কোন তেলাপিয়াকে মনোসেক্স তেলাপিয়ায় রূপান্তরিত করা যেতে পারে?

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় কোন তেলাপিয়াকে মনোসেক্স তেলাপিয়ায় রূপান্তরিত করা যেতে পারে? – যা মনোসেক্স তেলাপিয়ার চাষ ব্যবস্থাপনা এর অন্তর্ভুক্ত।

কোন তেলাপিয়াকে মনোসেক্স তেলাপিয়ায় রূপান্তরিত করা যেতে পারে?

তেলাপিয়া জাতের মোট ৩টি প্রজাতি বাংলাদেশে আমদানি করা হয়েছে। যেমন-তেলাপিয়া মোজাম্বিকা (Oreochromis mossambicus), নাইলোটিকা (O.niloticus) এবং লাল তেলাপিয়া (Tilapia nile)। অতি প্রজননক্ষম, স্বল্প উৎপাদনশীল, ছাই রঙের বিধায় তেলাপিয়া মোজাম্বিকা মৎস্য চাষির কাছে তেমন গ্রহণযোগ্য হয়নি।

অপর পক্ষে নাইলোটিকা এবং লাল তেলাপিয়া তুলনামূলক কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা পেলেও লাল তেলাপিয়ার প্রত্যেক প্রজন্মে কিছু মাত্রায় কাল দাগযুক্ত মাছ জন্মায় বলে এটা ততটা বাজার দখল করতে পারেনি। তাই ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ফিলিপাইন থেকে নাইলোটিকার GIFT (Genetically Improved Farmed Tilapia) জাত আমদানি করে নির্বাচিত প্রজনন ও জেনিটিক গবেষণার মাধ্যমে অধিক উন্নত জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন যার নাম দিয়েছেন BFRI GIFT জাত। এ জাত অন্যান্য তেলাপিয়ার চেয়ে শতকরা ৫০-৬০ ভাগ বেশি উৎপাদনশীল বলে ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে।

এ BFRI GIFT জাতকে হরমোন প্রয়োগের মাধ্যমে মনোসের পুরুষ তেলাপিয়ার রূপান্তরিত করলে স্বাভাবিক তেলাপিয়ার চেয়ে উৎপাদন অনেকগুণে বেড়ে যায়। এ লক্ষ্যে লিঙ্গ পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া নিচে দেয়া হলো-

ক. বাছাই -এর মাধ্যমে নিজ পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া :

এ প্রক্রিয়ায় বাহ্যিকভাবে জনন অঙ্গ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পুরুষ ও স্ত্রী মাছকে পৃথক পৃথকভাবে শনাক্ত ও পৃথক করে পুরুষ কিংবা স্ত্রী মাছকে আলাদাভাবে চাষ করা হয়। এভাবে স্ত্রী এবং পুরুষ মাছকে আলাদাভাবে পৃথক পৃথক পুকুরে চাষ করলে যৌনমিলনের সুযোগ না থাকায় পোনা উৎপাদিত হয় না। ফলে পুকুরে মজুদকৃত মাছের সংখ্যা নির্দিষ্ট থাকে এবং উৎপাদন আশানুরূপ হয়। তবে বাছাই পদ্ধতিতে যেহেতু বাহ্যিকতাবে চোখে দেখে পুরুষ এবং স্ত্রী প্রজাতি আলাদা করা হয় এবং আলাদাভাবে চাষ করা হয় তাই দক্ষ ও অভিজ্ঞ না হলে এ পদ্ধতি তত বেশি ফলপ্রসূ নাও হতে পারে।

বাছাই করার সময় ও পদ্ধতি :

সাধারণত প্রতিটি মাছের ওজন যখন ৩৫-৪০ গ্রাম হবে তখন অত্যন্ত স্পষ্টভাবে তেলাপিয়ার পুরুষ এবং স্ত্রী মাছকে পার্থক্য করা যায়। কারণ এ সময় তেলাপিয়ার জনন অঙ্গের পার্থক্য স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়। এ সময় মাছের লিঙ্গ অনুযায়ী বাছাই ও পৃথককরণের কাজটি সম্পন্ন করতে হবে। তবে বাছাই এর ক্ষেত্রে এ পৃথকীকরণ যত কম বয়সে করা যাবে এ পদ্ধতিতে চাষের সফলতা ততই বৃদ্ধি পাবে ।

স্ত্রী এবং পুরুষ তেলাপিয়ার শারীরবৃত্তীয় পার্থক্য

 

কোন তেলাপিয়াকে মনোসেক্স তেলাপিয়ায় রূপান্তরিত করা যেতে পারে

 

কোন তেলাপিয়াকে মনোসেক্স তেলাপিয়ায় রূপান্তরিত করা যেতে পারে
চিত্র-১ : বাহ্যিকভাবে বাছাই-এর মাধ্যমে পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া

 

সীমাবদ্ধতা

অধিকাংশ ক্ষেত্রে শৈশব অবস্থার স্ত্রী এবং পুরুষ মাছ পৃথক ভাবে শনাক্ত করা যায় না,

চাহিদা অনুসারে এক লিঙ্গ বিশিষ্ট মাছের পোনা সংগ্রহ করা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি অর্থনৈতিক দিক থেকেও ততটা লাভজনক নয়।

খ. মোন প্রয়োগ পদ্ধতি :

এ পদ্ধতি বর্তমান বিশ্বের উন্নততর প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট আকারের নাইলোটিকার পোনাকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খাদ্যের সাথে সেক্স হরমোন খাওয়ানো হয়। এতে ৯০-৯৫ শতাংশ এক লিঙ্গের মাছ পাওয়া যায়।

হরমোন নির্বাচন :

এ পদ্ধতির ক্ষেত্রে হরমোন নির্বাচনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজারে একাধিক সেক্স হরমোন কিনতে পাওয়া যায়। যেমন- স্ত্রী মাহকে পুরুষ মাহে রূপান্তরিত করার জন্য পুরুষ সেক্স হরমোন টেসটোস্টেরন (Testosterone) এবং পুরুষ মাছকে স্ত্রী মাছে রূপান্তরিত করার জন্য স্ত্রী সেক্স হরমোন ইস্ট্রোজেন (Estrogen)। চাষকৃত মাছকে কোনো লিঙ্গে রূপান্তরিত করা হবে তা ঠিক করে নিয়ে তার জন্য কোন হরমোন প্রয়োগ করতে হবে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তেলাপিয়ার ক্ষেত্রে যেহেতু পুরুষ তেলাপিয়ার বৃদ্ধির হার দ্রুত তাই এ ক্ষেত্রে পুরুষ সেক্স হরমোন নির্বাচন করতে হবে ।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

তেলাপিয়ার ক্ষেত্রে সেক্স হরমোন নির্বাচন :

প্রায় সব প্রজাতির মাছের ক্ষেত্রেই একই ব্যবস্থাপনা কৌশল অবলম্বন করার পরেও শুধুমাত্র লিঙ্গভেদের কারণে স্ত্রী এবং পুরুষ মাছ সমহারে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় না। যেমন- রাজপুঁটির ক্ষেত্রে দেখা যার পুরুষ মাছের চেরে স্ত্রী মাছ দ্রুত বাড়ে। এটা পরীক্ষিত যে একই সময়ে একই ব্যবস্থাপনায় পুরুষ মাছ ১০০ গ্রাম হলে স্ত্রী মাছ ১২৫ গ্রাম হয়ে থাকে। অপরপক্ষে তেলাপিয়ার ক্ষেত্রে এর বিপরীত অবস্থা পরিলক্ষিত হয়; অর্থাৎ স্ত্রী তেলাপিয়ার চেয়ে পুরুষ তেলাপিয়ার বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। তাই এ ক্ষেত্রে পুরুষ তেলাপিয়ার উৎপাদন বেশি বলে পুরুষ সেক্স হরমোন নির্বাচন করাই শ্রেয়।

সেক্স হরমোন প্ররোগ :

মাছের রেণুফোটার পরবর্তী ১-২ সপ্তাহের মধ্যেই শুক্রাণর বা ডিম্বাশয় সৃষ্টির মাধ্যমে তেলাপিয়ার পুরুষ বা স্ত্রী লিঙ্গ চিহ্নিত হয়। এই শুক্রাশয় বা ডিম্বাশয় সৃষ্টির আগে থেকে ৪-৫ সপ্তাহ পর্যন্ত বিশেষ হরমোন প্রয়োগ করে লিঙ্গান্তর করা হয়ে থাকে। তাই ডিম থেকে নাইলোটিকার পোনা ফুটে বের হবার ২-৩ দিন পর যখন স্বাভাবিকভাবে এরা খাবার খেতে শেখে কিংবা ০.৮-১.১ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট হবে তখন পোনাকে প্রজনন পুকুর থেকে সংগ্রহ করতে হবে ।

কোন তেলাপিয়াকে মনোসেক্স তেলাপিয়ায় রূপান্তরিত করা যেতে পারে
চিত্র-২ : হরমোন ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে মনোসেরে রূপান্তর প্রক্রিয়া

 

পোনা সংগ্রহের এবং দৈর্ঘ্য নিশ্চিত হওয়ার একটি সহজ পদ্ধতি হলো ক্ষুদ্র ফাঁস সম্পন্ন জালের সাহায্যে পোনাগুলোকে সংগ্রহ করে এদেরকে ০.৩ সেন্টিমিটার ফাঁস সম্পন্ন স্কুপ নেটের সাহায্যে প্রেডিং করতে হবে। যে সমস্ত পোমা ঐ ফাঁস সাইজের জাল দ্বারা পার হয়ে যাবে শুধুমাত্র সেই পোনাগুলোকে হরমোন ট্রিটমেন্টের জন্য নির্বাচন করতে হবে। কারণ ০.৩ সেন্টিমিটার ফাঁস অতিক্রমকারী পোনার আকার ১.১ সেন্টিমিটার কিংবা তার চেয়ে ছোট হয়ে থাকে। উল্লেখ্য পোনার আকার সর্বোচ্চ ১.৩ সেন্টিমিটারের বেশি হলে সে ক্ষেত্রে হরমোন ট্রিটমেন্টের ফলাফল আশানুরূপ নাও হতে পারে।

হরমোন প্রয়োগ মাত্রা :

সংগৃহীত এবং নির্বাচিত নাইলোটিকার পোনাকে প্রতি কেজি খাদ্যের সঙ্গে ৬ মিলিগ্রাম ১৭-আলফা মিথাইল টেসটোস্টেরন হরমোন মিশ্রিত করে একনাগাড়ে ২১ দিন খাওয়ালে তেলাপিয়ার সব পোনা পুরুষ তেলাপিয়ায় রূপান্তরিত হবে।

খাদ্যের সঙ্গে হরমোন প্রয়োগের উপকারিতা :

হরমোন মূলত মাছের খাদ্য ব্যবহারের কার্যকারিতাকে বৃদ্ধি করে। ফলে পরোক্ষভাবে মাছের উৎপাদনের খরচ কমিয়ে ফেলে এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। কার্পজাতীয় মাছের ক্ষেত্রে খাদ্যের সাথে ১-৩ পিপিএম মাত্রায় ১৭-আলফা মিথাইল টেসটোস্টেরন হরমোন প্রয়োগ করে ৮৭ শতাংশ বেশি ওজনের মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এভাবে উৎপাদিত পোনা পুকুরে চাষের জন্য নির্বাচিত করা যেতে পারে ।

যদিও বা মনোসেক্স তেলাপিয়া রেণুপোনা দেওয়ার কথা নয় তবুও দেখা যায় তারা রেণুপোনা দেয় এর কারণ সেক্সিং বা হরমোন পদ্ধতিতে মনোসেক্স করলে ১০০% লিঙ্গ রূপান্তর হয় না। বড়জোড় ৯০-৯৫ ভাগ লিঙ্গ রূপান্তর হতে পারে। বাকী এ ৫-১০ ভাগ পোনা দিতে পারে।

তবে অধিক ঘনত্বে থাকে বিধায় এ সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করে না। এর পরেও চাষকৃত পুকুরে যদি ছোট রেণু পোনার ঝাঁক দেখা যায় তাহলে প্রতি ১০ দিন অন্তর অন্তর ছোট ফাঁসের জাল টেনে রেণুপোনা সরাতে হবে । অন্যথায় তেলাপিয়ার বায়োলজিক্যাল কন্ট্রোল অর্থাৎ তেলাপিয়ার সাথে শতাংশ প্রতি ৩টি ভেটকি/চিতল মাছ চাষ করলে এক দিকে অনাকাঙ্খিত পোনা নিয়ন্ত্রিত হবে, অন্য দিকে রেণুপোনা খেয়ে ভেটকি মাছ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবে। ফলে খাদ্যজনিত ব্যয় সাশ্রয় হবে।

পুকুর নির্বাচন :

মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । মৌসুমী পুকুর তথা যেসব পুকুরে স্বল্প গভীরতার কারণে কার্পজাতীয় মাছচাষ সম্ভব নয় ঐ ধরনের পুকুরই এ মাছচাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী। আর স্বভাবজাত কারণে তেলাপিয়া যেহেতু পাড়ের ধারে বকচরে গর্ত করে তাই বাৎসরিক পুকুরের পরিবর্তে ২০-৩০ শতাংশ আয়তন বিশিষ্ট যে সমস্ত মৌসুমী পুকুরে ৪-৬ মাস ৩/৪ ফুট পানি থাকে সে ধরনের পুকুর তেলাপিয়া মাছচাষের ক্ষেত্রে নির্বাচন করা যেতে পারে ।

পুকুর প্রস্তুত প্রণালী :

অন্যান্য প্রজাতির মাছচাষের ক্ষেত্রে নতুন এবং পুরাতন পুকুরে যেভাবে পুকুর প্রস্তুতির ধাপগুলো ধারাবাহিকভাবে সম্পন্ন করতে হয় এক্ষেত্রেও অনুরূপভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এখানে নতুনভাবে কোন পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন নেই। পুকুর প্রস্তুতির এ ধাপগুলো এই পাঠ্যবইয়ের প্রথম পত্রের ষষ্ঠ অধ্যায়ে বিষদভাবে আলোচিত হয়েছে।

পোনা মজুদ :

ব্যবস্থাপনার ধরন অনুযায়ী অর্থাৎ কী ধরণের সম্পূরক খাদ্য ব্যবহার করা হবে, দিনে কতবার খাদ্য প্রয়োগ করা হবে, কতটুকু খাদ্য প্রয়োগ করা হবে, পুকুরের উর্বরতা শক্তি কেমন, প্রয়োজন হলে মাঝে মাঝে পুকুরে নতুন পানি সংযোগ করার ব্যবস্থা আছে কি না, পুরো মাছচাষ চক্রে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হবে ইত্যাদি বিবেচনা করে সামর্থ্যানুযায়ী পোনা মজুদ করতে হবে। তবে স্বাভাবিক ব্যবস্থাপনায় শতাংশ প্রতি একক চাষে ৫-১০ গ্রাম ওজনের ৮০-১০০ টি সুস্থ সবল পোনা মজুদ করা যেতে পারে।

খাদ্য এবং খাদ্যাভ্যাস :

নাইলোটিকা সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। পুকুরে প্রাকৃতিকভাবে যে শ্যাওলা ও জলজ কীটপতঙ্গ জন্মে নাইলোটিকা তার সবকিছুই খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। ছোট অবস্থায় নাইলোটিকার নাইলোটিকার পোনা উদ্ভিজ ও ক্ষুদে রোটিফার জাতীয় প্ল্যাংকটন খেতে ভালোবাসে। এদের পাকস্থলী তৃণভোজী মাছের পাকস্থলীর তুলনায় ছোট এবং অন্ত্রে প্যাচের সংখ্যা অনেক কম। ফলে গৃহীত খাদ্য তাড়াতাড়ি হজম হয়। তাই এদের ক্ষেত্রে সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগের সময় প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্য একবারে প্রয়োগ না করে বেশ কয়েক বারে অল্প অল্প করে প্রয়োগ করলে বেশ ভালো ফল পাওয়া যায় ।

সম্পূরক খাদ্য নির্বাচন :

মাছচাষে ভালো ফল লাভের জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যের পাশাপাশি অবশ্যই সুষম সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। তবে খাদ্য নির্বাচনের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে মাছের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি উক্ত খাদ্যের মূল্য যেন মৎস্যচাষির ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে। পরিমিত ও সুষম খাবার মাছের দেহ বর্ধনে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২.০ কেজি সুষম খাদ্য নিয়মিতভাবে প্রয়োগ করা হলে এবং পানির ভৌত ও রাসায়নিক গুণাবলি মাছচাষের অনুকূলে থাকলে ১.০ কেজি মাছ উৎপাদন হতে পারে। এমনি ধরনের সুষম সম্পূরক খাদ্যে কোন ধরনের পুষ্টি উপাদান কী পরিমাণ বিদ্যমান থাকে পাশে তার একটি নমুনা সারণি-১ এ দেয়া হলো ।

 

কোন তেলাপিয়াকে মনোসেক্স তেলাপিয়ায় রূপান্তরিত করা যেতে পারে

 

দৈহিক বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ এবং খাদ্যের সমন্বয় সাধন :

পোনা মজুদের পর অবশ্যই পোনার দৈহিক বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এ কাজে নমুনায়নের জন্য ঝাঁকি জাল ব্যবহার করা যেতে পারে। ঝাঁকি জালের মাধ্যমে ১৫ দিন অন্তর অন্তর বিভিন্ন আকারের ১৫-২০টি মাছের গড় ওজন নিতে হবে। এই গড় ওজনকে মাছের মোট সংখ্যা দ্বারা গুণ করলে পুকুরে মজুদকৃত মাছের মোট ওজন তথা জীবভর পাওয়া যাবে।

জীবভর প্রত্যেক দিন পরিবর্তনশীল কারণ প্রত্যেকটি মাছ প্রতিদিন কিছু না কিছু বাড়ে। তাই প্রত্যেকদিনের বর্ধিত জীবভরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। তবেই মাছচাষে ভাল ফল পাওয়া যাবে। সঠিক ব্যবস্থাপনা কৌশল অবলম্বন করে তথা পুকুরের ভৌত, রাসায়নিক এবং জৈবিক গুণাবলি মাছচাষের অনুকূলে রেখে কমপক্ষে ২৫ ভাগ প্রোটিন, ৩০ ভাগ কার্বোহাইড্রেট এবং ১০ ভাগ লিপিড সমৃদ্ধ খাদ্য প্রত্যেকদিন কমপক্ষে ২ বার নির্দিষ্ট সময়ে মাছের চাহিদা অনুযায়ী (দৈহিক ওজনের ৪-৬ ভাগ) প্রয়োগ করলে প্রত্যেকটি মাছ দৈনিক গড়ে ২ গ্রাম করে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হবে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment