আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় কৃত্রিম বা সম্পুরক খাদ্য – যা চাষযোগ্য মাছের খাদ্য ও পুষ্টি এর অন্তর্ভুক্ত।
কৃত্রিম বা সম্পুরক খাদ্য
অধিক উৎপাদনের জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যের পাশাপাশি পুকুরে চাষকৃত মাছকে বাহির থেকে কিছু খাদ্য সরবরাহ করা হয়। বাহির থেকে প্রয়োগকৃত এসব খাদ্যদ্রব্যকে কৃত্রিম বা সম্পূরক খাদ্য বলা হয়। যেমন- চালের কুঁড়া, গমের ভুসি, খৈল ইত্যাদি ।
সুষম সম্পূরক খাদ্য বা কৃত্রিম খাদ্য:
বিভিন্ন খাদ্য উপাদান নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশ্রণের পর খাদ্য উপাদানগুলোর গুণাগুণ পরিবর্তিত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন গুণাগুণ সম্পন্ন যে খাদ্যদ্রব্য তৈরি হয় এবং যাতে মাছের প্রয়োজনীয় সমস্ত খাদ্য উপাদান (আমিষ, শর্করা, লিপিড, খনিজ লবণ, ভিটামিন এবং পানি) সুষম বা সঠিক পরিমাণে বিদ্যমান থাকে তাকে সুষম সম্পূরক খাদ্য বা কৃত্রিম খাদ্য বলে। যেমন- চালের কুঁড়া, গমের ভুসি, ফিশমিল, সয়াবিন মিল, আটা, চিটাগুড়, খনিজ লবণ, ভিটামিন ইত্যাদির নির্দিষ্ট পরিমাণে মিশ্রণকৃত খাদ্যই হল সুষম সম্পূরক খাদ্য বা কৃত্রিম খাদ্য।
অন্যকথায় বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ যথাযথ মাত্রায় সংরক্ষণ করে কারখানায় বা গবেষণাগারে যে সম্পূরক খাদ্য তৈরি করা হয় তাকেই কৃত্রিম খাদ্য বলে। সম্প্রতি বিভিন্ন প্রজাতির এবং বিভিন্ন বয়সের মাছের জন্য ভিন্ন ভিন্ন গ্রেডের কৃত্রিম খাদ্য বাজারে পাওয়া যায়। যেমন- পোনা মাছের জন্য স্টার্টার- ১, স্টার্টার- ২ এবং মজুদ পুকুরে মাছচাষের জন্য গ্রোয়ার- ১, গ্রোয়ার- ২, ফিনিশার ইত্যাদি ।
কৃত্রিম খাদ্যের সুবিধা সমূহ:
নিবিড় মাছ চাষের ক্ষেত্রে কৃত্রিম খাবারের কোন বিকল্প নেই। নিবিড় মাছ চাষ পদ্ধতিতে কম জায়গায় বেশি ঘনত্বে মাছ চাষ করা হয় বিধায় সম্পূর্ণরূপে কৃত্রিম খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। কৃত্রিম খাদ্য ব্যবহারের বেশ কতগুলো সুবিধা রয়েছে যেমন-
- কৃত্রিম খাদ্যে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদান একটি অন্যটির পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। ফলে খাদ্যের ব্যবহার উপযোগিতা বৃদ্ধি পায় ও সুষম পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত হয়;
- যেসব খাদ্য উপাদান এককভাবে মাছ অপছন্দ করে সেগুলো অন্য খাদ্য উপাদানের সাথে মিশিয়ে
- মাছকে খাওয়ান যেতে পারে;
- বাইন্ডার ব্যবহারের ফলে খাদ্যদ্রব্য সহজে পানিতে গলে যায় না। ফলে খাদ্যের অপচয় কম হয়;
- খাদ্য দ্রব্যের সাথে প্রয়োজনে ঔষধ ব্যবহার করে মাছের রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় ও কৃত্রিম খাদ্যের পরিবহন ও সংরক্ষণ সুবিধাজনক ।
আরও দেখুনঃ