালু আছে এমন হ্যাচারিতে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন ।
২। আতশ কাচ
৩। খাতা কলম ইত্যাদি ।
কাজের ধারা
১। প্রজনন কার্যক্রম আছে এমন হ্যাচারির সাথে আগে যোগাযোগ রাখি ।
২। নির্দিষ্ট সময়ে শ্রেণি শিক্ষকসহ হ্যাচারিতে যাই ।
৩ । সহজাত পদ্ধতির ক্ষেত্রে ব্রুড মাছকে দ্বিতীয় ইনজেকশন দেয়ার ৪-৬ ঘণ্টা পর থেকে সার্কুলার ট্যাংকে পুরুষ ও স্ত্রী মাছের কার্যাবলি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করি। এক্ষেত্রে স্ত্রী মাছ ডিম ছাড়ার পর পুরুষ মাছ শুক্রাণু ছেড়ে তা নিষিক্ত করা পর্যবেক্ষণ করি ।
৪ । চাপ পদ্ধতিতে ব্রুড মাছকে দ্বিতীয় ইনজেকশন দেয়ার পর ৪-৬ ঘণ্টা পর থেকে স্ত্রী মাছের পেটে চাপ দিয়ে পরিষ্কার পামলায় ডিম সংগ্রহ করি এবং পুরুষ মাছের শুক্র ডিমের উপর দিয়ে পালক দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিষিক্ত করি।
৫ । সাদা থালায় কয়েকটা ডিম আতশ কাচ দিয়ে ভ্রূণ পর্যবেক্ষণ করি এবং খাতায় ছবি আঁকি ।
৬। গৃহীত পর্যবেক্ষণের ছবিসহ ব্যবহারিক খাতায় লিখি ।
জব নং-০৮
জবের নাম : ভালো মানের রেণুপোনা শনাক্তকরণ
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা :
যে সমস্ত হ্যাচারিতে ভালো গুণ সম্পন্ন ব্রুড মাছ থেকে রেণু উৎপাদন করে সেখান থেকে রেণু সংগ্রহ
করি। ভালো ও খারাপ রেণুর বৈশিষ্ট্য নিম্নে দেওয়া হলো:
উপকরণ :
১। মাছের রেণু
২। সাদা গামলা
৩ । আতশ কাচ
৪। খেল
৫। খাতা ও পেন্সিল
কাজের ধারাঃ
১। বিদ্যালয়ের নিকটতম কোনো হ্যাচারির মালিকের সাথে যোগাযোগ করে কিছু রেণু পোনা আনার ব্যবস্থা করি ।
২। একটি বড় সাদা গামলায় কতকগুলো রেণু পাতিল থেকে নেই ।
৩। মাছের রেণু লাফালাফি করে কিনা এবং যথেষ্ট প্রাণশক্তি আছে কিনা পর্যবেক্ষণ
করি ।
৪ । রেণুর গায়ের স্বাভাবিক উজ্জ্বল কিনা, আঁইশ ওঠে কিনা বা শরীরে কোনো দাগ আছে কিনা আতশ কাচ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করি ।
৫। রেণুর পাখনা অক্ষত কিনা, কোনটা ভাঙ্গা, ছেঁড়া কিনা আতশ কাচ দিয়ে ভালোভাবে লক্ষ করি ।
৬। রেণুর গা পিচ্ছিল কিনা অর্থাৎ গায়ে শ্লেষ্মা আছে কিনা অথবা খসখসে কিনা হাত দিয়ে পর্যবেক্ষণ করি ।
৭। সর্বোপরি প্রতিটি রেণুর স্বাস্থ্য স্বাভাবিক হৃষ্টপুষ্ট আছে কিনা, রোগাক্রান্ত দুর্বল বা চিকন হয়ে গেছে, লক্ষ্য করি ।
৮ । গৃহীত কার্যক্রমটি ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করি।
জব নং-০৯
জবের নাম : হ্যাচারিতে রেণুপোনার খাবার তৈরিকরণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা : মাছের ডিম ফুটে বের হওয়ার পরের অবস্থাকে ডিম পোনা বলে । এ অবস্থায় এদের পেটের সাথে কুসুম থলি
ঝুলে থাকে। কুসুম থলি থাকা অবস্থায় ডিম পোনা বাইরের কোনো খাদ্য খায় না । ডিম পোনার পেটে লেগে থাকা কুসুম থলি বা খাদ্য থলি শেষ হয়ে যাওয়ার পরের অবস্থাকে রেণু পোনা বলে । ডিম ফোটার ৬০ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কুসুম পূর্ণাঙ্গ শোষিত হয় এবং মুখ দ্বারা খাদ্য গ্রহণ করার উপযুক্ত হয়।
এ সময় থেকে কার্প জাতীয় মাছের রেণুকে খাদ্য প্রয়োগ করি। ক্যাটফিশ জাতীয় মাছের ক্ষেত্রে হ্যাচিং-এর ১৮ ঘন্টা পর থেকে খাবার দেওয়া শুরু করি। যদিও রেণু পোনার কুসুম থলি ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকে তবু আত্মভুক বৈশিষ্ট্যের কারণে কুসুম থলি মিশে যাওয়ার আগেই ওদের মধ্যে খাদ্য গ্রহণের আগ্রহ পরিলক্ষিত হয় এবং খাদ্যের জন্য প্রতিযোগিতা শুরু করে ।
সাধারণত ক্যাটফিশ জাতীয় মাছ যেমন থাই পাঙ্গাশ, মাগুর, গুলশা, পাবদা, শিং, মাগুর, প্রভৃতি মাছের রেণুকে জীবন্ত খাদ্য যেমন জুপ্লাঙ্কটন, টিউবিফেক্স নামক লাল কেঁচো, আর্টিমিয়া ইত্যাদি দিই। হ্যাচিং এর ১ দিন পর থেকে রেণুকে খুব হালকা আমিষ জাতীয় খাদ্য যেমন তাজা মাছ সিদ্ধ করে পেস্ট করার পর নাইলন কাপড়ে ছেঁকে দুধের মতো তরল পদার্থ ৩ ঘন্টা পরপর রেণুকে খেতে দিই ।
সাধারণ কার্প জাতীয় মাছ যেমন : রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প ইত্যাদি মাছের রেণুকে অজীবস্ত খাদ্য দিই । অজীবন্ত খাদ্য হিসেবে যেগুলো ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে মুরগির ডিম, আটা, ময়দা, খৈল, চালের কুঁড়া, গমের ভুসি, কলিজা সিদ্ধ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ডিম সিদ্ধ করে কুসুমটা আলাদা করে পানিতে কচলে ভালো করে গোলাই। কুসুম গোলানো পানিকে সূক্ষ্ম কাপড়ে হেঁকে নিই। হেঁকে নেয়া তরল খাদ্য রেণু পোনার চৌবাচ্চায় দিনে ৩-৪ বার ছিটিয়ে দেই।
উপকরণ :
১। মুরগির ডিম সিদ্ধ
২। তাজা মাছ সিদ্ধ
৩। পাতলা কাপড়ের টুকরা বা গামছা
৪। খাতা পেন্সিল ইত্যাদি
কাজের ধারা ।
১। কার্প জাতীয় মাছের রেণু ও ক্যাটফিশ জাতীয় মাছের রেণু আছে শ্রেণি শিক্ষকের সহায়তা এমন একটি হ্যাচারির মালিকের সাথে যোগাযোগ করি।
২। নির্দিষ্ট সময় শ্রেণি শিক্ষকসহ হ্যাচারিতে যাই ।
৩। চৌবাচ্চার হাপায় রাখা রেণুর পেটে কুসুম থলি আছে কিনা পর্যবেক্ষণ করি ।
৪ । কার্প জাতীয় মাছের রেণুর ক্ষেত্রে, রেণুর পরিমাণ জেনে প্রয়োজনীয় ডিম সিদ্ধ করে ডিমের কুসুম পানিতে গুলে কাপড় দিয়ে হেঁকে হাপার মধ্যে ছিটিয়ে দেই।
৫। ক্যাটফিশ জাতীয় মাছের রেণুর ক্ষেত্রে, রেণুর পরিমাণ জেনে প্রয়োজনীয় মাছ সিদ্ধ করে কাপড় দিয়ে হেঁকে রেণুকে খেতে দেই।
৬। গৃহীত কার্যক্রমটি চিত্রসহ ব্যবহারিক খাতায় লিপিবন্ধ করি ।
জব নং-১০
জবের নাম : পরিবহনের নিমিত্ত রেণু পলিথিন ব্যাগে প্যাকিং ।
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা : পোনা পরিবহণে দক্ষতা মাছ চাষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফলভাবে পোনা পরিবহনের উপর মাছ চাষে লাভ
অনেকাংশে নির্ভরশীল । বিভিন্নভাবে পোনা পরিবহন করা গেলেও আধুনিক পদ্ধতি হলো পলিথিন ব্যাগে অক্সিজেন দিয়ে পোনা পরিবহন করা। এ পদ্ধতি খুবই নিরাপদ ও ঝামেলামুক্ত। এভাবে পোনা দূরদূরান্ত ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরিবহন সম্ভব এবং পোনার মৃত্যুহারও অনেক কম
আধুনিক পদ্ধতিতে রেণু প্যাকিং ও পরিবহনের জন্য নিম্নলিখিত কৌশল অবলম্বন করা হয় ।
ক) পোনা টেকসই করা: ঘণ্টা দুয়েক আগে থেকে রেণুকে খাদ্য প্রয়োগ বন্ধ করে রাখি। সব রেণু হাপার এক কোণে আনি। হাপার তলদেশে কোনো অভুক্ত খাদ্য মরা রেণু থাকলে তা পরিষ্কার করে ফেলি। আস্তে আস্তে পানির ঝাপটা দিয়ে দিয়ে সব রেণুকে অল্প জায়গায় আনি।
খ) রেণু মাপা : রেণু মাপার জন্য আয়তন পদ্ধতি অনুসরণ করি। হাপার অল্প জায়গায় আনা রেণুকে আরো গুটিয়ে হঠাৎ করে পানির উপরে অল্প সময়ের জন্য ওঠাই । ফলে সব রেণু এক জায়গায় চলে আসে এবং পানি পড়ে যায়। এভাবে দাগ কাটা বিকার দিয়ে মেপে খুব দ্রুত পলিথিন ব্যাগে রাখা পানির মধ্যে দেই।
গ) প্যাকিং : পলিথিন ব্যাগের মধ্যে রেণু পরিবহন করি। সাধারণত ৩৬ ইঞ্চি x ২০ ইঞ্চি মাপের দুটো পলিথিনের ব্যাগ এক সাথে ব্যবহার করি । ব্যাগগুলোতে কোনো ছিদ্র আছে কিনা তা পরীক্ষা করার পর একটা ব্যাগের মধ্যে আর একটা ব্যাগ ঢুকিয়ে ব্যাগের এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ পানি দেই। আনুমানিক ১০ লিটার পানিতে ১২৫ গ্রাম থেকে ২০০ গ্রাম রেণু প্যাকিং করি।
পলিথিন ব্যাগ রেণুসহ একটি চটের ব্যাগের মধ্যে ঢুকাই এভাবে পলিথিনের ব্যাগের মধ্যে অক্সিজেন পূর্ণ করে মুখ ভালো করে বাঁধি যাতে বাতাস না বেরুতে পারে। দুটি পলিথিন ব্যাগ পৃথকভাবে টাইট করে বাঁধি । এবারে রেণুভর্তি প্যাকেট ঠাণ্ডা রাখার জন্য চটের ব্যাগ ভিজিয়ে দেই । এভাবে প্যাকেট করা রেণু ২০-২৫ ঘণ্টা দূরত্বের জন্য পরিবহন করি।
উপকরণ :
১। প্যাকেটযোগ্য রেণু
২ । পলিথিন ব্যাগ
৩ । সুতলি
৪। চটের ব্যাগ
৫। অক্সিজেন ভর্তি সিলিন্ডার
৬ । বিকার
৭। খাতা, পেন্সিল ইত্যাদি ।
কাজের ধারা
১। রেণু বিক্রয়ের জন্য প্যাকিং করা হবে এমন একটি হ্যাচারিতে আগে থেকে যোগাযোগ করে রাখি।
২। নির্দিষ্ট দিনে শ্রেণি শিক্ষকসহ হ্যাচারিতে যাই ।
৩। হাপার মধ্যে রেণু টেকসই করি এবং অন্যান্য ময়লা থাকলে তা পরিষ্কার করি ।
৪। পলিথিন ব্যাগের ছিদ্র পরীক্ষা করে একটি ব্যাগের মধ্যে আর একটি ঢুকিয়ে রেডি করি এবং ব্যাগে এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ পরিষ্কার পানি দিয়ে রাখি ।
৫। হাপার মধ্যে থেকে খুব দ্রুততার সাথে বিকার দিয়ে রেণু পরিমাণ করে ব্যাগের মধ্যে দেই ।
চিত্র- আধুনিক পদ্ধতি
৬। অক্সিজেন সিলিন্ডারের নল ব্যাগের পানির মধ্যে দিয়ে আস্তে আস্তে অক্সিজেন দিয়ে রেণুর ব্যাগ পূর্ণ করি । খুব সাবধান ব্যাগের মুখ খুব শক্ত করে সুতলি দিয়ে বাধি ।
৭। রেণুর ব্যাগ চটের ব্যাগের মধ্যে দিয়ে চটের ব্যাগ সামান্য ভিজিয়ে দেই।
৮। প্যাকিং করা রেণু এখন পরিবহনের জন্য তৈরি করি।
৯। গৃহীত কার্যক্রমটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিখি ।
জব নং-১১
জবের নাম। প্রজনন হাপা তৈরিকরণ ।
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।
মাছের প্রজননের জন্য উন্নত মানের মশারির যে জাল ব্যবহৃত হয় তাকেই হাপা বলা হয়। হাপায় প্রণোদিত প্রজননের ক্ষেত্রে রেণু পোনা ফুটানোর জন্য যে হ্যাচিং হাপা ব্যবহৃত হয় তা পাতলা মার্কিন কাপড় সেলাই করে তৈরি করা হয় । এ ধরনের হাপায় উপরে ঢাকনা থাকে না। এ ক্ষেত্রে দুটি হাপা থাকে একটি বাইরের দিকে এবং অপরটি ভিতরের দিকে। বাইরের হাপার আকার সাধারণত ২×১×১ ঘন মিটার। ফিতা মার্কিন কাপড় সেলাই করে এর ফিতা তৈরি করা হয়।
ভিতরের হাপাটির আকার ১.৫×.৭৫×, ৭৫ ঘন মিটার। কাপড়ের তৈরি ভিতরের হাপাটি বাইরের হাপার সাথে সাথে ফিতার সাহায্যে বেধে রাখা হয়। বাংলাদেশে সাধারণত কমন কাপ বা কার্পিও মাছ এবং থাই সরপুঁটি বা রাজপুঁটির ক্ষেত্রে হাপায় প্রণোদিত প্রজনন বেশি পরিলক্ষিত হয়। প্রথমেই ব্রুড কার্পিও এবং রাজপুঁটি সংগ্রহ করে যত্নের সাথে পুকুরে মজুদ করে প্রতি পালন করতে হয় ।
সাধারণভাবে প্রজননের সময় একটি স্ত্রী মাছের সাথে দুইটি পুরুষ মাছের প্রয়োজন হয়। প্রতিপালনের পর নির্ধারিত মাত্রায় পুং ও স্ত্রী মাছকে হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগ করে প্রজনন হাপায় ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রজনন হাপায় ছেড়ে দেয়ার ৩ ঘণ্টা পর স্ত্রী ব্রুড মাছ ডিম ছাড়ে এবং সাথে সাথেই পুং ব্রুড মাছ শুক্রাণু ছেড়ে দেয় ফলে ডিম নিষিক্ত হয় এবং ভ্রণ তৈরি হয়।
অণকে তিনদিন পর্যন্ত কোনো ধরনের খাবার দিতে হয় না । কারণ এসময় ভ্রূণ কুসুম থলি থেকে খাবার গ্রহণ করে থাকে। তিনদিন পর রেণুকে বাইরে থেকে খাবার দিতে হয় । এসময়ে সাধারণত সিদ্ধ ডিমের কুসুম গুলিয়ে খাবার হিসেবে দেওয়া হয় ।
প্রয়োজনীয় উপকরণ ।
১। মশারি আকৃতির মার্কিন কাপড়, সুতা, সুচ, রশি, বাঁশের খুঁটি ইত্যাদি ।
২। ব্যবহারিক খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবার, শার্পনার স্কেল ইত্যাদি ।
কাজের ধারা:
১। প্রজনন হাপা ব্যবহার করে এমন হ্যাচারির সাথে যোগাযোগ করি ।
২। শ্রেণিশিক্ষকসহ নির্দিষ্ট সময়ে হ্যাচারিতে যাই ।
৩ । প্রথমেই পাতলা মার্কিন কাপড় নিই ।
৪ । প্রতিটি হাপার আকার ২×১×১ ঘন মাটার।
৫। অতঃপর কাপড় সেলাই করে মশারি তৈরি করি ।
৬। এবার মশারিটিকে উল্টিয়ে স্থাপন করি ।
৭। উল্টিয়ে স্থাপনকৃত মশারিটি হলো তৈরিকৃত হাপা
৮। হ্যাচারিতে মৎস্য প্রজননের সময় তৈরিকৃত হাপাটি ব্যবহার করি ।
৯ । গৃহীত কার্যক্রমটি চিত্রসহ ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করি ।
জব নং-১২
জবের নাম : তেলাপিয়া মাছের খাদ্যে হরমোন মিশ্ৰণ অনুশীলন ।
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা :
অনেক দেশে তেলাপিয়া চাষ জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও উষ্ণ ও গ্রীষ্ম অঞ্চলীয় আবহাওয়ায় এদের প্রায় সব বাণিজ্যিক প্রজাতির ক্ষেত্রেই দ্রুত পরিপক্বতার ফলে পোনা উৎপাদন একটি প্রধান সমস্যা। এই কারণে চাষকালীন সময়ে এদের অধিক হারে প্রজননের জন্য পোনার ঘনত্ব প্রচুর বৃদ্ধি পায় এবং আহরণযোগ্য মাছের বৃদ্ধি ও উৎপাদন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কমে যায়।
এই সমস্যা উত্তরণের জন্য ১৯৬০ সাল থেকেই এই মাছ চাষে অনিয়ন্ত্রণ যোগ্য প্রজনন বন্ধ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদ্ধতির উন্নয়ন ঘটেছে। এসব পদ্ধতি হলো পোনা বাছাই করে স্ত্রী ও পুরুষ মাছ আলাদাকরণ সংকরায়ণ করে হরমোন প্রয়োগ করে পুরুষ পোনা উৎপাদন এবং জেনেটিক পদ্ধতির মাধ্যমে তেলাপিয়ার সব পুরুষ জাতের পোনা উৎপাদন খুবই কষ্টসাধ্য বিধায় বর্তমানে এন্ড্রোজেন হরমোন প্রয়োগে মনোসেক্স সব পুরুষ জাতের পোনা উৎপাদন খুব সহজ কৌশল হিসেবে গ্রহণযোগ্য পেয়েছে।
এই পদ্ধতিতে ক্ষুদে পোনাকে প্রথম খাবার গ্রহণের সময় হরমোন মিশ্রিত খাবার প্রয়োগ করে পুরুষ পোনায় রূপান্তরিত করা হয় ।
হরমোন মিশ্রিত খাবার তৈরি :
১। হরমোন মাত্রা ৫০ মিলিগ্রাম ১৭-৫ (আলফা) মিথাইল টেসটোসটেরন (17-a-Methi
Tertosterone) ১০০ মিলি ইথাইল অ্যালকোহল (৯৫%) সাথে দ্রবীভূত করা হয়।
২। হরমোন দ্রবণ এক কেজি পাউডার খাবারের ৫০% সাধারণ খাবার ৫০% ফিশমিল সাথে ১০-১৫ মিনিট সময় ধরে মিশাই ।
৩। তৈরিকৃত খাবার পরে সাধারণ তাপমাত্রায় শুকাই।
৪ । হরমোন মিশ্রিত শুষ্ক খাবার কক্ষ তাপমাত্রায় অথবা ৪ সে. তাপমাত্রায় রেফ্রিজারেটরে (সর্বোচ্চ ৭দিন) সংরক্ষণ করি।
মজুদ দ্রবণ ব্যবহার করে হরমোন মিশ্রিত খাবার তৈরি ।
‘মজুদ দ্রবণ তৈরি করে ১০০ কেজি খাবার তৈরির জন্য কয়েক সপ্তাহ পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করা যায়।
১। ১৭- (আলফা) টেসটোসটেরন ১ লিটার ইথানলের (৯৫%) সাথে দ্রবীভূত করে মজুদ দ্রবণ তৈরি করি ।
২। ১ কেজি মিহি খাবার একটু শুষ্ক পাত্রে রাখি।
৩। পরে ১০ মি.লি মজুদ দ্রবণ পুনরায় ১০০ মি.লি ইথানলের সাথে মিশাই।
৪ । এই দ্রবণটি ধীরে ধীরে খাবারের সাথে সংমিশ্রণ করে হরমোন মিশ্রিত খাবার তৈরি করি।
৫। প্রস্তুতকৃত খাবার ১০-১৫ মিনিট স্বাভাবিক তাপমাত্রায় শুকিয়ে তেলাপিয়ার মনোসেক্স পোনার উৎপাদন কার্যক্রম ব্যবহার করি ।
প্রয়োজনীয় উপকরণ।
১। মাছের পোনা
२
৩। হাপা
৪। ব্যালেন্স ও ক্ষীং ব্যালেন্স
৫। সেন্ট্রিফিউজ মেশিন
৬। হামান দিস্তা
৭। পিজি
কাজের ধারা :
১। নিকটস্থ একটি তেলাপিয়ার প্রজনন হ্যাচারিতে যাই।
২। শ্রেণি শিক্ষসহ নির্দিষ্ট দিনে ও সময় তেলাপিয়ার হ্যাচারিতে যাই ।
৩। হরমোন মিশ্রিত খাবার তৈরির যন্ত্রপাতিগুলো পর্যবেক্ষণ করি।
৪ । গৃহীত যন্ত্রপাতিগুলো চিত্রসহ ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করি ।
৫ । হ্যাচারির অভিজ্ঞ কর্মীর সহায়তায় মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছগুলো দেখি ও ছবি আঁকি ।
জব নং-১৩
জবের নাম : পোনা উৎপাদনের কর্মপরিকল্পনা ।
জবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা :
একটি মৎস্য প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড কখন ও কীভাবে করা হবে কর্মকাণ্ড সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও মালামাল কোথা থেকে সংগ্রহ করা হবে ইত্যাদি বিষয় ঠিক রাখার নামই হচ্ছে কর্মপরিকল্পনা । বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষের মধ্যে পোনা উৎপাদন অত্যন্ত লাভজনক প্রকল্প । পোনা উৎপাদন খুব লাভজনক প্রকল্প ।
খুব অল্প সময়ে অল্প জায়গায় এবং অল্প মূলধনে অনেক বেশি মুনাফা করা যায়। বাড়ির কাছে ছোট ছোট পুকুর তৈরি করে কুটির শিল্পের মতো পোনা উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বাড়ানো সম্ভব। এখানে নমুনা হিসেবে পোনা উৎপাদনের পরিকল্পনা দেওয়া হলো :
প্রতিটি পোনা পঞ্চাশ পয়সা হিসাবে ৫০,০০০ হাজার পোনার দাম ২৫০০০ হাজার টাকা
সুতরাং লাভ = ২৫০০০-৭৭৯০ = ১৭২১০ (৩ মাসে আয়
(স্থানীয় বাজার দর অনুযায়ী কম-বেশি হতে পারে)
উপকরণ :
১। রোটেনন
২। টিএসপি
৩। চুন
৪। গোবর
৫ । ইউরিয়া
৬। সুমিথিয়ন
৭। ময়দা
৮। ডিম
৯। চালের গুঁড়া
১০। রেণু সংগ্রহের জন্য যাতায়াত ব্যবস্থা
১১। সরিষার খৈল
কাজের ধারা :
১। নিকটস্থ একটি মৎস্য খামারে যাই ।
২। শ্রেণিশিক্ষকসহ নির্দিষ্ট সময়ে মৎস্য খামারে যাই ।
৩। পোনা উৎপাদনের খামারে নিয়োজিত লোকের কাছ থেকে পোনা উৎপাদন বিভিন্ন ধাপ যেমন : পোনা পরিবহন, খাদ্য প্রদান, স্বাস্থ্য পরিচর্যা, আয়-ব্যয় ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত হই ।
৪ । পর্যবেক্ষণের বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করি ।
আরও দেখুন: